সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / কলাম / ‘‘শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ স্বপ্ন নয়, বাস্তবে রূপ নিচ্ছে’’

‘‘শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ স্বপ্ন নয়, বাস্তবে রূপ নিচ্ছে’’

Fhakrul Islam Gundu (20-05-2000)

-: এডভোকেট ফখরুল ইসলাম গুন্দু :-

শুধু কক্সবাজারের মানুষই নয়, গোটা দেশের দেশ প্রেমিক, সচেতন মানুষ এখন চেয়ে আছে ২০২৩ সালে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার কেমন হবে? পৃথিবীর মানচিত্রে আমাদের সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার বড়ই গর্বের। তথাপি আমরা স্বাধীনতার এত বছরের মধ্যে এই সৈকতকে কোন কাজেই লাগাতে পারিনি। বিগত সরকার গুলো শুধুই মিটিং-সিটিং আর কালক্ষেপণ করে কক্সবাজারবাসী, তথা দেশবাসীর নাকের সামনে একটি মুলো ঝুলিয়ে রেখেছিল। আমরা যারা সচেতন নাগরিক তারা মর্মে মর্মে অনুধাবন করছি, যে দেশে এমন একটি দীর্ঘতম চমত্কার সৈকত আছে, সে দেশে শুধুমাত্র এই সৈকতটাকে কাজে লাগিয়ে দেশের মানুষের ভাগ্য বদলাতে পারি। অথচ আমরা তা করিনি, আমরা অনেক অপ্রয়োজনীয় বিষয়কে প্রধান্য দিয়ে কালক্ষেপণ করেছি।

তবে আজ আমরা আলো দেখতে পাচ্ছি, স্বপ্ন এখন থেকে বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। ২০২৩ সালকে টার্গেট করে সরকার কক্সবাজারকে নিয়ে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এই পরিকল্পনার আংশিক বাস্তবায়ন হলেও পর্যটন নগরী কক্সবাজারের চিত্রের আমূল পরিবর্তন হয়ে যাবে। আর যদি আল্লাহর রহমতে সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়, তা হলে পৃথিবীর কাছে শুধু কক্সবাজারই নয়, গোটা বাংলাদেশ হয়ে যাবে ভ্রমণের নতুন ঠিকানা। পরিবেশ এবং আবহাওয়া মিলিয়ে সমগ্র পৃথিবীর ভ্রমণ পিপাসুরা বাংলাদেশ ভ্রমণ করতে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।

পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারকে নিয়ে শেখ হাসিনার সরকার যে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন এর মধ্যে রয়েছে আধুনিক রেলপথ ও আন্তর্জাতিকমানের বিমানবন্দরসহ ছয়টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার প্রকল্প। এছাড়া মহেশখালীর মাতারবাড়িতে নির্মিত হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় তাপবিদ্যুত্ প্রকল্প।

টেকনাফের সাবরাংয়ে বিশাল এলাকা নিয়ে গড়ে উঠছে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। একই সাথে এই এলাকার জালিয়ার দ্বীপে থাকবে আরও একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল এতে করে টেকনাফ স্থল বন্দরের সন্নিকটে নাফ নদীর বুকে ভেসে ওঠা জালিয়ার দ্বীপ ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে হবে এক মনকাড়া আকর্ষণীয় স্থান।

মহেশখালীতে বিশেষ তিনটি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও একটি ফ্রি ট্রেড জোনের যে প্রকল্প গড়ে উঠছে, এতে কমপক্ষে ৫০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান ঘটবে।

আমরা আশা করছি বর্তমান সরকার শুধুমাত্র কক্সবাজারে যে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে তাতে আর দরিদ্র মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগর পথে বিদেশে পাড়ি জমাবেন না। কক্সবাজারের মানুষ কক্সবাজারেই সম্মানের সাথে জীবন যাপন করতে পারবেন। সরকারের এ সব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কক্সবাজার ছাড়াও দেশ-বিদেশের মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এটি হবে এশিয়ার আরেকটি নতুন মালয়েশিয়া।

ইতোমধ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তরের জন্য প্রাথমিক কাজ শুরু করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়। এ প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলবে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কক্সবাজারের রেল প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে। পর্যটকদের আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য যা যা করণীয় তা তিনি করবেন বলে জানা গেছে। রাজধানী ঢাকা থেকে সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের কলাতলী পর্যন্ত পর্যটকদের আসতে কোনো প্রকার ঝক্কি ঝামেলা যাতে না পোহাতে হয়, সেজন্য সকল প্রকার দৃষ্টি রেখেই এ প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে। স্বাচ্ছন্দ্যে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য একটু সুখের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগর পাড়ি দিচ্ছে কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ। আমরা আশা করছি আগামিতে বাঙলার মানুষ আর এই ঝুঁকি নেবেন না, ঝুুঁকি নেয়ার প্রয়োজন হবে না। শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। আর বেশি দিন লাগবে না। আমরাও মাথা উচুঁ করে দাড়াঁতে পারবো।

শুধুমাত্র পর্যটন নগরী কক্সবাজার নয় সমগ্র বাংলাদেশকে নিয়েই মহাপরিকল্পনা করেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গভীর সমুদ্র বন্দর, পারমাণবিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র, পাঁচটি অর্থনৈতিক জোন, পদ্মা সেতু, ঢাকা- চট্টগ্রামের ফ্লাইওভার, ফোরলেন, মেট্টোরেল, কর্নফুলী নদীতে টানেল, আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ইত্যাদি। এগুলো শুধু স্বপ্ন নয় বাস্তবে কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। তিনি ২০১৯ সালের মধ্যেই বাস্তবায়ন করতে চান পদ্মা সেতু, পারমাণবিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, কর্ণফুলীতে টানেল, ঢাকা-চট্টগ্রামের নতুন ফ্লাইওভার, ঢাকার সাথে সমগ্র দেশের সহজ সংযোগ। উড়ালসড়ক, পর্যটন নগরী কক্সবাজারের আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, অর্থনৈতিক জোন, গভীর সমুদ্র বন্দর সহ নানামুখী উন্নয়ন।

অবহেলিত অথচ সম্ভাবনাময় অনেক সম্পদের দিকে বর্তমান সরকরের দৃষ্টি রয়েছে। কিভাবে এ সব সম্পদকে কাজে লাগানো যায়, সে দিকেও দৃষ্টি রাখছেন সরকার প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর মাষ্টারপ্ল্যানে আরো একটি উল্লে­খযোগ্য স্থান দখল করে আছে, সমুদ্রভিত্তিক ব্লু-ইকোনমি। সাগরে বিশাল জলসীমায় থাকা বিপুল পরিমাণ সমুদ্র সম্পদের ব্যবহার কি করে করা যায় তা নিয়েও তিনি চিন্তা করছেন। শুধু চিন্তা নয় প্ল্যানও করেছেন। দেশের মানুষ এখন তথ্য প্রযুক্তি সেবা পাচ্ছেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের ইউনিয়ন পর্যায়েও পৌছতে শুরু করেছে তথ্য প্রযুক্তি সেবা। শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়। বাস্তবেই এর সুফল আমরা ভোগ করতে শুরু করেছি।

মহাপরিকল্পনার বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। আশা রাখছি আল্লাহ সহায় থাকলে আগামি ২০১৭-২০১৯ এবং ২০২৩ সালের মধ্যে অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবে। বাংলার মানুষ এ সব প্রকল্পের সুফল ভোগ করবেন।

তাই আমি বলবো, শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্নের নয়, বাস্তবেই এর সুফল আমরা পেতে শুরু করেছি।

লেখক: আইনজীবী, রাজনীতিক, গ্রন্থকার, গবেষক ও মুক্তসাংবাদিক।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

দ্রুত ও স্থায়ী অবসান হোক রোহিঙ্গা সমস্যার

-: তাওহীদুল ইসলাম নূরী :- ২৫ আগষ্ট ২০১৯, রোহিঙ্গা সমস্যার দুই বছর পূর্তি হল। একে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/