অনলাইন ডেস্ক :
চলতি মাসে আসছে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। আর আলোচনার কেন্দ্রে এখন ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। আশঙ্কা করা হচ্ছে, প্রবল গতি নিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। তবে কীভাবে এর নাম ‘মোখা’ হলো, তা নিয়েও কৌতূহল রয়েছে অনেকের।
জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড মেটেরলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের তথ্যানুসারে, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সামুদ্রিক ঝড়ের ক্ষেত্রে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬৩ কিলোমিটারের বেশি হলে সেটি ‘সাইক্লোন’ আর বাতাসের গতি এর কম থাকলে বলা হয় ‘নিম্নচাপ’। সেই হিসাবে, বর্তমান গভীর নিম্নচাপটি শক্তি সঞ্চয় করে সাইক্লোনে পরিণত হওয়ার পর এর নাম হবে ‘মোখা’।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের নাম নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভ্রাট। ইংরেজিতে নাম Mocha। আর এরপর থেকেই শুরু আলোচনা। এর বাংলা তর্জমা করলে কী দাঁড়ায়! মোচা নাকি মোকা? এই নিয়ে বিভ্রাট তৈরি হয়েছে। আসলে নামের অর্থের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে এর রহস্য।
এই নামটি দিয়েছে ইয়েমেন। মোখা ইয়েমেনের লোহিত সাগর উপকূলে একটি বন্দর শহর। ঊনবিংশ শতাব্দীতে এটাই ছিল ইয়েমেনের প্রধান বন্দর শহর। কফি বাণিজ্যের জন্য বিখ্যাত ছিল এই বন্দর।
উত্তর ভারত মহাসাগর তথা বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করে এই অঞ্চলের ১৩টি দেশ। জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড মেটেরলজিক্যাল অর্গানাইজেশন প্যানেল সদস্য দেশগুলো ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে নামগুলো গ্রহণ করেছে।
দেশগুলো হলো- বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেন। এই দেশগুলোর নামের আদ্যক্ষর অনুযায়ী তৈরি তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ হয়।
তালিকা অনুযায়ী পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে ‘বিপর্যয়’। এই নামটি বাংলাদেশের দেয়া। এর পরবর্তী পাঁচটি ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে যথাক্রমে ‘তেজ’ (ভারত), ‘হামুন’ (ইরান), ‘মিধিলি’ (মালদ্বীপ), ‘মিগজাউম’ (মিয়ানমার) ও ‘রিমাল’ (ওমান)।
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের প্রচলন হয় ২০০০ সালে। ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ সম্পর্কে ওয়ার্ল্ড মেটেরলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, একটি ঘূর্ণিঝড় এক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এই সময়ের মধ্যেই একই অঞ্চলে আরও ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়া অসম্ভব কোনো ব্যাপার নয়। এ কারণে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়া হলে সম্ভাব্য বিভ্রান্তি এড়ানো সহজ হয়।
নাম ঠিক করার সময় যদিও বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হয়, যেমন কোনো গোষ্ঠী বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে আঘাত করে এমন কোনো নাম গৃহীত হবে না। একবার ব্যবহার করা নাম আর ব্যবহার করা যাবে না।
You must be logged in to post a comment.