অজিত কুমার দাশ হিমু, কক্সভিউ:
পর পর বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে কক্সবাজারের মৎস্য, কৃষি ক্ষেত্র ও জনপদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সাধারণ কৃষক এবং মৎস্য চাষীদের পূর্ণবাসনে সরকারীভাবে এখনো কোন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছেনা। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের বিশেষ সহায়তার দাবি উঠেছে জেলায়। অন্যথায় হিমায়িত মৎস্য রপ্তানীতে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
গত জুন, জুলাই ও আগষ্ট মাসে কক্সবাজার জেলায় পর পর দু’টি বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়। এর সাথে ঘূর্ণিঝড় কোমেনের প্রভাব ও পাহাড়ী ঢলে কৃষকের বোনা স্বপ্নের বীজ তলাসহ রবি শষ্য ভেসে যায়। এতে চিংড়ি ও মৎস্য চাষীদের যেন সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দেয়।
কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় যেখানে চিংড়ি চাষ হয় সেখানে বর্তমানে বিধ্বস্ত বেড়িবাধ দিয়ে জোয়ার-ভাটা আসা যাওয়া করছে। অরক্ষিত হয়ে পড়েছে চিংড়িঘেরগুলো। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে বিভিন্ন মৎস্য প্রকল্প ও চিংড়ি ঘেরের বেড়িবাধ ভেঙ্গে বিলীন হয়ে যায়। এতে করে মাছের পোনা ও চাষের মাছ ভেসে যায় বন্যার পানি ও পাহাড়ী ঢলে।
বন্যার পর সরকারীভাবে ক্ষয়ক্ষতির বিবরণে দেখা যায় চিংড়ি ও মৎস্য খাতে কক্সবাজার জেলায় ৭শত কোটি টাকার বেশী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলার সাড়ে ৪ হাজার চিংড়ি ঘেরের মধ্যে ৪ হাজার চিংড়ি ঘেরই জোয়ার ও বন্যার পানিতে বিলীন হয়েছে। ৫৪ হাজার একর চিংড়ি ঘেরের মধ্যে থাকা ৩শত কোটি টাকার পোনা ও চিংড়ি মাছ ভেসে গেছে। প্রায় ৯ শত মিঠাপানির মৎস্য খামার বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
প্রায় ১০ হাজার একর জমির বিভিন্ন ফসল, ধানের বীজতলা, রবিশষ্য নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যার পানিতে ভেঙ্গে গেছে জেলার বিভিন্ন জনপথের অবস্থা ঝরাজীর্ণ।
মৎস্য সেক্টরের এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে চিংড়ি চাষীরা সরকারী সহায়তার পাশাপাশি চিংড়ি জমির দু’বছরের খাজনা মওকুপের দাবি জানিয়েছেন।
সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ও পাহাড়ী ঢলে বেড়িবাধ বিলীন হয়ে যাওয়ায় ৫০ হাজার একর চিংড়ি জমিতে চিংড়ি চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জরুরী ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত এসব বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা না হলে জেলার কয়েক লক্ষাধিক চিংড়ি চাষী অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে জানিয়েছেন চিংড়ীঘের মালিকরা। একই সাথে হিমায়িত মৎস্য রপ্তানীতেও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
You must be logged in to post a comment.