সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / অপরাধ ও আইন / টেকনাফের বার্মিজ মার্কেট এখন ইয়াবা ব্যবসায়ীদের দখলে : বৈধ ব্যবসার আড়ালে চলছে ইয়াবা পাচার

টেকনাফের বার্মিজ মার্কেট এখন ইয়াবা ব্যবসায়ীদের দখলে : বৈধ ব্যবসার আড়ালে চলছে ইয়াবা পাচার

গিয়াস উদ্দিন ভুলু; টেকনাফ :

পর্যটন নগরী টেকনাফ পৌর শহরের দীর্ঘ দিনের আলোচিত বার্মিজ মার্কেটটি এখন ইয়াবা ব্যবসায়ীদের দখলে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, এই মার্কেটের বেশি ভাগ দোকানদার বৈধ ব্যবসার আড়ালে নিত্য নতুন কৌশলে চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা ব্যবসা।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এরা কারা? এরা টেকনাফ বার্মিজ মার্কেট ও পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা মার্কেট গুলোর নামি-দামি ও বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্টানের মালিকরা। এই সমস্ত ব্যবসা প্রতিষ্টানের মালিকরা তাদের বৈধ ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা ব্যবসা করে যাচ্ছে। আর পাচারকারী হিসাবে ব্যবহার করে যাচ্ছে স্থানীয় হত দরিদ্র পরিবারের যুবকদেরকে। এই ইয়াবা ব্যবসা করে তারা দিনের পর দিন কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছে। অথচ ইয়াবা ব্যবসায়ীদের তালিকায় তাদের কোন নাম নেই। ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে নিত্য নতুন কৌশলে এই অবৈধ মরন নেশা ইয়াবা ব্যবসায় লিপ্ত রয়েছে।

তথ্য অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, পর্যটক খ্যাত টেকনাফ আলোচিত বার্মিজ মার্কেটের বেশির ভাগ দোকানদার এই অবৈধ ইয়াবা ব্যবসা করে অল্প কয়েক দিনের ব্যবধানে ৩-৪টি ব্যবসা প্রতিষ্টানের মালিক হয়েছেন। তবে আসল কথা হচ্ছে এখানে বৈধ ব্যবসার আড়ালে টেকনাফবাসীকে কলংকিত করে ঠান্ডা মাথায় ইয়াবা পাচার চালিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের, পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, আমিরাবাদসহ পাশ্ববর্তী এলাকার দোকানের মালিক ও কর্মচারিরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বার্মিজ মার্কেটের একজন পুরাতন দোকানদার আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, বৈধ ব্যবসার আড়ালে যারা অবৈধ ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ দোকানদার হচ্ছে টেকনাফ বার্মিজ মার্কেটের, এই সমস্ত দোকানের মালিকরা এক দুই বছর আগে ছিল কর্মচারী এখন এরা ইয়াবা ব্যবসা করে কোটি কোটি মালিক। তারা সেই অবৈধ টাকাকে বৈধ করার জন্য এখন বেশ কয়েকটি দোকানের মালিক। এক একটি দোকান ১৫-২০ লক্ষ মূল্য দিয়ে ক্রয় করে নিয়েছে। তাদের অবৈধ টাকার কাছে হার মেনে এই মার্কেটের অনেক পুরাতন দোকানদার বেশি টাকার লোভে পড়ে দোকান বিক্রি করে চলে যাচ্ছে।

সুত্রে আরো জানা যায়, বর্তমানে টেকনাফ বার্মিজ মার্কেটের এক একটি দোকানের মাসিক ভাড়া ১৫-২০ হাজার টাকা। এব্যাপারে টেকনাফের সচেতন বৈধ ব্যবসায়ীরা অভিমত প্রকাশ করে বলেন, টেকনাফ পৌর শহরের ভদ্রবেশী, মুখোশদারী বেশ কিছু দোকানদার বৈধ ব্যবসার আড়ালে বছরের পর বছর ধরে এই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তার পাশাপাশি তাদের অবৈধ টাকার কাছে হার মানতে হচ্ছে আমাদের মত ব্যবসায়ীদেরকে। তারা দু:খ প্রকাশ করে আরো বলেন, টেকনাফের সাধারণ মানুষ ও সাধারণ ব্যবসায়ীরা তাদের অবৈধ টাকার হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে।

এদিকে টেকনাফ উপজেলার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সীমান্ত এলাকা এলাকা টেকনাফ থেকে মাদক প্রতিরোধ করতে দিনের পর দিন কাজ করে যাচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় টেকনাফ বিজিবি, পুলিশ ও কোষ্টগার্ড সদস্যদের হাতে প্রতিনিয়ত ধরা পড়ছে লক্ষ লক্ষ ইয়াবা। আটক হচ্ছে ইয়াবা পাচারকারি বাহকরা, এদের মধ্যে কেউ রোহিঙ্গা, কেউ দিন মজুর, কেউ কর্মচারি, এই সমস্ত পাচারকারিরা ইয়াবাসহ ধরা পড়লেও ইয়াবা ব্যবসার মূল হোতারা বার বার থেকে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। কারণ মূল হোতারা সহজে ইয়াবা পাচারে ব্যবহার হয় না। তারা থেকে যায় নিজস্ব বৈধ ব্যবসার অন্তরালে। অথচ এই সমস্ত ভদ্রবেশী, মুখোশধারী ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কারনে টেকনাফের সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন, বছরে পর বছর, ইয়াবার আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে ও ইয়াবার বদনাম মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইয়াবাসহ ধরা পড়ে কারা ভোগ করে আসা টেকনাফ পৌর শহরের বেশ কয়েক জন যুবক আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, আমাদেরকে ইয়াবা পাচারে ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছে টেকনাফে বসবাসরত সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের দোকানদার ব্যবসায়ীরা। তাই আমাদের দাবি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যারা ইয়াবা ব্যবসার মুলহোতা তাদেরকে আইনের আওয়াতাই নিয়ে আসলে দীর্ঘ দিনের অজানা সব গোপন তথ্য বেরিয়ে আসবে এবং ইয়াবা পাচারও প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

এব্যাপারে টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লে: কর্ণেল আবুজার আল জাহিদ জানান, টেকনাফের বাইরে থেকে এসে যারা বৈধ ব্যবসার আড়ালে নিত্য নতুন কৌশলে এই সমস্ত অবৈধ মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে তাদেরকে ধরতে আমাদের সদস্যরা সদা প্রস্তুত রয়েছে। তিনি আরো বলেন, যারা বাইরে থেকে এসে টেকনাফ শহরে বৈধ ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে দিনের পর দিন টেকনাফের সুনাম নষ্ট করছে। পাশাপাশি টেকনাফবাসীর দুর্নামও হচ্ছে। তাই আমি মনে করি বৈধ ব্যবসার আড়ালে এই অবৈধ ইয়াবা ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করার জন্য আমাদেরকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে। তাদেরকে আইনের আওয়াতাই নিয়ে আসতে পারলে টেকনাফবাসী ইয়াবার আগ্রাসন ও বদনাম থেকে অনেক মুক্তি পাবে।

 

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁওর কালিরছড়ায় অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে প্রার্থী হলেন নুরুল আমিন

  নিজস্ব প্রতিনিধি; ঈদগাঁও :কক্সবাজারের ঈদগাঁও ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে অসহায় ও হত দরিদ্র মানুষের মুখে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/