সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / নির্বাচন সংক্রান্ত / লামায় ৭ ইউপি নির্বাচনে কেন্দ্রে ফলাফল না দেয়ায় সহিংসতা ও গোলাগুলি

লামায় ৭ ইউপি নির্বাচনে কেন্দ্রে ফলাফল না দেয়ায় সহিংসতা ও গোলাগুলি

https://i0.wp.com/coxview.com/wp-content/uploads/2021/11/Election-Rafiq-12.11.2021-3_copy_1292x729.jpg?resize=620%2C350&ssl=1

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা :
পার্বত‍্য জেলা বান্দরবানের লামা উপজলার ৭টি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৬৪টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার রাতে লামা উপজেলা নির্বাচন অফিসার আলমগীর হোসাইন কর্তৃক নির্বাচনী ফলাফল সংগ্রহ ঘোষণা কেন্দ্রের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, ১নং গজালিয়া ইউনিয়নে ৪৭৪৬ ভোট পেয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বাথায়াইচিং মার্মা, ২নং লামা সদর ইউনিয়নে ২৬৮১ ভোট পেয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মিন্টু কুমার সেন, ৩নং ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে ৬০৪২ ভোট পেয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাং নুরুল হোসাইন, ৪নং আজিজনগর ইউনিয়নে ৩৭১১ ভোট পেয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোঃ জসিম উদ্দিন, ৫নং সরই ইউনিয়নে ৪৪৬১ ভোট পেয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ ইদ্রিছ, ৬নং রূপসীপাড়া ইউনিয়নে ৩৪৫৩ ভোট পেয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছাচিং প্রু মার্মা এবং ৭নং ফাইতং ইউনিয়নে ৩৩২৫ ভোট পেয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ ওমর ফারুক বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন।

https://i0.wp.com/coxview.com/wp-content/uploads/2021/11/Election-Rafiq-12.11.2021-2_copy_2160x1440.jpg?resize=620%2C413&ssl=1

ভোট কেন্দ্রে আগত ভাটাররা।

আইন শৃংখলা বাহিনী ও প্রার্থীদের দেয়া তথ্য মতে ভোট গ্রহণের পরে কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা না করাকে কেন্দ্র করে ৭টি ভোট কেন্দ্রে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা, সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি সহ নির্বাচনের কাজে ব্যবহৃত ৪টি গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। সহিংসতা ঘটনায় কমপক্ষে ১৩ জন আহত হয়েছে বলে জানা যায়। আহতদের লামা আলিঙ্গন হাসপাতাল ও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।

৭টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে লামা সদর ইউনিয়নে। স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা ৬টার পর লামা সদর ইউনিয়নে ৩নং ওয়ার্ড ভোট কেন্দ্রে মরাখালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট গণনা ও কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা না করার বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা কেন্দ্র অবরোধ করে। আইন শৃংখলা বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেল চেষ্টা করলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা আইন শৃংখলা বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। পরে পুলিশ রাবার বুলেট ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। প্রায় ২ ঘন্টা ধরে থেমে থেমে দু’পক্ষের মাঝে গুলি বিনিময় হয়। এসময় সেনাবাহিনী, র‍্যাব ও বিজিবির কয়েকটি টিম কেন্দ্রের চারপাশে সতর্ক অবস্থান নেয়।

সদর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী মোরাং ত্রিপুরা, সমুদ্র ত্রিপুরা সহ অনেকে জানান, সদর ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ড এম. হাসন পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা না করায় মহিলা মেম্বার ও মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকরা তিন কেন্দ্রের নির্বাচনী কাজের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। আন্দোলনকারীরা চলাচল রাস্তা খুঁড়ে ফেলে। যার কারণে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে সড়ক মেরামত করে তাদের উদ্ধার করে আনে। এসময় হামলাকারীদের ছোঁড়া ইট, পাথর ও গাছের আঘাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি সহ নির্বাচন কাজের ব্যবহৃত আরো ২টি জীপ গাড়ি ভাংচুর করা হয়।

এদিকে কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা না করার ইস্যুকে কেন্দ্রে করে রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড দরদরী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র অবরোধ করে মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকরা। পরে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে কেন্দ্রে দায়িত্বরত প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং সহ সকলকে উদ্ধার করে। এসময় আইন শৃংখলা বাহিনীর লাঠিচার্জে ৭/৮ জন আন্দোলনকারী আহত হয়।

অপরদিকে ৫নং সরই ইউনিয়নের ৮ ও ৯নং ওয়ার্ড কেন্দ্রেও ফলাফল ঘোষণা না করার ইস্যুকে কেন্দ্র করে অবরুদ্ধ করে রাখে মেম্বার প্রার্থীর লোকজন। পরে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে কেন্দ্রে দায়িত্বরত প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং সহ সকলকে উদ্ধার করে। এসময় আইন শৃংখলা বাহিনীর সাথে আন্দোলনকারীদর গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে।

জালভোট, ভোট কারচুপি, কেন্দ্র দখল, কেন্দ্র থেকে প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেয়া এবং প্রার্থীকে মারধরের প্রতিবাদে ইউপি নির্বাচন বর্জন ও বয়কট করেন সরই ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ আবু হানিফ।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৩০ মিনিট লামা রিপার্টার্স ক্লাবের হলরুমে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেয় প্রার্থী।

গজালিয়া ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ড মহিলা মেম্বার পদপ্রার্থী শিরিন আক্তার জানান, আমি তিন কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারের দেয়া ফলাফল মতে মোট ৫২৪ ভোট পেয়েছি। আমার নিকটতম প্রার্থী আচিং মার্মা ৫১১ ভোট পায়। আমাকে কেন্দ্রে থেকে ফলাফলের কাগজ দেয়া হয়। কিন্তু কেন্দ্র থেকে ফলাফল উপজেলা নির্বাচন অফিসে গেল রাতে তারা ফলাফলে ঘষামাঝা করে আমাদের দুইজনকে ড্র ঘোষণা করে। এতবড় অনিয়ম মানা যায়না। আমি প্রয়োজনে আইনী লড়াইয়ে যাবো।

লামা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলমগীর হোসাইন জানান, নির্বাচনের কোন বিষয়ে কারো অভিযোগ থাকলে তাকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর অভিযোগ করতে পরামর্শ দেন। লামা ইউপি নির্বাচনে আইন শৃংখলার দায়িত্বে থাকা বান্দরবান জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল বলেন, যারা সহিংসতা করেছে তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

লামায় চাম্পাতলী বৌদ্ধ বিহার আগুনে পুড়ে গেছে https://coxview.com/fire-rafiq-16-4-24-1/

লামায় চাম্পাতলী বৌদ্ধ বিহার আগুনে পুড়ে গেছে

  মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম :পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা পৌরসভার চাম্পাতলী বৌদ্ধ বিহারের চেরাং ঘরে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/