কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে বছরের পর বছর পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে উৎপাদিত মরণনেশা ইয়াবা বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় পাচার হয়ে আসছে। পাচার হয়ে আসা ইয়াবাগুলো নিত্যনতুন কৌশলে চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পৌছে দিচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এমনকি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বড় বড় ট্রলার যোগে লক্ষ লক্ষ পিচ ইয়াবা মিয়ানমারের সীমান্ত হয়ে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে।
এদিকে ইয়াবা পাচারে ব্যবহৃত হচ্ছে ১০-১২ বছরের শিশু ও কিশোররাও। ১ জুলাই থেকে এই পর্যন্ত ৪২ বিজিবি সদস্যরা ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার ইয়াবা আটক করেছে। এতে মামলা হয়েছে ১৭টি, ইয়াবা নিয়ে শিশুসহ আটক হয়েছেন ১৩ জন। এর মধ্যে মালিকবিহীন ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৬’শ৪০ পিচ। প্রশাসন যতই কঠোর হচ্ছে ততই বাড়ছে দিনের পরদিন এই ব্যবসা। ইদানিং এই মরণনেশা ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েছে পুলিশ প্রশাসনের চিহ্নিত কিছু অসাধু কর্মকর্তা। এতে প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে যুব সমাজ, বাড়ছে খুনসহ বিভিন্ন রকমের অপরাধ। ইয়াবা সেবনকারীর সংখ্যাও দিন দিন বেড়েই চলছে। ইয়াবা আসক্তের কারণে অনেক পরিবার হয়ে যাচ্ছে ধ্বংস। ইয়াবা সেবনে যুবকদের পাশাপাশি যুবতীরাও এখন পিছিয়ে নেই। এই ব্যবসা করে অনেকেই রাতারাতি কোটিপতি, জায়গা জমিও গাড়ি-বাড়ীর মালিক। এর মধ্যে অনেকেই বানিয়েছেন অট্টালিকা বাড়ী। কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে এই ব্যবসার সাথে যারা জড়িত হচ্ছে তাদেরকে চিহ্নিত করার জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দফতর থেকে কিছু তালিকা তৈরি করা হয়। এর মধ্যে দেখা যায়, তালিকা হয়ে পত্র-পত্রিকায় যাদের নাম প্রকাশিত হচ্ছে ঐসমস্ত তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায় এমন কিছু ব্যক্তির নাম রয়েছে যারা কোন সময় ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল না। আবার কিছু ব্যক্তির নাম রয়েছে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন। এসমস্ত তালিকার কারণে অনেকেই হয়েছেন ঘর-বাড়ি ও এলাকা ছাড়া। অনেকই ইয়াবা ব্যবসা না করেও বসবাস করছেন আতংকে। সব মিলিয়ে টেকনাফ উপজেলা এখন আতংকের শহরে পরিণত হয়েছে।
এই ব্যাপারে টেকনাফ ৪২ ব্যাটলিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আবু জার আল জাহিদ জানান, ইয়াবা পাচারকারীরা যতই কৌশল অবলম্বন করুক না কেন তা প্রতিরোধে বিজিবি সদস্যরা সদা তৎপর রয়েছে।
You must be logged in to post a comment.