সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / প্রতিদিন বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সংখ্যা : সহযোগীতা করছে তিন শ্রেণীর দালাল চক্র

প্রতিদিন বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সংখ্যা : সহযোগীতা করছে তিন শ্রেণীর দালাল চক্র

ফাইল ছবি

গিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ :

উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত এলাকা দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ এই সীমান্ত এলাকাটি অরক্ষিত, তার পাশাপাশি উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত জুড়ে রয়েছে বেশ কিছু চিহ্নিত দালাল চক্র। এই দালালদের সহযোগীতায় সীমান্ত এলাকা পাড়ি দিয়ে বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সংখ্যা।

তথ্য-অনুন্ধানে আরো জানা যায়, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সহযোগীতায় যে সমস্ত দালালরা সক্রিয় ভাবে জড়িত তারাও রোহিঙ্গা। তবে এই সমস্ত রোহিঙ্গা দালালরা বর্তমানে বাংলাদেশের নিবন্ধিত নাগরিক। এই চিহ্নিত দালালরা বছরের পর বছর ধরে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এই দেশে বসতি স্থাপন করে দিচ্ছে রোহিঙ্গাদেরকে।

খবর নিয়ে আরো জানা যায়, বিগত ২ মাস ধরে পাশ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে সাম্প্রাদায়ীক হামলাকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর বিজিপি ও সেনা বাহিনীর অমানবিক নির্যাতন, মানুষ হত্যা, নারী ধর্ষণ এখনো অব্যাহত রয়েছে। সেই সুত্র ধরে ইদানিং উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত এলাকা পাড়ি দিয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। এই নির্যাতিত রোহিঙ্গাদেরকেও জিম্মি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সীমান্ত এলাকার তিন শ্রেনীর সুবিধা ভোগি দালাল ও তাদের সহযোগীরা। প্রথম ধাপে রোহিঙ্গাদেরকে সীমান্ত পারাপার করতে রয়েছে নাফনদীতে মাছ ধরা জেলে নামধারী বেশ কিছু চিহ্নিত দালাল। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢুকার পর দ্বিতীয় ধাপে এই রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে সরকারী বন ভুমি দখল করে বসতি স্থাপন করে দিচ্ছে। তৃতীয় ধাপে রোহিঙ্গা ও সহযোগী দালালদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে উখিযা-টেকনাফের কয়েক শ্রেনীর সুবিধাভোগী মানুষ। তারাও নাকি দালালদের সহযোগীতায় মোটা অংকের টাকা পেয়ে লাভ বান হচ্ছে।

বিভিন্ন সুত্রে আরো জানা যায়, গত অক্টোবর মাস থেকে মিয়ানমারের আরকান রাজ্য মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় সীমান্ত বিওপিতে সন্ত্রাসী হামলার অজুহাতে সে দেশের মিলিটারী বাহিনী কর্তৃক রাখাইনদের ইশারায় সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপর জুলুম নির্যাতন, গণধর্ষণ, হত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে বিভিন্ন পন্থায় সেদেশ থেকে মুসলিমদের বিতাড়ীত করার পথ সৃষ্টি করে চলছে বছরের পর বছর।

উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত যতবার মিয়ানমারের সংখ্যালুঘু মুসলিমরা এদেশে এসেছে ততবার কোন না কোন কিছুর সুত্র ধরে মিয়ানমারের সেনা বাহিনী ও রাখাইনরা রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর চালিয়েছে জুলুম, অমানবিক নির্যাতন, গণহারে মানুষ হত্যা, সেই জুলুম নির্যাতন থেকে নিজের প্রাণ বাঁচাতে এদেশে পাড়ি জমিয়েছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। পরিসংখানে দেখা যায়, বর্তমানে উখিয়া-টেকনাফের রেজিষ্টাট- আনরেজিষ্টাটসহ বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও কক্সবাজার জেলার আনাচে-কানাছে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ রোহিঙ্গা বসতি স্থাপন করে যাচ্ছে।

এব্যাপারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ করতে এলাকার সচেতন ও সুশীল সমাজের নাগরিকরা অভিমত প্রকাশ করে বলেন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হলে, রোহিঙ্গা পারাপারের স্থানীয় ঘাটসমুহ ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সহযোগীতাকারী সংশ্লিষ্ট দালার চক্রের সদস্যদেরকে আইনের আওয়াতায় নিয়ে আসতে হবে। তাহলে উখিয়া-টেকনাফের সীমান্ত এলাকা থেকে রোহিঙ্গা অনুপওবেশ বন্ধ হয়ে আসবে। তারা আরো বলেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার অরক্ষিত সীমান্ত এলাকাকে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে সীমান্ত প্রহরী বিজিবি সদস্যদের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করলে এই এলাকা থেকে বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচারও প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

টেকনাফে ২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আবু জার আল জাহিদ জানান, টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় বিজিবি সদস্যরা তাদের জীবনের ঝুকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। তার পাশাপাশি বিগত কয়েক মাসের ব্যবধানে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা বোঝাই প্রায় অর্ধশতাধিক নৌকা আটকের পর স্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ ও সীমান্ত এলাকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি ভাল রাখতে আমাদের সদস্যরা সদা প্রস্তুত রয়েছে। তার পাশাপাশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে সহযোগীতাকারী দালালদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে, ইতোমধ্যে আমাদের সদস্যরা বেশ কয়েকজন দালালকে আটক করে আইনের আওয়াতায় নিয়ে এসেছে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

লামায় চাম্পাতলী বৌদ্ধ বিহার আগুনে পুড়ে গেছে https://coxview.com/fire-rafiq-16-4-24-1/

লামায় চাম্পাতলী বৌদ্ধ বিহার আগুনে পুড়ে গেছে

  মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম :পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা পৌরসভার চাম্পাতলী বৌদ্ধ বিহারের চেরাং ঘরে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/