সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / অর্থনীতি / ঘোষণার আগেই বাড়লো চিনির দাম

ঘোষণার আগেই বাড়লো চিনির দাম

অনলাইন ডেস্ক :
কয়েকদিন ধরে আলোচনা চলছিল বাড়তে পারে চিনির দাম। এর মধ্যে ডলারের দাম বেড়ে আমদানি মূল্য বেড়ে যাওয়ায় বাজারে চিনির দাম বাড়াতে প্রস্তাবও করেছে চিনি পরিশোধনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। এরপরই অস্থির হয়ে উঠেছে চিনির বাজার। আর তাতেই দেশের বাজারে বেড়েছে এই পণ্যের দাম। পাইকারি ও খুচরা বাজারে বাড়তি দামে চিনি বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি চিনি পাঁচ থেকে আট টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিনির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে চিনি পরিশোধনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সুগার রিফাইনারস অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এখনো চিনির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বা কোনো ঘোষণা আসেনি। এর পরও খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম পাঁচ টাকা বেড়ে খোলা চিনি ৯০ টাকা ও প্যাকেট চিনি ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও সরকারিভাবে উৎপাদিত বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চিনির দাম বাড়ানো হয়নি, সেটি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল সোমবার রাজধানীর বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে চিনির বাড়তি দাম নেওয়ার কথা জানা যায়। সরকারি বিপণন প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকালের বাজারদরের তালিকায়ও চিনির দাম বাড়ার চিত্র মিলেছে। টিসিবির হিসাবে, ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮৮ থেকে ৯০ টাকায়, এক সপ্তাহ আগেও যা ছিল ৮০ থেকে ৮২ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে টিসিবির হিসাবে চিনির দাম বেড়েছে আট টাকা।

বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কপোরেশনের প্রধান (বিপণন) মো. মাযহার উল হক খান বলেন, ‘বেসরকারি চিনি সরবরাহকারী কম্পানিগুলোর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়মের বাইরে চলার সুযোগ নেই। কিন্তু এবার মন্ত্রণালয়ের নিয়ম না মেনেই বাজারে চিনির দাম বাড়িয়েছে তারা, যা অন্যায়। তবে সরকারিভাবে উৎপাদিত চিনির দাম বাড়ানো হয়নি। আমাদের চিনির এক কেজির প্যাকেট সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৮৫ টাকাই রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘সরকারিভাবে চলতি বছরে প্রায় ২৪ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদিত হয়েছে। সরকারি ১৫টি চিনি কারখানার উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে দুই লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। ১৫টি কারখানার মধ্যে এখন ছয়টি বন্ধ, চালু আছে ৯টি কারখানা। আগামী নভেম্বর থেকে আখের মৌসুম শুরু হবে, তখন থেকে আবার চিনি উৎপাদন শুরু হবে। এই মৌসুমে প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন সম্ভব হবে। ’

সূত্র জানায়, গত ১০ আগস্ট চিনির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়ে নতুন দর নির্ধারণের আবেদন করেছে সুগার রিফাইনারস অ্যাসোসিয়েশন। তবে নতুন দাম কত হতে পারে সে ব্যাপারে কোনো সুপারিশ করেনি তারা। মন্ত্রণালয়ের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, প্রতি ডলারের বিপরীতে দেশি মুদ্রার ৩০ টাকার মতো অবমূল্যায়ন হয়েছে। ডলারের তেজিভাবের কারণে চিনিতে শুল্কায়নের পরিমাণও বেড়ে গেছে, যে কারণে দাম বাড়াতে চাইছে তারা।

এদিকে সম্প্রতি ভোজ্য তেলের দাম লিটারে ২০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে আমদানিকারক ও পরিশোধনকারী কম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনারস অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। তবে এ প্রস্তাবে এখনো সাড়া দেয়নি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরপর বাজারে ফের তেলের সরবরাহ সংকট দেখা দিয়েছিল। এই সুযোগে সয়াবিন তেলের দামও বাড়িয়ে বিক্রি করছেন কিছু খুচরা ব্যবসায়ী। বোতলের গায়ে লেখা মূল্যের চেয়ে লিটারে পাঁচ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে এই তেল বিক্রির অভিযোগ করছে ক্রেতারা। একইভাবে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দামও বেশি নেওয়া হচ্ছে।

বোতলের গায়ে লেখা দামের চেয়ে বেশি দামে তেল বিক্রির অভিযোগের বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘ডিলাররা বোতলের গায়ে লেখা দামেই খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে তেল বিক্রি করছে। ফলে খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।’

এদিকে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যপতনকে কারণ দেখিয়ে সম্প্রতি ভোজ্য তেলের দাম লিটারে ২০ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়। সর্বশেষ গত ২০ জুলাই প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৯৯ টাকা থেকে ১৪ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ১৮৫ টাকা। তবে এই দাম ফের বাড়িয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেল ২০৫ আর খোলা তেল প্রতি লিটার ১৮০ টাকা করার প্রস্তাব পেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, গত দুই দিনে বাজারে খোলা চিনির দাম কেজিতে ৩ টাকা করে বেড়েছে। গত সপ্তাহে চিনি কেজিপ্রতি ৮০ টাকা থেকে ৮২ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছিল, এখন সেটা ৮২ টাকা থেকে ৮৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বছর ব্যবধানে দেশে চিনির দাম ১৭ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়েছে। গত বছর একই সময়ে প্রতি কেজি চিনি ৭০ থেকে ৭২ টাকা ছিল।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

রামুতে তরমুজের দাম চডা :হিমশিম খাচ্ছে ক্রেতারা

  কামাল শিশির; রামু :কক্সবাজারের রামু উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পবিত্র মাহে রমজানের শুরুতে বিভিন্ন এলাকায় ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/