সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / ধর্মীয় / রোজার গুরুত্ব ও তৎপর্য

রোজার গুরুত্ব ও তৎপর্য

অনলাইন ডেস্ক :

শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। এর সঙ্গেই জড়িয়ে আছে ইসলামের চতুর্থ স্তম্ভ রোজা। রোজা মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাআলার সান্নিধ্য লাভের অন্যতম মাধ্যম। আদি কাল থেকেই রোযা মানুষের আত্মসুদ্ধির পথ হিসেবে প্রচলন আছে। আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য সারা বছরে শুধু রমজান মাসেই রোজা ফরজ করেছেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই দশগুণ থেকে সাতশত গুণ বৃদ্ধি করা হয়। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, কিন্তু রোজা ছাড়া। কেননা তা আমার জন্য, তাই আমি এর প্রতিদান দেবো। সে আমার সন্তুষ্টির জন্য কামাচার ও পানাহার পরিত্যাগ করে।

আল্লাহ তাআলা বলেছেন- إِنَّمَا يُوَفَّى ٱلصَّٰبِرُونَ أَجۡرَهُم بِغَيۡرِ حِسَابٖ

‘কেবল ধৈর্যশীলদেরকেই তাদের প্রতিদান পূর্ণরূপে দেওয়া হবে, কোনো হিসাব ছাড়াই।’ (সুরা যুমার: আয়াত ১০)

মহান আল্লাহ তাআলার বাণী- “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের মত তোমাদের উপরও রোযা ফরজ করা হয়েছে, যাতে তোমরা তাকওয়ার অধিকারী হতে পার।” (সুরা বাকারা-১৮৩)

হাদিসে আরো এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন, রোজা ছাড়া আদম সন্তানের প্রত্যেকটি কাজই তার নিজের জন্য। তবে রোজা আমার জন্য। আমি নিজেই এর পুরস্কার দেব। রোজা (জাহান্নামের আজাব থেকে বাঁচার জন্য) ঢাল স্বরুপ। তোমাদের কেউ রোজা রেখে অশ্লীল কথাবার্তায় ও ঝগড়া বিবাদে যেন লিপ্ত না হয়। কেউ তার সঙ্গে গালমন্দ বা ঝগড়া বিবাদ করলে শুধু বলবে, আমি রোজাদার। আল্লাহর কাছে রোজাদারের মুখের গন্ধ কস্তুরীর সুঘ্রানের চেয়েও উওম। রোজাদারের খুশির বিষয় ২টি- যখন সে ইফতার করে তখন একবার খুশির কারণ হয়। আর একবার যখন সে তার রবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে রোজার বিনিময় লাভ করবে তখন খুশির কারণ হবে। (বুখারী)।

হাদিস শরিফে আছে, ‘যে ব্যক্তি রোজাদারকে ইফতার করায়, তার বরকতে সে ব্যক্তি সব পাপ থেকে নাজাত লাভ করে এবং দোজখ থেকেও তার মুক্তি লাভ ঘটবে। আর ওই রোজাদার ব্যক্তি রোজার বদলে যে সওয়াব লাভ করবে, সেও তার সমপরিমাণ সওয়াবের ভাগীদার হবে। এর দ্বারা রোজাদারের সওয়াব কম করা হবে না।’ মুহাম্মদ স:-এর কাছ থেকে এ কথা শ্রবণ করার পর উপস্থিত সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন- ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের প্রত্যেকের এমন খানাপিনা নেই, যার দ্বারা রোজাদারকে ইফতার করাতে পারি।’ তখন তিনি বললেন- ‘একটি খুরমা, একটু দুধ, একটু পানি দ্বারা যে ব্যক্তি রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে ব্যক্তি এ সওয়াব হাসিল করবে।’ এ মাসটি উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য আল্লাহ তায়ালার খাস রহমত। মুহাম্মদ সা: আরো বলেন- ‘আমার উম্মতকে রমজান মাসে এমন পাঁচটি নেয়ামত দান করা হয়েছে, যা পূর্ববর্তী কোনো নবীর উম্মতকে দান করা হয়নি।’

১৪০০ বছর আগে মুসলিম সমাজে রোজা রাখার রেওয়াজ শুরু হয়েছিল, যা কিনা একই সঙ্গে বিজ্ঞাননির্ভর, স্বাস্থ্যসম্মত ও মানসিক প্রশান্তির আধার। পৃথিবীতে বসবাসকারী সব মুসলিম ব্যক্তির ওপর রোজা, বিশেষ করে রমজানের রোজাকে ফরজ করা হয়েছে।

কোরআন ও হাদিসে রোজার গুরুত্বের বিবরণ বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টির সঙ্গে চিকিৎসা ক্ষেত্রেও রোজার গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রোজা রাখার অভ্যাসে উচ্চ রক্তচাপ, নানা ধরনের হৃদ্‌রোগ বিষয়ক জটিলতা দূর হয়। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ও ইতিবাচকভাবে জীবনদর্শনেও রোজা কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

রমজান হল ইবাদতের মাস। তাই এ মাসের সময়গুলো যতটা শুধু আল্লাহর সাথে কাটানো যায় ততটাই কল্যাণ। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে রমজান ও রোজার ফযিলত লাভ করার তাওফিক দান করুন এবং মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে পবিত্র রমজানের ফজিলত জেনে বেশি বেশি নেক আমল করার তৌফিক দান করুন।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

রামুতে তরমুজের দাম চডা :হিমশিম খাচ্ছে ক্রেতারা

  কামাল শিশির; রামু :কক্সবাজারের রামু উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পবিত্র মাহে রমজানের শুরুতে বিভিন্ন এলাকায় ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/