সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / শরণার্থী সমাচার / ডেঙ্গু আতংকে রোহিঙ্গারা

ডেঙ্গু আতংকে রোহিঙ্গারা

বালুখালী ময়নাঘোনা ক্যাম্প নং-১১; ক্যাম্পে ড্রেনের পাশেই অনিরাপদ ও অপরিচ্ছন্ন টয়লেট

হুমায়ুন কবির জুশান; উখিয়া :
সারা দেশের ন্যায় কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। আর এতেই রোহিঙ্গাদের মাঝে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গু আতংক। তবে এখনও পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের মাঝে ডেঙ্গু রোগ ধরা পড়েনি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় বারো লাখ মিয়ানমারের জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমের বসবাস। বসবাসরত রোহিঙ্গাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু রয়েছে। নিজ দেশে রোহিঙ্গাদের ওপর বারংবার অত্যাচারের ফলে তাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। তাই বিশ্ব সম্প্রদায় চরম নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এক এনজিও কর্মী বরগুনা জেলার মমতাজ বেগম (৩০) গত ২ আগস্ট গায়ে প্রচন্ড জ্বর নিয়ে কোটবাজার অরজিন হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করতে আসেন। পরের দিন একই হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করতে আসেন স্থানীয় হলদিয়াপালং গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন (২০) নামের এক যুবক। উভয়ের রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গুর জীবাণুর অস্থিত্ব পাওয়া গেছে বলে হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল করিম জানিয়েছেন।

এদিকে টেকনাফ মেরিন সিটি হাসপাতালেও একজন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হওয়ার কথা জানান, হাসপাতালের চেয়ারম্যান কহিনুর আক্তার।উখিয়া সরকারি হাসপাতালের দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মেরাজ হোসেন চয়ন কক্সভিউ ডট কম’কে বলেন, আমরা এ পর্যন্ত উখিয়াতে দুই জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত করেছি। তাদেরকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু জীবাণু শনাক্ত হলে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমাদের এখানে যেসব ডেঙ্গুর জীবাণু পাওয়া গেছে তা ক্ষতিকর নয়। তবু সতর্কতা অবলম্বন হিসাবে বাড়ির চারপাশে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আমাদের সকলকে এই ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক খন্দকার আলী আর রাজী বলেন, ডেঙ্গুবাহিত এডিস মশার ভয়ে গরমেও সারা রাত কাটছে মশারির মধ্যে। কিন্তু মশারি টাঙিয়ে শুয়ে আতঙ্ক কাটছে না মানুষের। সেখানেও হাতে থাকে মশা মারার ব্যাট। এছাড়া বাচ্চারা ঘুমায় কয়েল জ্বালিয়ে। এখন প্রশ্ন হলো জানালা ছাড়া ছোট্ট ঘরে রোহিঙ্গা শিশুরা কতখানি নিরাপদ।

তিনি বলেন, ক্যাম্প এলাকায় পানি নিস্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। পাহাড়ের নিচে জমে থাকা পানিতে শিশুরা খেলা করে, পানিবাহিত রোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সবার আগে শিশুদের সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পের

সেতারা নামের এক শিক্ষিতা রোহিঙ্গা নারী জানান, ক্যাম্পে নারী ও শিশুদের সংখ্যাই বেশি। রোহিঙ্গাদের বাল্য বিয়ে ও উচ্চ জন্মহারের কারণে ক্যাম্পগুলোতে বেড়েই চলেছে অনিয়ন্ত্রিত শিশু জন্মদান। এদের মধ্যে নেই কোনো শিক্ষা ও সচেতনতা। তাই প্রত্যেক এনজিওর উচিত ক্যাম্পে ডেঙ্গু বিষয়ক সেমিনার ও সচেতনতা মূলক প্রচারণা।

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, ক্যাম্পে এনজিওতে কর্মরত এনজিও কর্মীরা কোরবানীর ঈদের ছুটিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাদের বাড়িঘরে ঈদ করতে যাবেন। সেই সময় রোহিঙ্গাদের কোরবানীর গরুর বর্জ্য এলাকার পরিবেশকে দূষিত করে ফেলবে। তাছাড়া ঐ এনজিও কর্মীরা (আল্লাহ না করুক) যদি ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্যাম্পে ফিরলে সেই সময়ের অবস্থা কী হবে তা নিয়েও ভাবতে হবে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁও যুব ঐক্য পরিবারের সাথে পোকখালী যুব উন্নয়ন সংগঠনের মতবিনিময়

নিজস্ব প্রতিনিধি; ঈদগাঁও : কক্সবাজারের নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলার অনন্য সামাজিক সংগঠন ঈদগাঁও যুব ঐক্য পরিবারের ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/