মুকুল কান্তি দাশ; চকরিয়া :
মজনু, রেজাউল, হেলাল ও কপিল। তারা সবাই হতদরিদ্র পরিবারের গৃহকর্তা। তাদের আয়ের চলে নিজ নিজ সংসার। তারাসহ চব্বিশ জনের পারিবারিক অবস্থা একই।
কক্সবাজারের চকরিয়ার কাকারা ও সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের এই চব্বিশজন গৃহকর্তা বন মামলার গ্রেপ্তারী পরোয়ানা মাথায় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। মাঝে-মধ্যে বৈধ-অবৈধ পন্থায় সামান্য রোজগার করে পরিবারে ভাত-তরকারির জোগান দিলেও পর্যাপ্ত দিতে না পারায় প্রায়শই উপোশ থাকতে হতো পরিবার সদস্যদের। তবুও আতংকে থাকতে হতে তাদের কখন পুলিশ আসবে ভয়ে।
সত্য-মিথ্যার সংমিশ্রনে বন মামলার ওয়ারেন্টি আসামী বেড়ে যাওয়ায় এলাকাই অপরাধ প্রবণতাও বাড়ছিল। ফলে, পুলিশ ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে ওই ফেরার আসামীদের জামিনে এনে তাদের পরিবারে স্বস্থি ফিরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশংসনীয় উদ্যোগ নেয় চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী। তাকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেন কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.শওকত ওসমান।
চকরিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল খালেক বলেন, ওসি ও চেয়ারম্যানের সম্বন্নিত উদ্যোগে সাড়া দেয় চব্বিশ জন বন মামলার ফেরার আসামী। তারা সোমবার সকালে চেয়ারম্যান শওকতের সাথে থানায় হাজির হয়। পরে ওসি বখতিয়ার চৌধুরীসহ চব্বিশ আসামীকে চকরিয়া সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে যান। বিজ্ঞ বিচারক দু’পক্ষের আইনজীবিদের বক্তব্য শোনে এবং আসামীদের পারিবারিক অবস্থাসহ মামলার ধরন এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার সার্থে সবাইকে জামিনে মুক্তি দেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী আরো বলেন, পাহাড় ঘেষা চকরিয়ার অন্তত ১০টি ইউনিয়নের বন মামলার অসংখ্য ফেরার আসামী রয়েছে। তারা পলাতক থাকাবস্থায় পরিবারে দু’মুঠো আহার জোগান দিতে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছিল। তাই জামিন যোগ্য বন মামলার ওয়ারেন্টি আসামীদের আদালতের মাধ্যমে জামিনে এনে এলাকাবাসীকে স্বস্তি ফিরিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তারই ধারাবাহিকতায় বন মামলার চব্বিশ আসামীকে অপরাধ কর্মকান্ড না করার অজুহাতে জামিনে মুক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনুরুপভাবে অন্যান্য বন মামলার জামিনযোগ্য পলাতক আসামীদেরও মুক্ত জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
You must be logged in to post a comment.