সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / যে গ্রামে নিয়মিত মেয়েরা পুরুষে রূপান্তরিত হয়

যে গ্রামে নিয়মিত মেয়েরা পুরুষে রূপান্তরিত হয়

যে গ্রামে নিয়মিত মেয়েরা পুরুষে রূপান্তরিত হয়

১২ বছর আগের নাম ফেলিশিয়া। এখন জনি। কেবল নাম নয়, পরিবর্তন ঘটেছে তার লিঙ্গেরও। মেয়ে থেকে এখন হয়েছেন ছেলে! ডমিনিক প্রজাতন্ত্রের গ্রামবাসীরাও বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য! শুধু জনির ক্ষেত্রে নয়, ১২ বছর বয়সে এসে এমন রূপান্তর ঘটছে অনেকেরই। চিকিত্সকরাও বলছেন, এমন পরিবর্তন হওয়া সম্ভব।

ডমিনিক প্রজাতন্ত্রের সালিনাস গ্রামে অনেক মেয়েই ১২ বছর বয়সে ছেলে হয়ে যাচ্ছে। আর এটা সেখানে এতো বেশি ঘটছে যে, ঘটনাটি এখন গ্রামবাসীর স্বাভাবিক একটি বিষয়। তারা এই রূপান্তরকে স্বাগতও জানিয়েছে। সালিনাস গ্রামের এই ঘটনা সর্বপ্রথম আবিস্কার করেন কর্নিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এনডক্রিনলজিস্ট ড. জুলিয়ান ইমপারেতো। ১৭০ সালে তিনি গুজব শুনে গ্রামটিতে যান। পরে এই বিষয়টি তার নজরে আসে। এরপর পাপুয়া নিউ গিনিরে সাম্বিয়ান গ্রামগুলোতেও এমন ঘটনা দেখা গেছে।

সালিনাস গ্রামের জনি শারীরিকভাবে এখন সম্পূর্ণই ছেলে, যার ১২ বছর আগের নাম ছিল ফেলিশিয়া। তবে জন্মের পর থকে তাকে তার পরিবার মেয়ে হিসেবেই বড় করে তোলে। বয়ঃসন্ধির সময় তার লিঙ্গের আবির্ভাব ঘটে। কেবল জনিই নয়, তার মতো অনেকেরই এমন পরিবর্তন ঘটেছে। জন্মের সময় মেয়ে থাকলেও বয়ঃসন্ধির সময় ওই মেয়েটিই ছেলে হযে গেছে। এসকল শিশুদের বিশেষ নামও রয়েছে। তাদেরকে বলা হয় ‘গুয়েভেডোসেস (guevedoces) ‘ এর অর্থ ‘১২ বছরে লিঙ্গ’।

যে গ্রামে নিয়মিত মেয়েরা পুরুষে রূপান্তরিত হয়

ফেলিশিয়া থেকে পরিবর্তিন হওয়া জনি বলেন, ‘আমার মনে আছে আমি লাল জামা পড়ে থাকতাম। আমি হাসপাতালে নয়, বাড়িতেই জন্ম নেই। তাই আমার পরিবার বুঝতে পারেনি যে আমি ছেলে না মেয়ে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি স্কার্ট পড়েই স্কুলে যেতাম। মেয়েদের মতো জামা পড়তে আমি কখনোই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতাম না। মেয়েদের সঙ্গে খেলতেও আমার ভালো লাগতো না। আমি সবসময় ছেলেদের সঙ্গে খেলতে চাইতাম।’

ড. ইমপারতো তাদের নিয়ে অনুসন্ধান করে পেছনের কারণ খুজে বের করেন। তিনি জানান, মানব শরীরের একটি এনজাইমের অভাবের কারণে জেনেটিক পরিবর্তন ঘটে। মাতৃগর্ভেই এই এনজাইমের কারণে ছেলে-মেয়ে নির্ধারিত হয়। মাতৃগর্ভে ছেলে হোক বা মেয়ে উভয়েরই গোনাডস নামে একটি হরমোন থাকে, যা দুই পায়ের মাঝে একটি মাংসপিণ্ড সৃষ্টি করে। আট সপ্তাহের মাথায় ছেলে শিশু যার মাঝে ওয়াই (Y) ক্রোমোসোম থাকে, তাদের ওই মাংসপিণ্ড পুরুষাঙ্গ সৃষ্টি করে। আর এক্স (X) ক্রোমোসোম থাকলে মেয়েদের ক্ষেত্রে তা যোনিতে পরিণত হয়।

কিন্তু কিছু ছেলে শিশু এই এনজাইমের অভাবের কারণে মেয়ে হয়েই জন্মায়, তাদের তখন কোনো পুরুষাঙ্গ থাকে না। কিন্তু বয়ঃসন্ধির সময় এই হরমোনে পরিবর্তন আসলে এই যৌনাঙ্গ তৈরি হয়ে যায় বলে জানান তিনি। ড. জুলিয়ান ইমপারেতো আরো বলেন, মাতৃগর্ভেই যেটা হওয়ার কথা ছিলো সেটা ১২ বছর পরে ঘটে। এ সময় তাদের কণ্ঠ ভারী হয়ে যায় এবং পুরুষাঙ্গও চলে আসে।

সাত বছর বয়সেও কারো এই পরিবর্তন আসতে পারে। কার্লা নামের একটি মেয়ে বর্তমানে এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। নয় বছর বয়সী কার্লা ছোটো থেকে মেয়ের মতোই বড় হয়েছে।

তবে ৭ বছর বয়সে তার মা তার মাঝে ছেলেদের মতো স্বভাব লক্ষ্য করেন। কার্লাও চুল ছোটো করে ফেলে এবং শার্ট পড়তে শুরু করে। নিজেকে সে এখন পুরুষই মনে করে বলে জানায়।

কেবল তাই নয়, অনেকেই আবার নিজেদের মেয়েলি নাম পাল্টাতে চান না। তাই গ্রামটির কিছু পুরুষের নাম এখনো ক্যাথরিন। গুয়েভোডোসেসদের অনেকসময় ‘মাচিহেমব্রাস’বলা হয়। যার অর্থ ‘প্রথমে নারী, পরে পুরুষ’।

সালিমাসের ৯০জন শিশু এখন পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়েছে। তাদের সবারই স্বাভাবিক পুরুষদের চেয়ে কম দাড়ি এবং প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড রয়েছে। দীর্ঘদিন গ্রামবাসীদের মাঝে এই অবস্থা চলে আসছে। কয়েক প্রজন্ম ধরে এই অবস্থা থাকায় গ্রামবাসী বিশ্বাস করে যে, লিঙ্গ তিন ধরনের নারী, পুরুষ ও সিউডোহার্মাফ্রোডাইট।

প্রিয়ডটকম,ডেস্ক।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2023/01/BGB-Rafiq-24-1-23.jpeg

বিপুল পরিমাণ পপিক্ষেত ধ্বংস করল বিজিবি

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম : পার্বত্য জেলা বান্দরবানে থানচি উপজেলা গহীণ অরণ্যে মাদক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/