মুকুল কান্তি দাশ; চকরিয়া :
আর মাত্র ৬দিন পরেই পবিত্র ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানের ঈদ। আর কোরবানের ঈদকে ঘিরে কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়ার কামার পল্লীগুলো টুং টাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে। পশুর মাংস কাটার নতুন সরঞ্জামাদি তৈরি ও পুরাতন দা, ছুরি, বঁটি, চাপাতি শাণ দেয়ার ধুম পড়েছে। কোরবানকে ঘিরে অনেকটা ব্যস্ত সময় পার করছে কামাররা।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চকরিয়া পৌরশহরের সবগুলো কামারের দোকানে বিদ্যুৎচালিত শাণ মেশিন ব্যবহার করে অল্প সময়ে অধিক কাজ করছেন কামাররা। পাশাপাশি আগুনের বাদির মাধ্যমে লোহা পেটাচ্ছেন অন্য কর্মচারীরা। এ ছাড়া পাড়া-মহল্লায় মৌসুমভিত্তিক কামাররা রেত (শান দেয়ার যন্ত্র) দিয়ে দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতি ও অন্যান্য সরঞ্জাম শান দিচ্ছেন।
চকরিয়া পৌরশহরের বাসিন্দা অনিল কর্মকার জানান, কোরবানি ঈদে হাজার হাজার গরু-ছাগল কোরবানি হয়ে থাকে। পশু জবাই থেকে শুরু করে কোরবানির মাংস রান্নার জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি পর্যন্ত দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতি ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি প্রয়োজন হয়। বছরের অন্যান্য সময় কাজ কম থাকলেও এ সময়ে আমরা কর্মব্যস্ত হয়ে পড়ি।
পেকুয়ার সদরের বাসিন্দা নিতাই কর্মকার জানান, সারাবছর কষ্ট করে চলতে হয়। ঈদ এলেই আমাদের কর্ম ব্যস্ততা বেড়ে যায়। চাঁদ রাত পর্যন্ত নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে। একসময় এপেশায় অনেক লোক ছিল কিন্তু এখন সেই আগের মতো কাজের লোকও মিলছেনা। বাপ-দাদার ব্যবসা কোন রকম কষ্টে টিকিয়ে রেখেছি। আমাদের ছেলেরা এখন এ পেশায় আসতে চাচ্ছেনা।
কাকারা ইউনিয়নের বাসিন্দা দুলাল কর্মকার বলেন, আধুনিক সব দা-ছুরি আসার ফলে ক্রেতা কমে গেছে। আগের মতো সেই জৌলুস নেই। তাছাড়া কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রিতে তেমন লাভ হচ্ছেনা।
ক্রেতারা জানান, একটি দা আকার ও লোহা ভেদে ১০০-৪০০ টাকা, ছুরি ৪০-৪০০ টাকা, হাড় কাটার চাপাতি একেকটি ২২০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং পুরনো যন্ত্রপাতি মেরামত করতে ৫০-২০০ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন কামাররা।
তারা আরো বলেন, মনে হচ্ছে দাম একটু বেশি তারপরও কি করবে সামনে ঈদ। প্রয়োজনের দাগিদে নিতে হচ্ছে। কোন উপায় নেই।
You must be logged in to post a comment.