সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / পেকুয়ায় মায়ানমারের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ

পেকুয়ায় মায়ানমারের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ

ফাইল ছবি

এস.এম.ছগির আহমদ আজগরী; পেকুয়া :

কক্সবাজারের পেকুয়ায় বিভিন্ন প্রান্তে অবাধে ঢুকে বসবাস শুরু করেছে মায়ানমারের রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের লোকজন। এতে করে এলাকায় অপরাধ প্রবণতা ও মানবিক বিপর্যয়ের শংকায় ভুগছেন স্থানীয়রা। সে দেশে জাতিগত সহিংসতার প্রভাবে লাখ লাখ রোহিংগা জনগোষ্টি পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী দেশ হিসাবে পরিচিত বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে। কক্সবাজার জেলায় সবচেয়ে বেশী রোহিংগারা ছড়িয়ে পড়ছে। গত কয়েক মাসের ব্যবধানে এসব অনুপ্রবেশকারীরা জেলার পেকুয়া উপকূলীয় উপজেলায়ও ঢুকে পড়েছে। এ পর্যন্ত পেকুয়ায় বেশকিছু রোহিংগার বসবাস বিচরণ পরিলক্ষিত হয়েছে। পাহাড় সমতল ও উপকূলের বিশাল দূর্গম এলাকা নিয়ে পেকুয়া উপজেলার ভৌগলিক অবস্থান। এ সুবাধে অনুপ্রবেশকারীদের জন্য দু’টি স্থান সহজ হয়েছে। দূর্গম পাহাড়ে কিছু রোহিংগা পরিবার নিয়ে সম্প্রতি অবস্থান গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উজানটিয়া ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ করিয়ারদিয়ায় ১০/১২জন রোহিংগা নাগরিক আশ্রয় গ্রহণ করে বসবাস শুরু করেছেন।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, করিয়ারদিয়ায় ফকিরাঘোনা বাইন্নাপাড়া পুরাতনঘোনা ও ষাইট পাড়ায় কিছু কিছু রোহিংগা বিচরণ করতে দেখা যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, গত দু’য়েক মাসের ব্যবধানে করিয়ারদিয়ায় এসব রোহিংগা নাগরিকরা অনুপ্রবেশ করেছে। তারা টেকনাফ ও অন্যান্য শরণার্থী শিবির থেকে পালিয়ে লোকালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এদের মধ্যে ফকিরপাড়া এলাকায় মৃত আবু ছৈয়দের পুত্র রেজাউল করিমের কাছ থেকে বাড়ি ভাড়া নেয় একটি রোহিংগা পরিবার। ওই পরিবারের সদস্য সংখ্যা ১০/১৫জনেরও অধিক। কামাল নামের আরেক রোহিংগা নাগরিক ওই বাসায় অবস্থান নিয়ে করিয়ারদিয়ায় লবন উৎপাদন কাজে জড়িয়েছে। ওই পরিবার বিত্তশালী। তিনজন সদস্য মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছে। তারা মহিলা পূরুষ ও শিশু নিয়ে সেখানে অবস্থান করছে। তবে, স্থানীয় লোকজন জানান, কামালদের পূর্ব পূরুষের বসবাস করিয়ারদিয়ায়।

মায়ানমারে জাতিগত দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়লে তারা সম্প্রতি বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। কয়েকজন নেতৃস্থানীয় জানান, মানবিক দিক বিবেচনা করে কামাল ও তার পরিবারকে এখানে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে। অপর একটি সূত্র জানিয়েছেন, কামালদের কোন পূর্ব পূরুষ করিয়ারদিয়ায় ছিলনা। সে টাকা দিয়ে এসব লোককে ম্যানেজ করে মূলতঃ এখানে অবস্থান নিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, কামাল ও অন্যান্য আশ্রিত রোহিংগাদের গতিবিধি অত্যন্ত সন্দেহজনক। এরা কৌশলে এখানে আশ্রয় নিয়েছে। অনুপ্রবেশকারী হলেও এদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের। রোহিংগারা হিংস্র। তারা যে কোন মূহুর্তে অঘটন ঘটিয়ে দেশান্তর হলে এর দায় কে নেবে? এমন প্রশ্ন সচেতন জনগোষ্টির। করিয়ারদিয়ার বেঁড়িবাধেও ঝুপড়িঘর তৈরী করে একাধিক রোহিংগা পরিবার প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে ঠাঁই নিয়েছে বলে স্থানীয়রা নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, রোহিংগা অনুপ্রবেশকারী করিয়ারদিয়ায় মায়ানমারের এসব নাগরিকের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নিতে পেকুয়ার কর্মরত এক সংবাদকর্মী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের পেকুয়ার চর এলাকার নুরুল আবছারের পুত্র ও দৈনিক দৈনন্দিন পত্রিকার পেকুয়া প্রতিনিধি সাংবাদিক জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে গত ৮জানুয়ারী একটি অভিযোগ থানায় দাখিল করেছেন। তিনি রোহিংগাদের আশ্রয়দানকারী হিসাবে করিয়ারদিয়া এলাকার মৃত আবু ছৈয়দের পুত্র আবদুল মালেক, মৃত জকির আলমের পুত্র আলী হোসেন, মৃত ফজল করিমের পুত্র মকসুদ ও আবু ছৈয়দের পুত্র রেজাউল করিমের নামোল্লেখ করে অভিযোগটি দেন। উজানটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা এম. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী তার ইউনিয়নের করিয়ারদিয়া ও বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্পটে রোহিংগাদের অনুপ্রবেশ বসতি স্থাপনের সত্যতা জানিয়ে বলেন, যারা এসব তথ্য সংবাদকর্মীদের অবগত করছে তারাই মূলত এদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক সূযোগ সুবিধা হাতিয়ে নিয়ে আশ্রয় প্রশ্রয়ে জড়িত। আবার এদের উৎপাতে অতিষ্ট হয়েই আশ্রিত রোহিংগারা গ্রাম ছাড়া হয়ে পড়েছে।

পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মোঃ মোস্তাফিজ ভুঁইয়া অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রোহিংগা অনুপ্রবেশ ঘটনার বিষয়ে খোঁজ খবর তদন্ত নজরদারী অব্যাহত রয়েছে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

রামুতে তরমুজের দাম চডা :হিমশিম খাচ্ছে ক্রেতারা

  কামাল শিশির; রামু :কক্সবাজারের রামু উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পবিত্র মাহে রমজানের শুরুতে বিভিন্ন এলাকায় ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/