সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / পুষ্টি ও স্বাস্থ্য / অন্ডকোষের সমস্যা ও প্রতিকার

অন্ডকোষের সমস্যা ও প্রতিকার

https://coxview.com/wp-content/uploads/2021/08/Health-penis-.jpg

নারী-পুরুষ উভয়ের কাছে ক্যান্সার একটি আতংকের নাম। অনেকে মনে করেন নারীরা বেশি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। অন্ডকোষে বিভিন্ন কারণে টিউমার হতে পারে। অন্ডকোষে টিউমার হলে অণ্ডকোষে ফোলা ভাব, অন্ডকোষে অধিক ভারবোধ ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। ক্রমেই স্পর্শকাতরতা দেখা যায় কিছু ক্ষেত্রে। জেনে রাখা ভালো নারীদের পাশাপাশি পুরুষেরা ক্যান্সারের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

টেস্টিস বা অন্ডকোষের কি কি অসুখ হতে পারেঃ
টেস্টিস সঠিক স্থানে না আসা, টেস্টিস অন্ডকোষ থলিতে না এসে পেটে বা অন্য কোন স্থানে নামার সময় আটকে যেতে পারে। এই ধরনের অসুখের ফলে অন্ডকোষ বা টেস্টিসের বৃদ্ধির ব্যাঘাত ঘটে এবং প্রজনন মতা নষ্ট হয়ে যায়। আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় ঝুঁকি বেড়ে যায়। সর্বোপরি টেস্টিস বা অন্ডকোষের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

অতএব পিতামাতার উচিত এ বিষয়টি গুরম্নত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা এবং অতি সত্বর সার্জনের শরণাপন্ন হওয়া। কারণ সময়মতো চিকিৎসা করলে টেস্টিসের বা অন্ডকোষের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে ও ক্যান্সার হওয়া রোধ হয়।

 

চিকিৎসাঃ
পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে অন্ডকোষ বা টেস্টিসের অবস্থান নির্ণয় করা অর্থাৎ টেস্টিস কোথায় আছে তা নিরূপণ করা এবং সঠিক স্থানে নামিয়ে আনাই হচ্ছে এর আসল চিকিৎসা।

 

অন্ডকোষের বৃদ্ধি বা হাইড্রোসিলঃ
অন্ডকোষের বৃদ্ধি বা হাইড্রোসিল কি? অন্ডকোষের চামড়া বেশ মোটা, এর মধ্যে দুটি পর্দা আছে – একটির নাম টিউনিকা ভেজাইলেনিস এবং অপরটি হলো টিউনিকা এলবুজিনিয়া। এই পর্দা দুটি হতে স্বাভাবিক অবস্থায় এক প্রকার জলীয় পদার্থ নিঃসৃত হয় এবং এর ফলে পর্দা দুটি মসৃন ও সিক্ত থাকে এবং পর্দা দুটি একত্রে জুড়ে যায় না। কোন কারণ বশত যখন উক্ত জলীয় পদার্থ স্বাভাবিক অপেক্ষা অধিক পরিমানে নিঃসৃত হয় আর তা শোষিত না হয়ে পর্দা দুটির মধ্যে জমে থাকে এবং ক্রমশই পরিমানে বৃদ্ধি পেতে থাকে, তখন অন্ডকোষটি আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে মনে হয়। এই অবস্থাকেই বলা হয় কোষবৃদ্ধি বা হাইড্রোসিল। বাস্তবপক্ষে ইহা অন্ডকোষের এক প্রকার শোথ বিশেষ।

হাইড্রোসিল সাধারণত ততটা বিপজ্জনক নয় এবং সাধারণত এটা প্রজণনের ক্ষেত্রে কোনো হস্তক্ষেপ করে না। তবে নিচের অবস্থাগুলোর সাথে এটা সম্পৃক্ত থাকতে পারে, সে ক্ষেত্রে এটা মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে :

ইনফেকশন অথবা টিউমার :- এগুলো শুক্রাণু উৎপাদনে বা শুক্রাণুর কাজে বাধা দিতে পারে।

ইনগুইনাল হার্নিয়া :– হার্নিয়া আটকে গেলে জীবন-মরণ সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া সচরাচর যেসব জটিলতা দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো:- চলাফেরায় অসুবিধা, যৌন মিলনে সমস্যা এবং হাইড্রোসিল বেশি বড় হলে অণ্ডকোষের রক্ত সরবরাহে প্রতিবন্ধকতা।

 

টেস্টিস বা অন্ডকোষের টিউমারঃ
টেস্টিসের জন্মের পর যদি সঠিক জায়গায় না থাকে ঐ টেস্টিসের টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা অত্যান্ত বেশি। এছাড়াও বিভিন্ন কারণে টেস্টিসের টিউমার হতে পারে। টেস্টিসের টিউমার হলেই টেস্টিস হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে বড় হতে থাকে। বেশির ভাগ সময়ই কোন ব্যথা হয় না। টেস্টিসের টিউমার সাধারণত ক্যান্সার হয়ে থাকে। সময়মতো চিকিৎসা না করলে অতি দ্রুত বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে এবং মৃত‍্যু অনিবার্য।

 

টেস্টিকুলার টরসনঃ
৫ বছর থেকে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত অন্ডকোষ বা টেস্টিসের এই অসুখ হয়। এই রোগে টেস্টিস প্যাঁচ খেয়ে যায়, যার ফলে এর রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যায় এবং টেস্টিসের বা অন্ডকোষের কার্যক্ষমতা হারিয়ে জড়বস্তুতে পরিণত হয়। এই রোগে টেস্টিসের হঠাৎ প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয়। দ্রম্নত এই রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা অতীব জরুরী। তা না হলে টেস্টিস গ্যাংগ্রিন হয়ে যায়।

 

অরকাইটিস বা টেস্টিসের প্রদাহঃ
১৪ থেকে ২২ বছর বয়সে এই অসুখ বেশি হয় এতে টেস্টিসের ইনফেকশন হয় এবং প্রচুর ব্যথা ও টেস্টিস ফুলে যায়। রোগীর জ্বর ও প্রস্রাবের জ্বালা-পোড়া হয়। এই রোগের অন্যতম কারণ অবৈধ যৌন সঙ্গম। সঠিক সময় চিকিৎসা না করলে টেস্টিসের কার্যমতা নষ্ট হয়ে যায়।

 

অণ্ডথলি ফুলে যাওয়াঃ
অণ্ডথলি ফুলে যাওয়া হলো অণ্ডথলি অস্বাভাবিক বড় হওয়া। আর অণ্ডথলি হলো এমন একটা থলি যার মধ্যে অণ্ডকোষ থাকে। যেকোনো বয়সী পুরুষের অণ্ডথলি ফুলে যেতে পারে। এর সাথে ব্যথা থাকতে পারে, আবার না-ও থাকতে পারে। এটা অণ্ডথলির এক পাশে অথবা দু’পাশেই হতে পারে। অণ্ডকোষ এবং পুরুষাঙ্গ জড়িত থাকতে পারে, অথবা নাও থাকতে পারে।

অণ্ডথলি ফুলে যাওয়ার কারণ– আঘাত, হার্নিয়া, কনজেসটিভ হার্ট ফেইলিওর, হাইড্রোসিল, অণ্ডকোষের প্রদাহ, অণ্ডকোষে প্যাঁচ খাওয়া, ভ্যারিকোসিল বা অণ্ডথলির শিরার স্ফীতি, কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ, গোপনাঙ্গ এলাকায় শল্য চিকিৎসা

সাধারণভাবে অল্পকোষ বৃদ্ধি এবং জ্বরের লক্ষণ না থাকলে চিন্তার এমন কোন কারণ হয়ে দাঁড়ায় না, একে সাধারণ রোগ হিসেবেই ধরা হয়। যদি অল্পকোষ বৃদ্ধিসহ রোগীর গায়ে জ্বর জ্বর ভাব থাকে, শিরা বা গ্রন্থি ফুলে যায় এবং ফাইলেরিয়ার লক্ষণ দেখা যায় তখন ইহা ভয়ঙ্কর প্রকৃতির রোগ হিসেবেই বিবেচিত হয়।

সাধারণত শারীরিক পরীক্ষা করে হাইড্রোসিল নির্ণয় করা হয়। অণ্ডথলি ফুলে গিয়ে বড় হয় এবং চাপ দিলে ব্যথা লাগে না। সাধারণত চার পাশের পানির কারণে অণ্ডকোষে হাত দিয়ে অনুভব করা যায় না। পেটে কিংবা অণ্ডথলিতে চাপ দিলে কখনো পানিপূর্ণ থলি বড় বা ছোট হতে পারে, এ রকম হলে বুঝতে হবে ইনগুইনাল হার্নিয়া রয়েছে।

অন্ডকোষের বা টেস্টিসের রক্তনালীর অস্বাভাবিক স্ফীত ও বৃদ্ধির ফলে এই অসুখ হয়। হাঁটাচলা করলে বা অনেকণ দাঁড়িয়ে থাকলে অন্ডকোষ বা টেস্টিসের উপরের রগ ফুলে উঠে এবং শুয়ে থাকলে আবার মিলিয়ে যায়। সেই সঙ্গে ব্যথাও অনুভব হয়। এ রোগ হলে প্রজনন মতা হ্রাস পেতে পারে। তা ছাড়া আরও অনেক অসুখ যেমন স্পার্মাটোমমিল ও ইপিডিডাইমাল সিস্ট/টিবি ইত্যাদি অসুখ ও টেস্টিস হতে পারে।

অতএব, অণ্ডকোষ বা টেস্টিসের যে কোন ধরনের অস্বাভাবিকতা দেখা দিলেই জরুরী ভিত্তিতে সার্জনের শরণাপন্ন হওয়া অবশ্যক।

 

 

সূত্র: bikeloversbd.com – ডেস্ক।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2023/09/Health-Decreased-Sexual-Desire.jpg

যে কারণে যৌন আকাঙ্ক্ষা কমে

অনলাইন ডেস্ক : মানুষ মাত্রই যৌনাকাঙ্ক্ষা রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক একজন পুরুষের যৌনাকাঙ্ক্ষা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আর ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/