সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / হাসপাতাল নিজেই রোগী! সেবা দেওয়ার কেউ নেই

হাসপাতাল নিজেই রোগী! সেবা দেওয়ার কেউ নেই

হাসপাতাল নিজেই রোগী! সেবা দেওয়ার কেউ নেই

হাসপাতাল নিজেই রোগী! সেবা দেওয়ার কেউ নেই

শহীদুল ইসলাম কাজল; মহেশখালী :

গরীবের হাসপাতাল নামেখ্যাত মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র নিজেই রোগী হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা। বিগত কয়েক বছর থেকে পাহাড়ী ঢলের স্রোতে সীমানা প্রাচীর ভেঙে হাসপাতালের ভিতরে বর্ষাকালে প্লাবিত হয়ে ঔষধপত্র নষ্ট হলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। এছাড়া দীর্ঘদিন পর গ্রামের অবহেলিত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য একজন এমবিবিএস ডাক্তার নিয়োগ দিলেও চোখে পড়েনি রোগীদের। ফলে তৃণমূল পর্যায়ে গ্রামের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত কল্পে সরকারী উদ্যোগ আলোর মূখ দেখছেনা বলে জানান সচেতন মহল।

সরজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, পার্শ্ববর্তী ছড়ার বালি এসে ভরাট হওয়ায় বিগত পাঁচ বছর থেকে বর্ষাকালে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র পানিতে প্লাবিত হওয়ায় ওই সময় স্বাস্থ্য সেবা মোটামোটি বন্ধ থাকে বললেই চলে। এ সুযোগে উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার ডাঃ আব্দু ছালাম বরাদ্দ পাওয়া ঔষধ বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ করেন একাধিক ব্যক্তি। দীর্ঘ ১৯৯০ সাল থেকে ডাঃ আব্দু ছালাম কর্মরত থাকায় হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়ম ভর করে বসেছে বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের হলেও কার্যথ মাথাব্যাথা নেই কর্তৃপক্ষের। তেমন নজরদারী না থাকায় এরই মাঝে অফিস টাইমে প্রাইভেট রোগী দেখেন বলে অভিযোগ করেন হাসপাতালে সেবা নিতে আসা অনেকেই। ফলে স্বাস্থ্য সেবায় উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছেন হোয়ানক ইউনিয়নের হাজার হাজার স্বাস্থ্যসেবা প্রত্যাশি অসহায় গরীব দুঃখি পরিবার। এছাড়া বাউন্ডারী ওয়াল না থাকায় পার্শ্ববর্তী জমির মালিকেরা দিনের পর দিন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের জায়গা জবর দখল করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এভাবে চলকে থাকলে ক্রমেই বেহাত হয়ে যাবে সরকারী এ প্রতিষ্ঠানের জায়গা।

এলাকাবাসির অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ প্রতিবেদক সরজমিনে উপস্থিত হয়ে পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের বেহাল অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে কর্মরত উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার ডাঃ আব্দু ছালাম জানান, তিনি ১৯৯০ সাল থেকে কর্মরত আছেন। এছাড়া বর্তমানে একজন মেডিকেল অফিসার আছেন কিন্তু ছুটিতে থাকায় তার পক্ষে সবধিক সামাল দেওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিগত কয়েক বছর থেকে বর্ষাকালে পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের ভিতরে পাহাড়ী ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়ে ঔষধপত্র নষ্ট হওয়ার বিষয়টি তিনি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন।

সংরক্ষিত ফাইল পত্রে দেখা যায়, ২০১৩ সালে একজন পরিদর্শক পরিদর্শনে এসেছিলেন। তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও চারপাশের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু এর পর বেশ কটি বছর অতিবাহিত হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় পরিদর্শন নয় এ যেন কর্তৃপক্ষের দায় এড়ানোর কাজের অংশ মাত্র এমনই মনে করেন সচেতন মহল। ফলে অপরিপূর্ণ থেকেই যাচ্ছেন গ্রামাঞ্চলের জনগণের মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্যসেবা। সরকার কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার নিয়োগের পর দীর্ঘদিন অনুপস্থিতি বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ সুচিন্ত চৌধুরী জানান, হোয়ানক ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার আগামী ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন।

তিনি আরো জানন, গ্রামাঞ্চলে ডাক্তার নিয়োগ দিলেও যোগদানের পর নানা কৌশলে বদলী কিংবা প্রেষণে অন্যত্র চলে যায়। ফলে ডাক্তার এবং প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে গ্রামাঞ্চলের সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছেনা। এছাড়া বর্ষাকালে সীমানা প্রাচীর ভেঙে ঢলের পানিতে পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র প্লাবিত হয়ে ঔষধপত্র নষ্ট হওয়ার বিষয়সহ সীমা প্রাচীর নির্মাণ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ নিয়োগ প্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার শুরু থেকেই অনুপস্থিত। তাই গ্রামের অবহেলিত জনগোষ্ঠির স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকল্পে নিয়মিত একজন মেডিকেল অফিসার সময়ের দাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবধিক বিবেচনায় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভেবে দেখবেন এটাই সকলের প্রত্যাশা।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2023/01/BGB-Rafiq-24-1-23.jpeg

বিপুল পরিমাণ পপিক্ষেত ধ্বংস করল বিজিবি

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম : পার্বত্য জেলা বান্দরবানে থানচি উপজেলা গহীণ অরণ্যে মাদক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/