কথিত অপহৃত এইচএসসি পরিক্ষার্থী ২৮দিন পর উদ্ধার
মুকুল কান্তি দাশ; চকরিয়া :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় জমির বিরোধ নিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে অপহরণ নাটকের গোঁমর ফাঁস হয়ে গেছে। আত্মগোপনে থাকা কলেজ ছাত্রকে ২৮দিন পর পুলিশ উদ্ধার করলে উন্মোচিত হয় অপহরণ রহস্য। ৩ এপ্রিল রবিবার বেলা ১টার দিকে ডুলাহাজারা স্কুল কেন্দ্র থেকে উদ্ধার করা হয় কথিত অপহৃত ডুলাহাজারা কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী জিমান উদ্দিন জিয়াকে। এটি ওই ছাত্রের দ্বিতীয় অপহরণ নাটক। প্রথম দফায় বাবার কাছ থেকে টাকা আদায় করতে বন্ধুদের সহায়তায় অপহরণ নাটক সাজানো হয়েছিল।
হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির আইসি এসআই দেবাশীষ সরকার বলেন, গত ৬ মার্চ কলেজ ছাত্র জিয়াকে অপহরণ করা হয়েছে দাবী করে তার মা রোজিয়া বেগম রুবি বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় গত ১৫ মার্চ একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় স্বামী গিয়াসউদ্দিনের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ থাকা প্রতিবেশী ৯ জনকে আসামী করা হয়। এই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ অপহরণের কোন তথ্য না পেলেও দুইপক্ষের মধ্যে মারামারির সত্যতা পায়। তাই অপহরণ মামলা নিয়ে বিপাকে পড়ে পুলিশ। অবশেষে ৩ এপ্রিল এইচএসসি পরীক্ষা শেষে কেন্দ্রের বাইরে থেকে কথিত অপহৃত ছাত্রকে উদ্ধার করলে অপহরণ রহস্য উদঘাটিত হয়।
এসআই দেবাশীষ সরকার আরো বলেন, উদ্ধার হওয়া ছাত্র প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে বলেন, তাকে কেউ অপহরণ করেনি। নিজেই বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাড়ীতে লুকিয়ে ছিলেন।
উদ্ধার হওয়া ছাত্র জিমান উদ্দিন জিয়া বলেন গত ৬ মার্চ আমার এক বন্ধু নাজেম উদ্দিনকে নিয়ে লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা এলাকায় যাই। কিছু মায়াবড়িতে রং মিশিয়ে ইয়াবাসদৃশ করে ২১ হাজার টাকায় বিক্রির বিষয়ে বাহার উদ্দিনের সাথে আমাদের চুক্তি হলেও ভেজাল ধরা পড়ায় তাদের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে বন্ধু নাজেম উদ্দিন কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
এরপর বাহারের লোকজন আমাকে জিম্মি করে রাখে। বিষয়টি আমার বাবাকে মুঠোফোনে জানানো হয়। ৮ মার্চ আমার মা-বাবা ওখানে গিয়ে আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। পরে অপহরণ দেখাতে আমাকে চকরিয়া উপজেলার ফাঁশিয়াখালী ইউনিয়নের ভেন্ডিবাজার এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ীতে রাখা হয়। পরে ওখান খেকে জায়গা বদল করে বিভিন্নস্থানে অবস্থান করি। আমার পরীক্ষার সুবিধার্থে গত শনিবার রাতে পালাকাটাস্থ একজন নেতার বাড়ীতে আশ্রয় নিই। রবিবার এইচএসসি বাংলা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। পরীক্ষা শেষে আমাকে পুলিশ থানায় নিয়ে আসে।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জহিরুল ইসলাম খান বলেন, উদ্ধার করা কলেজ ছাত্র নিজেই স্বীকার করেছে তাকে কেউ অপহরণ করেনি। এর আগেও এই ছাত্র আরেকবার অপহরণ নাটক সাজিয়েছিল। প্রথমবার বাবার কাছ থেকে টাকা আদায় করতে দ্বিতীয়বার মা-বাবার পরামর্শে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে অপহরণ নাটক সাজায়। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
You must be logged in to post a comment.