সোমবার, ১৫ অগাস্ট ২০২২, ০৯:২৯ অপরাহ্ন
মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা :
বাকশক্তি নেই, হাত-পা দূর্বল, স্মৃতিশক্তি খিন এরকম নানান সমস্যা নিয়ে পিএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে মুস্তািহদ আবরার তাসপি। দেখতে স্বাভাবিক মনে হলেও তার সাথে কথা বললে বুঝা যায় তার সমস্যা গুলো। তার স্বপ্ন, ভবিষ্যতে শিক্ষক হয়ে জাতি গঠনে ভূমিকা রাখবে। কিন্তু তার স্বপ্ন পূরণে বড় বাধা তার শরীর। শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে স্বাভাবিক শিশুদের মতো কথাবলা ও চলাফেরা করতে পারেনা তাসপি।
লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউপি সচিব মুহাম্মদ আয়ুব আলী ও গৃহিনী তাজনিন জান্নাত (রুমা) দম্পতির সন্তান তাসপি। জন্মলগ্ন থেকে বাক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী তাসপি। ২০১৩ সালে মা তাজনিন জান্নাত (রুমা) শিশু তাসপিকে লামা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি করে দেয়। ভর্তির পর থেকে স্কুলশিক্ষক, গৃহশিক্ষক ও নিজেদের অক্লান্ত চেষ্টা থাকে তাসপিকে মানুষ করার পিছনে। শুরু থেকে শিশুদের চক-শ্লেট দিয়ে বর্ণ লেখা শেখালেও তাসপি খাতা-কলমে লেখা শেখে। ২০১৫ সালে চতুর্থ শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায় ৫২জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে তাসপি ২২ নম্বরে পাস করে। শারীরিক সমস্যা থাকলে তার লেখাপড়া প্রতি মনযোগ প্রবল।
তাসপির মা তাজনিন জান্নাত (রুমা) জানান, ওকে কেউ ব্যঙ্গ করলে সে খুব কষ্ট পায়। বিদ্যালয়ের খেলাধুলায় ওর অংশ নেয়ার খুব ইচ্ছা। কিন্তু বিধাতা ছেলেটাকে শক্তি দেয়নি। ফলাফলের পর ওকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেবো। আমার দুই ছেলের মধ্যে তাসপি বড়।
লামা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মুজিবুর রহমান জানান, ছেলেটা অত্যন্ত মেধাবী। ২০১৩ সালে যখন ওকে ২য় শ্রেণীতে ভর্তি করে তখন তার অবস্থা অনেক খারাপ ছিল। আমাদের নার্সারী ও যতেœ আজ সে অনেক অগ্রসর হয়েছে। লেখাপড়ার প্রতি তার আগ্রহ অনেক।
পিএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র লামা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব মোজাম্মেল হক বলেন, তাসপিকে আলাদা কক্ষে পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করতে চেয়েছি। কিন্তু সে অন্যান্য শিশুদের মধ্যে থেকে পরীক্ষা দিতে আগ্রহী।
You must be logged in to post a comment.