কক্সবাজার জেলার টেকনাফ স্থলবন্দরের কাঠ বোঝাই ট্রাক থেকে ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় ব্যবসায়ীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। এর কারণ হচ্ছে চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত নানান কৌশল নিয়ে ইয়াবা পাচার করে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় ট্রাক পরিবহনের কতিপয় কিছু অসাধু চালক ও হেলপারদের মাধ্যমে বৈধ ব্যবসাকে ব্যবসাকে ব্যবহার করে ইয়াবা পাচারকাজ অব্যাহত রেখেছে। এতে বন্দরের বৈধ ব্যবসায়ীরা পড়েছে গ্যাড়াকলে। হচ্ছে নানাভাবে হয়রানির শিকার।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাতে বিজিবির দমদমিয়া চেকপোষ্টে টেকনাফ স্থলবন্দর থেকে কাঠ বোঝাই (ঢাকা মেট্টো-ট-১৮-৪৮৫৭) নাম্বার ট্রাকের ভিতরে ৩২ হাজার ৯০৪ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এসময় ৮১০ দশমিক ৫৪ ঘনফুট গর্জন কাঠসহ ট্রাকটি জব্দ করা হয়। এ কাঠ সমূহ বনবিভাগে হস্তান্তর করা হয় এবং উদ্ধার ইয়াবা থানায় জমা দিয়ে পাচারে জড়িত ট্রাক মালিক টেকনাফ সদর ইউনিয়নের শীলবনিয়া পাড়া এলাকার মৃত মোঃ হোসেনের ছেলে আবুল হোসন (৩২), ট্রাক চালক উখিয়া পশ্চিম রত্মাপালং এলাকার মোঃ আব্দুল মন্নান (৩৫) ও হেলপার টেকনাফ সদরের নতুনপল্লান পাড়া এলাকার মৃত মমতাজ মিয়ার ছেলে ফিরোজ কবির (২৫)কে পলাতক আসামী করে মামলা করা হয়েছে।
এছাড়া একইদিন গভীর রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লায় দাউদকান্দি টোলপ্লাজা এলাকা থেকে র্যাব-১১ এর একটি টিম অভিযান চালিয়ে (ঢাকা মেট্রো ট-১৪-২১০১) একটি ট্রাকের ভিতর থেকে ৯৮ হাজার ইয়াবাসহ ট্রাক চালক উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের উত্তর পুকুরিয়া এলাকার ইউসুফ (২৩) ও হেলপার একই ইউনিয়নের হরিন মারা এলাকার মোঃ জাফর (২৫)কে আটক করা হয়। এ সময় ৫২৭ দশমিক ৩ ঘনফুট গর্জন কাঠ, ৪৯ হাজার ৪৩৯ নগদ টাকাসহ ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়া একইদিন ভোরে ঢাকা বাড্ডা এলাকায় থেকে স্থল বন্দরের কাঠ বোঝাই ট্রাক থেকে বিপুল পরিমান ইয়াবা ট্যাবলেটসহ চালক ও হেলপারকে আটক করা হয়েছে। তবে কাঠ ও কাঠের মালিককে আটক করা হয়নি বলে জানা গেছে।
এদিকে স্থলবন্দরের কাঠ ব্যবসায়ীরা জানান, মিয়ানমার থেকে কাঠ আমদানী পর স্থল বন্দরে আনলোড ও পরিমাপ করে সরকারী রাজস্ব প্রদান পূর্বক শুল্ক বিভাগ ও বন বিভাগের অনুমতি এবং স্থল বন্দরের ছাড়পত্র নিয়ে ট্রাকে বোঝাই করে দেশের বিভিন্ন স্থানে কাঠ সরবরাহ করা হয়। তবে দীর্ঘদিন ধরে আমরা সীমান্ত বাণিজ্য ব্যবসা করে সরকারকে রাজস্ব প্রদান করে যাচ্ছি। বর্তমানে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সাথে পরিবহনের কিছু অসাধু ব্যক্তির কারনে এখন আমাদের ব্যবসা করা দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।
তারা আরও জানান, অনেক দিন আগে বন্দরের কাঠ বোঝাই ট্রাক থেকে ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় সড়ক ও বন্দর ধর্মঘটের ফলে সীমান্ত বাণিজ্য ব্যবসা বন্ধের উপক্রম হলে বিজিবি পরিবহন মালিক, চালক ও হেলপারদের নিয়ে বৈঠক করে। এতে পরিবহনের আড়ালে ইয়াবা পাচার না করার অঙ্গীকার নেওয়া হয়। তাছাড়া পরিবহনের ভেতরে ইয়াবা পাওয়া গেলে তা পরিবহন মালিক, চালক ও হেলপার দায়ী থাকবে এমনটি বলা হলেও কিছু দিন যেতে না যেতেই পরিবহনের অসাধু ব্যক্তিরা ব্যবসায়ীদের অজান্তে আবারো কাঠ বোঝাই ট্রাকের ভিতরে একের পর এক ইয়াবার চালান পাচার করতে গিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ইয়াবাসহ ট্রাকের চালক ও হেলপারকে আটক করা হয়েছে। তবে পরিবহনের ট্রাকের ভিতরে মাদক ইয়াবা উদ্ধার করে চালক ও হেলপারকে আটক করা হলেও বৈধ কাঠের ব্যবসায়ীরা হয়রানীর শিকার হতে হচেছ। তবে বাণিজ্যিক পন্য পরিবহনে মাদক পাচার ও হয়রানী থেকে রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
এদিকে কাঠ ব্যবসায়ী আজগর, জাহেদ, আবু বক্কর ও শওকত জানান,টেকনাফ স্থলবন্দরের কাঠ ব্যবসায়ীরা বৈধ ব্যবসা পরিচালনা ও হয়রানীসহ নানা ঝামেলা থেকে রক্ষা পেতে রবিবার স্থানীয় প্রশাসনের বরাবরে লিখিতভাবে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন ।
You must be logged in to post a comment.