কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় উপজেলা পেকুয়ায় পাহাড়ি ঢলে সদর ইউনিয়নসহ ব্যাপক এলাকা পানির নীচে তলিয়ে আছে। বানের পানিতে দিশেহারা মানুষের ওপর বাঙ্গোপসাগর তীরবর্তী উজানটিয়া ও মগনামার ৪টি পয়েন্টে, রাজাখালী ইউনিয়নের সুন্দরীপাড়া ও মাতবরপাড়া পয়েন্টে ২টি পয়েন্টে বেড়িবাধ ভেঙ্গে সাগরের সাথে মাতামুহুরী নদীর পানি একাকার হয়ে পুরো পেকুয়া এখন পানির নীচে তলিয়ে থাকায় দু’লক্ষ মানুষ পানিবন্দী। গত জুন মাসের ২৫তারিখ মাতামুহুরী নদীর বাঘগুজারা রাবারড্যাম পয়েন্টে ভেঙ্গে ৪দিন পানির নীচে পেকুয়া সদর বারবাকিয়া ও শিলখালী ইউনিয়ন তলিয়ে ছিল। দীর্ঘদিন ধরে নদীর বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করায় এক মাসের মাথায় ২৬ জুলাই থেকে আবারো পাহাড়ি ঢলের পানি সরাসরি পেকুয়ায় বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলে দিশেহারা হয়ে পড়ে পেকুয়ার দু’লাখ মানুষ।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট কোমেন ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে উজানটিয়া টেকপাড়ার দুটি পয়েন্টে প্রায় ৮চেইন সাগরের বেড়িবাধ ও মগনামা কাকপাড়ায় ১ চেইন ও শরতঘোনায় ৫চেইন মতো বঙ্গোপসাগরের বেড়িবাধ বিলিন হয়ে লোকালয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় গত দুদিন ধরে পুরো পেকুয়া পূর্বদিকের মাতামুহুরী নদী ও পশ্চিমদিকের বঙ্গোপসাগরের সাথে একাকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অব্যাহত বন্যার পানি ও সাগরের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে থাকায় প্রধান সড়ক সহ আভ্যন্তরীন সড়ক দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। গত ৯দিন ধরে পেকুয়ায় বিদু্যত্ না থাকায় সার্বিকযোগাযোগ ব্যাহত হয়ে ব্যাপক সমস্যার সম্মূখীন পেকুয়ার লোকজন। পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু বলেন, বন্যার পানি নামার আগেই সাগরের বেড়িবাধ ভেঙ্গে পুরো পেকুয়া এখন জোয়ারভাটায় পরিণত হয়ে গেছে। হাসপাতাল উপজেলা কমপ্লেক্সসহ গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনায় পানি ওঠে গেছে, পেকুয়ায় এখন মানবিক সাহায্য দরকার। দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে সরকারী সাহায্য প্রয়োজন। আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে যারা অবস্থান নিয়েছে তারা না খেয়ে আছে প্রান্তিক পর্যায়ের লোকজন কিভাবে তাদের কাছে পানির জন্যে খোঁজ নিতেও যাওয়া যাচ্ছেনা।
পেকুয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ বলেন, পেকুয়ায় এখন মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। খাদ্য ও সুপেয় পানির তীব্র সংকট দূর্গত মানুষের কাছে পর পর দুবার সামর্থ অনুযায়ী খাবার পৌছে দিতে গিয়ে এখন সামর্থহীন উল্লেখ করে তিনি বিত্তবান ও সরকারের কাছে জরুরী সাহায্য পৌছে দিতে আহবান জানান। পেকুয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে প্রায় বাড়িঘর পানির নিচে তলিয়ে আছে। পানির কারণে কেউ কারো খোঁজ নিতে পারছেনা বলেও বন্যার্তরা জানিয়েছে।
You must log in to post a comment.