অনলাইন ডেস্ক :
শর্তসাপেক্ষে বাংলাদেশি নাগরিকদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে মিশর।অন-অ্যারাইভাল (পোর্ট এন্ট্রি) ভিসা পেতে হলে শর্ত মেনে আবেদন করতে হবে। সম্প্রতি কায়রোয় বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সেদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
গত মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) মিসর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক সরকারি পরিপত্রে কায়রোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসকে একথা জানান। পরিপত্রে (নাম্বার ৭৭৩, ১৬ই আগস্ট ২০২২) বলা হয়, যে সকল বাংলাদেশী নাগরিকের পাসপোর্টে নিম্নলিখিত দেশগুলোর বায়োমেট্রিক রেসিডেন্স পারমিট (BRP), রেসিডেন্স কার্ড অথবা বৈধ ব্যবহৃত ভিসা আছে তারাই শুধু শর্ত সাপেক্ষে মিশরের যেকোন বিমানবন্দর থেকে অন-অ্যারাইভাল ভিসার সুবিধা পাবেন। দেশগুলো হল জাপান, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও শেনজেন চুক্তিভুক্ত ইউরোপীয় দেশসমূহ।
এ বিষয়ে মিসরে বাংলাদেশ দুতাবাসের রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কিছুদিন যাবত ঢাকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মিসরীয় দুতাবাসগুলো থেকে বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীদের ভিসা পাওয়ার কাজ জটিল মনে হচ্ছিল। বিশেষ করে মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে ভিসা প্রার্থীদের ভিসা পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতো। গত ২০ মার্চ ২০২২ বাংলাদেশী নাগরিকদের ভিসা সংক্রান্ত সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা করার জন্য মিসরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং পরে এশিয়া বিষয়ক সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করে ভিসা ব্যবস্থা শিথিল ও সহজীকরণ করার জন্য অনুরোধ করি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দিন আগে আবারও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে এশিয়া বিষয়ক সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করে বাংলাদেশীদের ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে আলোচনার পর মিসরীয় কর্তৃপক্ষ কিছু শর্ত সাপেক্ষে বাংলাদেশীদের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসা চালু করার কথা জানান।
তিনি বলেন, বর্তমান ব্যবস্থায় অনেক বাংলাদেশীকে মিসরে প্রবেশের অনুমতি দেবে, বিশেষ করে যারা কায়রো ট্রানজিট নিয়ে ইউরোপ ও আমেরিকা ভ্রমণ করতে চান তাদের জন্য সুবিধা বয়ে আনবে। উপরোক্ত দেশগুলোর ভিসা থাকলে পৃথিবীর যে কোনো দেশ ভ্রমণের সময় কায়রোকে ট্রানজিট করা যাবে, অর্থাৎ কায়রো তথা মিসর ভ্রমণ করা যাবে।
অন-অ্যারাইভাল ভিসা কী? এটা কীভাবে পাওয়া যায়?
অন-অ্যারাইভাল ভিসা হচ্ছে এমন কিছু দেশে পৌঁছে ভিসা নেয়া, যে সব দেশে যেতে কিছু দেশের নাগরিকদের দেশ থেকে রওয়ানা হওয়ার সময় ভিসার প্রয়োজন হয় না। অন-অ্যারাইভাল ভিসা মানে, যে দেশে যাবেন সে দেশের বন্দরে পৌঁছে ভিসা নিতে হবে। সাধারণত এটা আপনি এয়ারপোর্টেই পাবেন। এর সুবিধে হলো, সেক্ষেত্রে ভিসা আবেদন, কাগগপত্র জমা দেয়া, অপেক্ষা করা বা ইন্টারভিউর মতো ঝামেলা থাকে না।
আপনি ভিসা ছাড়াই এসব দেশে যাওয়ার জন্য বিমানের টিকেট নিতে পারবেন। তারপর সে দেশের বিমান বন্দরে গিয়ে ইমিগ্রেশন অফিসারের কাছ থেকে আপনি ভিসা আবেদন করে তাৎক্ষনিক ভিসা নিতে চাইবেন। আবার অনেক দেশের ইমিগ্রেশনে আবেদন ফরমও পূরণ করতে হয় না। মূলতঃ ইমিগ্রেশন অফিসারের কাছে পাসপোর্ট জমা দিলে ৫/৭ মিনিটের মধ্যে আপনি ভিসা পেয়ে যাবেন। হয়তো দু/একটি প্রশ্নের সম্মুখিন হতে পারেন। যেমন কেন এসছেন? কতদিন থাকবেন? এই টাইপ প্রশ্ন আর কী!
সাধারণত যেসব দেশ এ ধরনের সুযোগ দিয়ে থাকে তারা বড়ো ধরনের কোনো কারণ ছাড়া বিমানবন্দর থেকে পর্যটকদের ফিরিয়ে দেন না। ট্যুরিজমের উন্নয়নের জন্য অনেক দেশ এটা করে থাকে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশকেও মিসর এই সুবিধা দিল, এটাই সুখের বিষয়।
You must be logged in to post a comment.