রিক্সাচালক শহীদুল ইসলাম (২০)। ভাড়া বাসা থেকে রবিবার বিকাল ৩টায় রিক্সা নিয়ে বের হন তিনি। রাত ১১টা থেকে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে সোমবার সকাল ৮টার দিকে তার লাশ উদ্ধার হয় নিজ গ্রামের বাড়ীর পুকুর থেকে। কক্সবাজারে চকরিয়ায় রিক্সাচালকের মৃত্যু নিয়ে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এই মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পুলিশ আটক (হেফাজতে) করেছে রিক্সাচালকের স্ত্রী ও শাশুড়ীসহ ৪জনকে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
রিক্সাচালক শহীদুল ইসলামের লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ কর্তৃক আটককৃতরা হলেন, তার স্ত্রী মুন্নি আক্তার (১৬), শাশুড়ী নুর নাহার (৪৫), জামাল (৩৬) ও অজ্ঞাত এক যুবক। তাদের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।
রিক্সাচালক শহীদুল ইসলামের লাশ উদ্ধারের পর তার মৃত্যুর নেপথ্য কারণ নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে। কেউ বলছেন রাতে ভাড়া নিয়ে কোন ব্যক্তির সাথে ঘটনা ঘটতে পারে। আবার কেউ বলছেন ছিনতাইকারীর খপ্পরে পড়েও হত্যার শিকার হতে পারেন। অনেকের বক্তব্য হয়তো স্ত্রীর পরকীয়া নিয়ে বাঁধা দূর করতে স্বামীকে হালকাকারায় হত্যা করে লাশ বয়ে নিয়ে সুদূর শাহারবিল ওমখালীর বাড়ী লাগোয়া পুকুরে ফেলে আসতে পারে। তবে শহীদুলের মৃত্যুর সঠিক তথ্য কেউ বলতে পারেননি। কোন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্যও পাওয়া যায়নি। পুলিশ বলেছে ময়নাতদন্ত শেষে রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ বলা যাবে।
আটক হওয়া মুন্নি আক্তার বলেন, আমার বাড়ী পৌরসভার করাইয়া ঘোনা এলাকায়। শাহারবিলের শহীদুল ইসলামের সাথে আমার বিয়ে হয় প্রায় এক বছর পূর্বে। দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর সাথে আমি পৌরশহরের হালকাকারাস্থ ভাড়া বাসায় অবস্থান করছি। সেই বাসা থেকে আমার স্বামী শহীদুল প্রতিদিনকার মতো খাওয়া দাওয়া শেষে রবিবার বিকাল ৩টার দিকে রিক্সা নিয়ে বের হয়।
স্ত্রী মুন্নি আরো বলেন, রাত ১১টা হলেও ঘরে না ফেরায় এবং শোয়াইব নামক এক ব্যক্তি রিক্সাটি পৌর শহরের গ্যাসের দোকানের সামনে গাছে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে জানালে স্বামীর মোবাইলে ফোন দিই। কিন্তু মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। সোমবার ভোরে খবর পাই স্বামী শহীদুলের লাশ তার শাহারবিলের ওমখালী এলাকাস্থ বাড়ীর পার্শ্ববর্তী পুকুরে ভাসছে। এ খবর পাওয়ার পর আমি মা নুর নাহারকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখান থেকে আমাদের আটক করে পুলিশ।
সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মুঠোফোনে আটক হওয়া ৪জনের পুরো নাম পরিচয় জানতে চাইলে ডিউটি অফিসার (এএসআই) জেনিয়ার আহমেদ বলেন, ওসি স্যারের অনুমতি ছাড়া কোন তথ্য দেয়া যাবেনা।
ঘটনাটি জানতে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ প্রভাষ চন্দ্র ধরের কাছে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার পাশে বেশী লোকজন রয়েছে, এসআই শাহাদাতের সাথে যোগাযোগ করুন।
লাশ উদ্ধার করা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাদাত হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে বলেন, পুকুরের পানি থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার করেছি। লাশের দুই কানের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শরীরে অন্য কোথাও আঘাতের আলামত পাওয়া যায়নি বলে প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করেছি। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে ৪জনকে আটক করা হয়েছে নিশ্চিত করেন তিনি। তবে পালাকাটার জামাল ছাড়া অন্য তিন জনের নাম মনে নেই বলে জানান। এছাড়াও উদ্ধার করা মরদেহ শহীদুলের পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও এসআই শাহাদাত জানান।
You must be logged in to post a comment.