সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেললাইন বাস্তবায়নে ফের আশার আলো

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেললাইন বাস্তবায়নে ফের আশার আলো

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেললাইন

মুকুল কান্তি দাশ, চকরিয়া:

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ঘুমধুম রেললাইন প্রকল্প বাস্তবায়নে ফের আশার আলো জেগেছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারী কোষাগার থেকে ৬০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ভ‚মি অধিগ্রহণের জন্য। একনেকের বৈঠকে অনুমোদন হলেই শুরু হবে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ। তাই একনেকের অনুমোদন পূর্বক অর্থ ছাড় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্বাঞ্চল রেল কর্তৃপক্ষ। আর এই প্রকল্প বাস্তবায়নে আবারো আশার প্রদীপ জ্বলে উঠায় আনন্দ উদ্দীপনা ও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে পুরো কক্সবাজারে। রাজস্ব যোগানে এগিয়ে থাকা পর্যটন জেলা কক্সবাজারবাসী যোগাযোগ সুবিধায় পিছিয়ে রয়েছে। তাই রেল লাইন বাস্তবায়ন হচ্ছে সংবাদে আনন্দের হিল্লোল বইছে জেলাবাসীর মাঝে।

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, প্রথম দফায় ২০০১ সালের ভূমি জরিপে রেললাইন চকরিয়াস্থ মালুমঘাট মেমোরিয়াল খৃষ্ট্রান হাসপাতালের মাঝ দিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে বাধ সাধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চীনের সাথে চুক্তির পর এডিবি চীনের অর্থায়নে ৪টি সংস্থার সমন্বয়ে দ্বিতীয় দফায় জরিপ করে। এই জরিপে খ্রীস্টান হাসপাতাল এলাকাকে রেললাইন থেকে বাদ দেয়া হয়। জরিপটি চালায় কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল রেল (কেনারাল), স্মেক ইন্টারন্যাশনাল পিটিওয়াই লিমিটেড অস্ট্রেলিয়া (এসএমইসি), ডিবি ইন্টারন্যাশনাল জিএমএসএইস জার্মানী ও এসিই কনসালটেন্ট লিমিটেড নামক ৪টি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রেললাইন প্রকল্প বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম জেলায় ২৮০ একর এবং কক্সবাজার জেলায় ৯৯৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। এই অধিগ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের দাবীকৃত ৩৯৯ কোটি টাকার মধ্যে ৩১২ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে ইতোমধ্যে। গাছ-পালা এবং বাড়ী-ঘর ছাড়া কক্সবাজার জেলা প্রশাসন জমি অধিগ্রহণের জন্য দাবী করে ৩১৪ কোটি টাকা। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১০ সালের ৬ জুলাই একনেকের প্রথম বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছিলো। ওই সময় ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিলো ১৮৯২ কোটি টাকা। ইতিপূর্বে লোহাগাড়ার চুনতি, চকরিয়ার মালুমঘাট খৃষ্ট্রান হাসাপাতালের কিছু এলাকা বাদ দিয়ে নুতুন জরিপ করতে হয়েছে সরকারী সিদ্ধান্তে। এই জরিপকাজ সম্পর্ন হয়েছে গত জুলাই মাসে । একনেকের দ্বিতীয় বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে ভূমি অধিগ্রহণের ৬০৫ কোটি টাকা ছাড় করা হবে।

সূত্র মতে, দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটারসহ মোট ১২৮ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এতে পর্যটন শহর কক্সবাজারও রেললাইন নেটওয়ার্কের আওয়াতায় আসবে। নতুন রেললাইনে ৯টি স্টেশন যথাক্রমে, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ঈদগাঁও, রামু, কক্সবাজার, উখিয়া ও ঘুমধুম।

এ রেলপথে শঙ্খ, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া মাইনর ব্রীজ ৪৩টি, কালভার্ট ২০১টি, সাতাকানিয়ার কেওচিয়া এলাকায় একটি ফ্লাইওভার, ১৪৪টি লেভেল ক্রসিং এবং রামু ও কক্সবাজার এলাকায় ২টি হাইওয়ে ক্রসিং নির্মাণের তথ্য প্রস্তাবিত প্রকল্পে রয়েছে।

২০১১ সালে প্রকল্পটির ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিলো ১৮৫২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা এর মধ্যে সরকারের দেয়ার কথা ছিলো ৬৭০ কোটি ৬ লাখ টাকা। অবশিষ্ট ১১৮২ কোটি ২৮ লাখ টাকা দাতা সংস্থার কাছ থেকে সহযোগীতা নেয়ার কথা ছিলো। ওই সময়ে কোন দাতা সংস্থা এগিয়ে না আসায় (২০১২ সালের ৪ অক্টোবর) ভূমি অধিগ্রহণ স্থগিত করে রেললাইন মন্ত্রণালয়। ফের দাতা সংস্থা পাওয়ায় রেললাইন নির্মাণে জেগেছে আশার আলো।

প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে চকরিয়া পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আনোয়ারুল হাকিম দুলাল বলেন, সারাদেশের মধ্যে সরকারকে রাজস্ব যোগানে অন্যতম জেলা কক্সবাজার। কিন্তু এ জেলার লোকজন যোগাযোগের কারণে উন্নয়নে পিছিয়ে রয়েছে। রেললাইন নির্মাণ হলে চকরিয়াসহ জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সহজ হবে। এ জেলা নদী মাত্রিক এলাকা। তাই নৌ ও সড়ক পথের পাশাপাশি রেলপথ হলে পুরো জেলারই চেহারা পাল্টে যাবে। আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সরকার রেল লাইন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি।

কক্সবাজার চার আসন (উখিয়া-টেকনাফ) এর সাবেক এমপি প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, শেখ হাসিনার সরকার কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী। আইটি ও শিক্ষা ক্ষেত্রে আমোল পরিবর্তন এনে বিশ্ব দরবারে অন্যতম নেতার স্বীকৃতি পাচ্ছেন শেখ হাসিনা। কক্সবাজারবাসীকেও অন্যান্য উন্নয়নের পাশাপাশি রেললাইন অবশ্যই উপহার দিবেন। এই সরকারের আমলেই শুরু হবে চট্টগ্রাম-ঘুমধুম রেললাইন প্রকল্পের কাজ।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2023/01/BGB-Rafiq-24-1-23.jpeg

বিপুল পরিমাণ পপিক্ষেত ধ্বংস করল বিজিবি

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম : পার্বত্য জেলা বান্দরবানে থানচি উপজেলা গহীণ অরণ্যে মাদক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/