অনলাইন ডেস্ক :
দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রিকশা যাত্রী বা পথচারীর ব্যাগ টান মেরে পালিয়ে যাওয়া ছিনতাই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এদের মধ্যে একজন আশরাফুল। যিনি বছর তিনেক আগেও পেশায় ছিলেন বস্ত্র ইঞ্জিনিয়ার।
সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এ তথ্য জানান।
আশরাফুল সম্পর্কে তিনি জানান, আশরাফুল পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। ধানমন্ডির একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে একটি রাজধানীতে টেক্সটাইল কোম্পানিতে বস্ত্র প্রকৌশলী হিসেবে ৩৫ হাজার টাকা বেতনে করতেন। ২০১৯ সালে চাকরি ছেড়ে ওই কোম্পানির পিকআপ চালক লেলিন শেখের মাধ্যমে এ চক্রে জড়ান।
জানা যায়, ‘পাইলট-ঈগল’ নামে কাজ করা এই দুজনের টার্গেট ছিল রিকশা আরোহীরা। ছিনতাইকারী গ্রুপে যিনি মোটরসাইকেল চালাতেন তাকে বলা হয় পাইলট। তিনি পথঘাট চেনাসহ মোটরসাইকেল চালনায় দক্ষ। অন্যদিকে আরোহী হয়ে যিনি ব্যাগ টান দেয়ার কাজটি করেন তাকে বলা হয় ঈগল। দামী ও গতিশীল মোটরসাইকেল দিয়ে প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্থানে অথবা সুবিধামতো জায়গায় গেলেই আচমকা পেছন থেকে এসে রিকশা আরোহী বা পথচারীর ব্যাগ ছোঁ মেরে পালাতো।
গ্রেফতার অন্যরা হলেন- লেলিন, জিল্লুর রহমান খান ও সাইফুল ইসলাম ওরফে শাওন। রাজধানীর মগবাজার ও মোহাম্মদপুরের পশ্চিম কাঁটাসুর এলাকা থেকে তাদের রোবার গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেল, ছিনতাই করা ৩৪ লাখ টাকা, ৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চক্রটি মিরপুর, পল্লবী, বনানী, গুলশান, ধানমণ্ডি, তেজগাঁও ও আগারগাঁও এলাকায় শতাধিক ছোট-বড় ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, রোজার আগে মিরপুর এলাকায় ১১ লাখ এবং ৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। দুই ঘটনাতেই পল্লবি থানায় পৃথক মামলাও হয়। এরপর ডিবি গুলশানের একাধিক টিম মামলা দুটির ছায়া তদন্তে নেমে সিসিটিভির ফুটেজ ও প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথম ঘটনায় ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ ও লেলিন এবং দ্বিতীয় ঘটনায় জিল্লুর ও সাইফুলকে মোটরসাইকেল আরোহী হিসেবে শনাক্ত করে। এরপর তাদের গ্রেফতার করা হয়।
চক্রটির সদস্যরা মূলত দিনের বেলা ব্যাংককেন্দ্রিক টাকা নিয়ে যারা স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতেন তাদের টার্গেট করা হতো এবং কোন কোন এলাকায় সিসিটিভি নেই ও ফাঁকা রাস্তা পেলেই আচমকা টান মেরে হাই স্পিডে পালিয়ে যেতো। তারা সঙ্গে কোনো অস্ত্র রাখেনা তাই চেকপোস্টে তাদের পুলিশ আটকালে ছিনতাইয়ের ব্যাগ নিজের বলে পার পেয়ে যান।
You must be logged in to post a comment.