শিশু শ্রম একটি মারাত্মক অপরাধ। যুগ যুগ ধরে এই দেশের মানুষসহ সারা বিশ্ব এক সময় শিশু শ্রমসহ দাসপ্রতার বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রম করেছিলো। কিন্তু বিংশ শতাব্দীর এই যুগেও দাসপ্রতা চালু আছে যা কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যায়। এই রকম একটি ঘটনা ঘটেছে কক্সবাজারের চকরিয়ায়। এক ধরনের অসাধু ও লোভী দুর্বৃত্তচক্র নানা কৌশলে শিশুদের অপহরণপূর্বক ক্রীতদাসের মতো খাটিয়ে অবৈধ রোজগার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
চকরিয়া থেকে ৫ম শ্রেণী পড়ুয়া তৌহিদ নামের এক শিশু ছাত্রকে প্রলোভনে ফেলে অপহরণের ১২দিন পর চট্টগ্রাম মহানগর থেকে উদ্ধারের পর ওই ছাত্রের বক্তব্য থেকে পাওয়া গেছে শিশু শ্রমের চাঞ্চল্যকর তথ্য।
আত্মীয়দের উদ্বৃতি দিয়ে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, উপজেলার বরইতলীর পহরচাঁদা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র ওই এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে তৌহিদ। আবু মুছা নামক এক ব্যক্তি শিশু তৌহিদকে ১০ আগস্ট বিকালে নানা প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে চট্টগ্রামমূখী একটি বাসে তুলে দেয়। তৌহিদ চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ব্রীজ পয়েন্টে পৌঁছলে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তাকে নিয়ে যায় মহানগরের কোতোয়ালী থানাধীন একটি আবাসিক হোটেলে। ওই হোটেলে তৌহিদকে জিম্মি রাখা হয় ১২দিন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ আত্মীয় ও সোর্স থেকে খবর পেয়ে গতকাল শনিবার ভোররাতে অভিযান চালায়। কোতোয়ালী থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে তৌহিদকে উদ্ধার করে শনিবার সন্ধ্যায় চকরিয়া থানায় আনা হয়। এসময় তৌহিদ ওসি’র কাছে কান্নাজড়িত কন্ঠে জানায় জিম্মি অবস্থায় আমাকে ভয়ভীতি দেখানো হয় ওই ব্যক্তিদের ইচ্ছেমতো কাজ করতে।
ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর আরো বলেন, আইনী বিধি নিষেধ ও শ্রমজীবি সংকটের কারণে একটি অসাধুচক্র গ্রামীণ এলাকা থেকে কৌশলে শিশুদের শহরে নিয়ে যায়। ওই শিশুদের হোটেল ও রেস্তোরাঁসহ দিনমজুরী কাজে ব্যবহার করে চক্রটি মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। তাদেরই ফাঁদে পড়ে চকরিয়ার তৌহিদ। ঘটনাটির ব্যাপারে রাত ৯ টায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিলো। ওই অপহরণে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
You must be logged in to post a comment.