পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘পার্বত্য শান্তি চুক্তি’ বাস্তবায়নের দাবিতে কাজ বর্জনের কর্মসূচি পালন করছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি।
বুধবার সকালে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের সঙ্গে অসহযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা বুধবার সকাল থেকে এ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
পার্বত্য জনসংহতি সমিতির প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদ পূর্ণাঙ্গ কার্যকর করা, সামরিক বাহিনীর ক্যাম্প পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেয়া অন্যতম।
সমিতির নেতা সন্তু লারমার অভিযোগ, চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। কোনও একটি অংশ পার্বত্য এলাকায় অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে।
অন্যদিকে স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন, জনসংহতি সমিতিই পার্বত্য এলাকায় অস্থিরতা তৈরির জন্য দায়ী।
পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানে সরকারি-বেসরকারি অফিসে কর্মরত ক্ষুদ্র জাতিসত্তার লোকজনকে কাজে যোগ না দিতে আহ্বান জানানো হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে।
সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য এলাকায় চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে পার্বত্য শান্তিচুক্তি সই হয়। চুক্তির ১৭ বছর পরেও চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ায়, গত বছরের নভেম্বর মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে জনসংহতি সমিতির নেতারা সরকারকে পাঁচ মাসের সময়-সীমা বেধে দিয়েছিল। এরপর তারা শুরু করে অসহযোগ আন্দোলন।
এর আগে অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে জনসংহতি সমিতি। স্থানীয় বাঙ্গালিরা এ ধরনের কর্মসূচিতে সাড়া না দিলেও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজন এসব কর্মসূচি পালন করে থাকেন।
এছাড়া চলতি বছরের ১৯ আগস্ট একই দাবিতে হাট-বাজার বর্জন কর্মসূচি পালন করেছে জনসংহতি সমিতি। চুক্তি বাস্তবায়নে জনসংহতি সমিতির অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে হাট-বাজার বর্জন কর্মসূচির কারণে বান্দরবানের জেলা শহরের মধ্যমপাড়া, উজানীপাড়াসহ সাত উপজেলায় পাহাড় অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে হাট-বাজার এবং দোকানপাট বন্ধ ছিল। কর্মসূচি সফল করতে জেএসএসের নেতাকর্মীরা পাড়া-মহল্লায় বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান নিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি পাহাড়ীদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিদের সংগঠন জনসংহতি সমিতির সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর এই চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। এতে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং শান্তি বাহিনীর পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতা সন্তু লারমা স্বাক্ষর করেন।
– প্রিয়ডটকম,ডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.