মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা :
চাষের জমি জবরদখলে বাধা দেয়ায় ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীকে অমানবিকভাবে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বাম হাতির ছড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মারধরের পর থেকে আটদিন ধরে আহত অন্তঃসত্ত্বা নারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকে এবং চারদিন পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে অপরিপক্ক মৃত সন্তান প্রসব করে। এই ঘটনায় স্থানীয়ভাবে বিচার না পেয়ে ভিকটিমের স্বামী জিয়াবুল করিম (৩৭) বাদী হয়ে লামা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৮ জনের নাম উল্লেখ ও ৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে লামা থানাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়।
এমন নৃশংস ঘটনার ২১ দিন পেরিয়ে গেলেও অসহায় ভিকটিমের পরিবার কোন আইনী সহায়তা পায়নি বলে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। তারা আরো বলেন, গুরুতর আহত ভিকটিম মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে আর হামলাকারীরা এলাকায় বুক ফুরিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভিকটিম রেশমী আক্তার উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বাম হাতির ছড়া এলাকার জিয়াবুল করিমের স্ত্রী।
মামলার সূত্রে জানা যায়, বাদী জিয়াবুল করিম উপজেলার ২৮৬নং ফাঁসিয়াখালী মৌজার ২৩০ খতিয়ানের ১৫২০, ১৫২২ দাগের আন্দর ২০ শতক ১ম শ্রেণীর জমির ক্রয়সূত্রে মালিক এবং দীর্ঘদিন ধরে মৌসুমী ধান, শস্য রোপন করে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখলে রয়েছে। মামলার আসামীরা লোভের বশবর্তী হয়ে বাদীর একখন্ড জায়গা ২০২১ সালের ১৮ ডিসেম্বর শনিবার জবর দখল করতে গেলে জিয়াবুল করিমের স্ত্রী রেশমী আক্তার বাধা দেয়। এসময় আসামী আবু তাহের, নুরুল কবির, মোঃ আরিফ, আবু তালেব, শাহজাহান, মিজান, নুরুল বশীর, নুরুল আবছার সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৫ জন ক্ষিপ্ত হয়ে অন্তঃসত্ত্বা জেনেও রেশমী আক্তারকে মারধর করে। আহত রেশমী আক্তারকে ১৮ ডিসেম্বর দুপুর ২টায় লামা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে ও ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চিকিৎসা নেয়। অবস্থার অবনতি হলে ২২ ডিসেম্বর কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তিনি সেখানে অপরিপক্ক মৃত সন্তান প্রসব করে ২৫ ডিসেম্বর বাড়ি ফিরে আসে। পরে ২৭ ডিসেম্বর লামা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করে।
বাদী জিয়াবুল করিম বলেন, আসামীরা আমাদের মারধর, গুম করা সহ জানে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। তাদের অত্যাচারে এলাকায় বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে।
এই বিষয়ে কথা হয় মামলার ৬নং আসামী মিজান এর সাথে। তিনি বলেন, এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। জিয়াবুল ও তার স্ত্রী নিজেরা বাচ্চা নষ্ট করে আমাদের আইনীভাবে হয়রাণী করতে এমন মিথ্যা ঘটনার জন্ম দিয়েছে। ডাক্তারি রিপোর্ট আসলে বিষয়টি জানা যাবে।
এই বিষয়ে কথা হয় মামলার তদন্তকারী অফিসার লামা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শিবেন বিশ্বাস এর সাথে। তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
You must be logged in to post a comment.