(ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলা অবনতি)
হুমায়ুন কবির জুশান; উখিয়া :
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে প্রাণভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বদ্ধমূল ধারণা এখন আর ফিরতে হবে না মিয়ানমারে। এক বছর সাত মাস পেরিয়ে গেলেও প্রত্যাবাস প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফকেই এরা নিরাপদ মনে করছেন। তাই তারা অলস সময় পার না করে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে নিজেদের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে সাবলম্বি হওয়ার চেষ্টা করছেন।
অপরদিকে রোহিঙ্গাদের মধ্যে কিছু বিপদগামী তরুণ ক্যাম্পে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে এক অরাজকর অবস্থা সৃষ্টি করছে।তারা বিদেশি সাংবাদিক, বাংলাদেশ পুলিশসহ যে কাউকে হাত তুলতে দ্বিধা করছে না। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক রোহিঙ্গা অন্য রোহিঙ্গাকে গলা কেটে হত্যা করছে।দিন দিন তাদের বেপরোয়া কর্মকান্ডে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলা মারাত্মক অবনতির দিকে যাচ্ছে। এখনই তাদের লাগাম টেনে ধরতে না পারলে ফিলিস্তিনিদের মতো অবস্থা হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সুশীল সমাজ। ক্যাম্পের ভেতর একের পর এক সংঘাত খামতেই চাইছে না। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী অস্ত্রধারীদের হাতে নির্বিচারে একের পর এক খুন ও হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছেন রোহিঙ্গারাই। সাংবাদিক, পুলিশ ও স্থানীয়রা রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাও নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি সময়ে এসব ঘটনায় নতুন করে আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প। এই অশুভ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ চায় উখিয়া-টেকনাফের মানুষ।
শান্তিকামি রোহিঙ্গাদের মধ্যে মাওলানা ইসমাইল বলেন, রাখাইন রাজ্যের গ্রাম কোয়ে তান কাউক। এক সময় এখানে ছিল রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিবাস। এখন দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। গ্রামের প্রবেশপথে বাঁশের খুঁটিগুলোয় শোভা পাচ্ছে বৌদ্ধদের পতাকা। এখানে বসতি শুরু করেছে জাতিগত রাখাইনরা। রাখাইন রাজ্যের যেসব স্থান থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিতাড়িত করা হয়েছে, সেখানেই থিতু হচ্ছে বৌদ্ধ রাখাইনরা। রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করে গ্রামের পর গ্রাম মিশিয়ে দেয়া হয়েছে মাটির সঙ্গে। সবকিছু ফেলে যেদেশে আশ্রয় পেয়েছি সেদেশের আইন-কানুন মেনে চলা আমাদের প্রত্যেক রোহিঙ্গাদের উচিত। বাংলাদেশ আশ্রয় না দিলে কী করুণ অবস্থা আমাদের হতে পারতো তা স্বরণে রাথা দরকার।
রোহিঙ্গা তরুণ মোরশেদ আলম বলেন, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর আমরা ক্যাম্পে আশ্রয় গ্রহণ করেছি। প্রথম পর্যায়ে আমাদের করুণ অবস্থা ছিল। এখন আমাদের খাদ্যের কোনো অভাব নেই। মিলেমিশে থাকাটাই জীবনের জন্যে প্রয়োজন।
You must be logged in to post a comment.