হুমায়ুন কবরি জুশান,উখয়িা
উখিয়ায় ভারী বর্ষণে আমন চাষাবাদ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শত শত একর আমন বীজতলা প্লাবিত হয়ে পড়ার কারণে কৃষকেরা চারা উত্তোলন করতে পারছে না। এমতাবস্থায়, আমন চাষাবাদের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরও জমিতে চারা রোপন করতে না পারায় কৃষকেরা হতাশ হয়ে পড়েছে। কৃষকদের অভিযোগ, আমন বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার কারণে চারা পঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুপাতে পর্যাপ্ত সার ও কীটনাশক ঔষুধের মজুদ রাখা হয়েছে। আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ফলন উৎপাদনের জন্য মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শংকর কুমার মজুমদার জানান, কোন প্রকার বড় ধরনের প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা আমন উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে এ উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের দোছড়ী, হাজিরপাড়া, নলবনিয়া, মাছকারিয়া, মধুরছড়া, পালংখালী ইউনিয়নের আঞ্জুমানপাড়া, ফারিরবিল, ধামনখালী, রত্নাপালং ইউনিয়নের ডেইলপাড়া, হলদিয়াপালং ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া, রুমখাপাড়া, কামারিয়ার বিল, জালিয়াপালং ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ উপকূলীয় এলাকার শত শত একর কৃষি জমি প্লাবিত হয়ে পড়েছে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে ফসলী জমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। যে কারণে নির্ধারিত সময়ে আমন চাষাবাদ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। মধুরছড়া গ্রামের কৃষক আনোয়ার ইসলাম, আলীমুদ্দিন সহ একাধিক লোকজন জানান, আমন বীজতলা জলমগ্ন হয়ে পড়ার কারণে চারা উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে চারা রোপনের জন্য জমি প্রস্তুত থাকা স্বত্ত্বেও চারা রোপন করা যাচ্ছে না। মধুরছড়া গ্রামের কৃষক আলী আহমদ ও ছুরুত আলম জানান, পাহাড়ী ঢল ও বৃষ্টির পানিতে শত শত একর জমি প্লাবিত হয়ে পড়েছে। যে কারণে এখন আমন চাষাবাদ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না।
স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন পরিকল্পিত উখিয়া চাইয়ের আহবায়ক নুর মোহাম্মদ সিকদার অভিযোগ করে জানান, এখানকার সবকটি খাল জবর দখলের আওতায় চলে গেছে। খাল থেকে নির্বিচারে বালি উত্তোলন সহ খাল দখল করে নানা প্রকার ব্যক্তিমালিকানাধীন স্থাপনা গড়ে তোলার কারণে বৃষ্টির পানি বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ফসলী জমি প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পালংখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এম.এ মনজুর জানান, পালংখালীর খালগুলো দখল হয়ে যাওয়ার কারণে প্রতি বর্ষা মৌসুমে হাজার হাজার একর আমন চাষাবাদ বিনষ্ট হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হলেও কোন কাজ হয়নি। উপরুন্ত জবর দখলকারী চক্র বহাল তবিয়তে ঘর বাড়ি সহ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে।
You must log in to post a comment.