সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / কুতুবদিয়ায় ভারী বৃষ্টির ফলে লবণ মাঠের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি

কুতুবদিয়ায় ভারী বৃষ্টির ফলে লবণ মাঠের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি

এম. রাসেল খাঁন জয়; কুতুবদিয়া :

কক্সবাজার জেলা দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় অসময়ে আকষ্মিক ভারী বর্ষণের ফলে লবণ মাঠের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। ১০ মার্চ (শুক্রবার) সন্ধ্যা ৬টার সময় আকস্মিক ভারী বর্ষণ শুরু হয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে বৃষ্টি পড়ে। ১১ মার্চ (শনিবার) থেমে থেমে ভারী বৃষ্টির ফলে লবণ মাঠ তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। এ সময় উপজেলার উত্তর ধূরুং, দক্ষিণ ধূরুং, লেমশীখালী, কৈয়ারবিল, বড়ঘোপ, আলী আকবর ডেইলসহ মোট ৬ ইউনিয়নের হাজার হাজার একর লবণ মাঠ তলিয়ে গেছে। আকস্মিক ভারী বর্ষণে লবণ মাঠের উৎপাদিত হাজার হাজার মেঃ টন লবণ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গিয়ে এসব এলাকার কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

১১ মার্চ সকালে সরজমিনে লবণ মাঠ পরিদর্শনে গেলে ভারী বর্ষণে লবণ মাঠের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির দৃশ্য চোখে পড়ে। উত্তর ধূরুং ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল মোতালেব জানায়, লবণ দালালের নিকট ৭ কানি লবণ মাঠ বর্গা নিয়ে চাষ শুরু করি। লবণের দাম বৃদ্ধির আশা করে প্রায় ৫শত মণ উৎপাদিত লবণ মাঠের পাশে টিলা করে জমাট করে রাখি। শুক্রবার বিকালে অসময়ে আকস্মিক ভারী বর্ষণে লবণ মাঠ তলিয়ে গেছে। এ সময় রক্ষিত উৎপাদিত প্রায় ৫শত মণ লবণ ক্ষয় হয়ে যায়। এতে প্রায় ৩লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

দক্ষিণ ধূরুং ইউনিযনের লবণ চাষী আকতার হোসেন বলেন, নিজের মালিকানাধীন ২ কানি ও বর্গা নেওয়া প্রায় ৬কানিসহ মোট ৮ কানি ২জন শ্রমিক নিয়োগ করে চাষ করছি। চলতি মৌসুমে লবণের দাম ভাল থাকায় উৎপাদিত লবণ থেকে ৫শত মণ বিক্রি করে মাঠের লাগিয়ত ও শ্রমিকের বেতন পুষিয়ে দিয়ে অতিরিক্ত লবণের মূল্য পাওয়ার আশায় প্রায় ৭শত মণ উৎপাদিত লবণ জমা করে রাখি।

আকস্মিক ভারী বর্ষণে লবণ মাঠ তলিয়ে যাওয়ার পাশা-পাশি জমাকৃত লবণও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গিয়ে ক্ষয় হয়ে যায়। এতে আমার প্রায় ৫লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। অসময়ে এমন ভারী বর্ষণ হবে কে জানিত! এমন আক্ষেপ করে কৈয়ারবিল ইউনয়নের লবণ চাষী মোক্তার আহম্মদ জানায়, সরকার লবণ চাষীদের উৎপাদিত লবণের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণের লক্ষে লবণ উন্নয়ন বোর্ড গঠনের কথা শুনে মাঠের উৎপাদিত লবণ বিক্রি না করে প্রায় ১হাজার মন লবণ জমা করে রাখি। গত শুক্রবার বিকালে আকস্মিক ভারী বর্ষণে লবণ মাঠ তলিয়ে যাওয়ার পাশা-পাশি জমাকৃত লবণ গুলো বৃষ্টির পানিতে ক্ষয় হয়ে যায়। এতে আমার প্রায় ৭ লাখ টাকার সমপরিমান ক্ষতি হয়েছে। বড়ঘোপ ইউনিয়নের পশ্চিম মনোহরখালী এলাকার লবণ চাষী নূরুল হক নূরু বলেন,লবণ দালাল থেকে ৩ একর জমি বর্গা নিয়ে চাষ শুরু করেছি। চলতি মৌসুমে লবণের দাম ভাল থাকায় চড়া দামে প্রতি একর ৭৫ হাজার করে বর্গা নিয়ে ৩জন শ্রমিক দিয়ে চাষ শুরু করি। দিন দিন লবণের মূল্য বৃদ্ধির খবর শুনে উৎপাদিত লবণ বিক্রি না করে জমা করে রাখি।

আকস্মিক ভারী বর্ষণে লবণ মাঠ তলিয়ে গেছে। মাঠে উৎপাদিত প্রায় ১হাজার মণ লবণ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গিয়ে প্রায় ৬লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের কৃষক শামসুল আলম জানায়,অনেক কষ্ট করে ঋণ নিয়ে ২ একর লবণ মাঠ বর্গা নিয়ে চাষ শুরু করি। উৎপাদিত লবণের কিছু পরিমাণ বিক্রি করে ঋণের সুদ পরিশোধ করি। লবণের অতিরিক্ত মূল্য পাওয়ার আশায় উৎপাদিত লবণের প্রায় ৫শত মণ জমা করে রাখি। শুক্রবার বিকালে অসময়ে আকস্মিক ভারী বর্ষণে লবণ মাঠ তলিয়ে যাওয়ার পাশা-পাশি জমাকৃত লবন তলিয়ে গিয়ে প্রায় ৩লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।

এ ব্যাপারে কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর জানায়, কুতুবদিয়া উপজেলার প্রায় ১০ হাজারেরও অধিক পরিবার সরাসরি লবণ মাঠের সাথে সম্পৃক্ত। গত শুক্রবার বিকালে আকস্মিক ভারী বর্ষণের ফলে উপজেলার ৬ ইউনিয়নের হাজার হাজার কৃষকের হাজার হাজার একর লবণ মাঠ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে ।

এ সময় কৃষকদের উৎপাদিত হাজার হাজার মেঃটন লবণ তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের এ অপুরণীয় ক্ষতি পুষানোর জন্য খুব শিঘ্রই লবণের ন্যায্য মূল্য নির্ধারনের লক্ষে লবণ উন্নয়বোর্ড গঠনের জন্য কুতুবদিয়া-মহেশখালী আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁওর সংবাদকর্মী আবু হেনা সাগরের মাতা অসুস্থ : দোয়া কামনা 

  বার্তা পরিবেশক : কক্সবাজারে ঈদগাঁও উপজেলার সংবাদকর্মী এম আবুহেনা সাগরের মাতা অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রামের ইবনে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/