কক্সবাজারের চকরিয়ার কোনাখালী ইউনিয়নে ভিজিএফ’র চাউল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে চেয়ারম্যান ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয় মানুষ।
গত বুধবার বিক্ষোভ মিছিল ও দুর্নীতির তথ্য স্থানীয় সাংবাদিকদের বলায় কোণাখালীর বেশ ক’জন ব্যক্তি রোষানলে পড়েছে চেয়ারম্যানের। বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যানের লোকজন প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নেয়া স্থানীয় বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে লাঞ্ছিত ও মারধর করেছে। খবর পেয়ে এলাকার শৃঙ্খলা রক্ষায় একদল পুলিশ পাঠানো হয়েছে বলে থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কামরুল আজম জানিয়েছেন।
এছাড়া বৃহস্পতিবার কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত কয়েকটি পত্রিকায় দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ পেলে খোদ চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার নিজেই চকরিয়া পৌর শহরস্থ সংবাদপত্র এজেন্ট ও হকারদের কাছ থেকে সকল পত্রিকা অতিরিক্ত মুল্য দিয়ে কিনে নিয়ে যায়। এসময় সংবাদকর্মীদের উদ্দ্যেশ্য করে নানা কটুক্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, ইতোপূর্বে কয়েকদফার ভয়াবহ বন্যায় চকরিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নের রাস্তাঘাট, বেড়িবাঁধ ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ অবস্থায় বন্যাদুর্গতদের জন্য সরকারী ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা ত্রাণ ও নগদ অর্থ প্রদান করেন। এখনো সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে বিভিন্ন ইউনিয়নে ত্রাণ সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে।
কোনাখালী ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর আলম মেম্বার, শামসুল আলম মেম্বার ও আমির হোসেন দুদু মেম্বার সাংবাদিকদের জানান, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বরাদ্দের ২০ কেজি করে ৩ দফায় ৬০ কেজি চাউল বিতরণেও কোণাখালীতে অনিয়ম করা হয়েছে। চাউল বিতরণের সময় কারো কারো কাছ থেকে নগদ অর্থ ঘুষ নেয়া হয়েছে বলেও জানান তারা। এমনকি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দ করা চাউলের এক-তৃতীয়াংশও সংশ্লিষ্টরা পায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
মেম্বার জাহাঙ্গীর আলম আরো দাবী করেন, ভিজিএফে’র চাউল বিতরণের অনিয়মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তাকে চেয়ারম্যানের হাতে নাজেহাল হতে হয়েছে। এ ঘটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অভিযোগ করলে তিনি ইউনিয়ন পরিষদে অভিযান চালান বুধবার ২৮ অক্টোবর। এসময় ঘটনার সাথে জড়িত অভিযোগে মৃত গুরামিয়ার ছেলে রেজাউল করিম ও কাসেম আলীর ছেলে জামাল উদ্দিন নামের দুইজনকে আটকও করেন। পরে আটককৃতদের কাছ থেকে মুচলেখা নিয়ে চেয়ারম্যানের জিন্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
তবে পরিষদের মেম্বারদের করা অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার বলেন, আমার ইউনিয়নের জন্য সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত চাউল পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হচ্ছিল। কিন্তু ওই মেম্বাররা অনৈতিক সুবিধা আদায় করতে না পারায় তারা আমার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ভিজিএফের চাউল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে পরিষদে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করেছি। এ সময় চাউল কম দেয়ার অভিযোগে দুইজনকে আটক করেছি। পরে তাদের কাছ থেকে মুচলেখা নিয়ে চেয়ারম্যানের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছি।
You must be logged in to post a comment.