সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / আন্তর্জাতিক / কেনিয়ায় নজিরবিহীন খরা, সমানে মরছে বন্য প্রাণী

কেনিয়ায় নজিরবিহীন খরা, সমানে মরছে বন্য প্রাণী

অনলাইন ডেস্ক :

অনাবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ খরায় নিশ্চিহ্নের পথে উত্তর আফ্রিকার দেশ কেনিয়া। জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে এ দেশটি। কেনিয়ায় দুই বছর ধরে চলা নজিরবিহীন খরায় জেব্রা, হাতি ও জিরাফের মতো বন্য প্রাণী প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন-পূর্ব আফ্রিকা দেশটির বন্য প্রাণীর ওপর এমন বিরূপ প্রভাব ফেলছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রচণ্ড রোদের মাঝে পচনশীল প্রাণীদের বিভৎস এই দৃশ্য তৈরি হয়েছে দীর্ঘস্থায়ী খরার কারণে। ফলে ওই এলাকার লোকজন যারা অনেকাংশে গবাদিপশুর ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করতেন, তারা বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন।

বিভিন্ন ধরনের মৃত বন্য প্রাণীর মাটিতে পড়ে থাকা দেহ বা কংকাল উত্তর কেনিয়ায় একটি সাধারণ দৃশ্যে পরিণত হয়েছে। সেখানে খরার কারণে পশুর খাদ্য ও পানির উৎসগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

আফ্রিকার সবচেয়ে বিরল জেব্রা প্রজাতি হলো গ্রেভি। কেনিয়ার খরায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই প্রাণীটি। গ্রেভি জিরাফের প্রায় ২ শতাংশই কয়েক বছরের খরায় মারা গেছে। হাতির মৃত্যুও বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে।

গ্রেভি জেব্রা ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী পরিচালক বেলিন্ডা লো ম্যাকি জানান, এই অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃষ্টি না হলে এই প্রজাতির জেব্রার মৃত্যুহার বাড়বে। তিনি বলেন, যদি আসন্ন বর্ষায় বৃষ্টি কম হয় তবে গ্রেভি জেব্রা অনাহারের মুখে পড়বে। ’

দীর্ঘদিন পানি ছাড়া বেঁচে থাকতে পারা উটও উল্লেখযোগ্য হারে মারা পড়ছে কেনিয়ায়। এনজিও নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের পূর্ব আফ্রিকার ইমার্জেন্সি রেসপন্স ম্যানেজার সুজে ভ্যান মিগেন বলেন, ‘এই অঞ্চলের অনেক মানুষের জন্য উট একটি মূল্যবান সম্পদ। এখন কেনিয়ার মরুভূমি এ প্রাণীর মরদেহ দিয়ে পূর্ণ। ’

কেনিয়ায় টানা চার বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। এবারও বৃষ্টি কম হচ্ছে। দেশটির আবহাওয়া বিভাগ বর্ষার বাকি সময়ও গড়ের চেয়ে বেশি শুষ্ক অবস্থার পূর্বাভাস দিয়েছে।

বর্তমানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলেও তীব্র খরা এবং মূল্যস্ফীতি কেনিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। অন্যদিকে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আন্দোলনকর্মীরা উদ্বিগ্ন যে আরো অনেক বিপন্ন প্রজাতি খরার কারণে মারা যাবে।

কেনিয়াভিত্তিক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য এলিফ্যান্টসের প্রধান ফ্রাংক পোপ বলেন, ‘কম বৃষ্টিপাত হলে উচ্চহারে হাতির মৃত্যুর আশঙ্কা থাকবে। ’

ফ্রাংক পোপ আরো বলেন, ‘আমরা হাতির পালকে খাদ্যের খোঁজে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত হতে দেখেছি। বয়স্ক হাতিগুলো মারা যাচ্ছে। নবীনগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। ’

খরায় বিপন্ন হচ্ছে অন্যান্য প্রাণীও। খাদ্যের সংস্থান করতে মানুষের হাতে বিভিন্ন পশু শিকারের ঘটনা বাড়ছে। গ্রেভি জেব্রাও শিকার করা হচ্ছে ব্যাপকভাবে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মতে, আফ্রিকা অঞ্চলে ২০২০ সাল ছিল এ যাবৎকালের রেকর্ড তৃতীয় সর্বাধিক উষ্ণতম বছর। ২০৫০ সাল নাগাদ এই অঞ্চলের তাপমাত্রা আড়াই ডিগ্রির বেশি বৃদ্ধি পেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রত্যেকটি বৃদ্ধির ঘটনায় চরম আবহাওয়ার পরিবর্তন বড় হয়ে ওঠে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

রামুতে তরমুজের দাম চডা :হিমশিম খাচ্ছে ক্রেতারা

  কামাল শিশির; রামু :কক্সবাজারের রামু উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পবিত্র মাহে রমজানের শুরুতে বিভিন্ন এলাকায় ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/