চকরিয়া প্রেসক্লাবে মতবিনিময়ে মেয়র প্রার্থী আতিক উদ্দিন চৌধুরী- বিএনপি জোট আমলে পরিবারসহ হামলা-মামলার শিকার হলেও আওয়ামী রাজনীতি থেকে বিচ্যুত হইনি

মুকুল কান্তি দাশ, চকরিয়া :

চকরিয়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী পৌরসভা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা আতিক উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ছাত্রলীগ হয়ে তৃণমূল থেকে উঠে এসে আমি পৌর আওয়ামীলীগে নেতৃত্ব দিচ্ছি। বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের আমলে পরিবার সদস্যসহ আমাকে হামলা ও মামলায় জড়িয়ে টানা হয়রানি করা হয়েছে। তবুও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে তিল পরিমাণ টলাতে পারেনি। ভবিষ্যতেও পারবে না।

ক্ষমতাসীন দলের নেতা হয়েও আমি আওয়ামীলীগের ভাবমুর্তির ক্ষতি হয় এমন কোন কাজে জড়াইনি। রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে সমাজসেবা করে আসছি আড়াই দশক ধরে। এতে মুগ্ধ হয়ে দলীয় কর্মী ছাড়াও পৌরসভার সাধারণ মানুষ অনুরোধ করায় আমি দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছি। মনোনয়ন বোর্ড নৌকা প্রতীক দিয়ে আমাকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিলে শতভাগ বিজয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করছি। নববর্ষের প্রথমদিন সন্ধ্যায় চকরিয়া প্রেসক্লাব কার্যালয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় আতিক উদ্দিন চৌধুরী এসব কথা বলেন।

এসময় প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম শহিদ, পৌরসভা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম রাসেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম রাসেল, পৌর ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম, আ’লীগ নেতা মিফতাব উদ্দিন চৌধুরী সহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।

এসময় তিনি নিজের জীবন বৃত্তান্ত তুলে ধরে বলেন, ১৯৮৬ থেকে ৮৭সনে চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি, ১৯৮৮থেকে ৮৯সনে প্রস্তাবিত চকরিয়া শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯১থেকে ৯২সনে চকরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক, ১৯৯৪থেকে ৯৫সনে জগন্নাত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৯৯৫ থেকে ৯৬সনে অবিভক্ত চকরিয়া ছাত্রলীগের সভাপতি, ২০১৩সনে চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে কাউন্সিলারদের প্রত্যক্ষ ভোটে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বলেন, ২০০১সনে বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতায় থাকাকালে বিভিন্ন মামলার শিকার হয়ে দার্ঘদিন কারাভোগ করেছেন। ২০০১সালে বিএনপি জামাত জোটের ক্ষমতার অপব্যবহার এবং মামলা থেকে আমার বোন এবং দুই ভাই সহ পরিবারের সদস্যরা মিথ্যা মামলায় কারা বরণ করেন। আতিক চৌধুরী ১৯৮৭’র ৫ডিসেম্বর স্বৈরাচার সরকার বিরোধী আন্দোলনে উপজেলা ঘেরাও কর্মসূচীতে চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে অংশ গ্রহণ করেন। উক্ত কর্মসূচীতে তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা দৌলত খান শাহাদাত বরণ করেন। প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে ভ্যানগার্ড হিসেবে ছিলাম। ১৯৯০’র গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও রাজপথে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। বিভিন্ন সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠনের মধ্যে চকরিয়ার ঐতিহ্যবাহী ব্রাদার্স ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা কক্সবাজার জেলার সভাপতি এবং চকরিয়া উপজেলার উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০-৯২সনে সুপার স্টার ক্লাব ভরামুহুরী চকরিয়ার উপদেষ্টা সহ বিভিন্ন সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষাগত যোগ্যতার দিকদিয়ে জগন্নাত বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিএস-সি (অনার্স) এম.এস-সি শেষ করেন। আতিক চৌধুরীর বড় ভাই মরহুম গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ১৯৬৯-৭০সনে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের চকরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ১৯৭১সনে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করে বীরমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারিভাবে স্বীকৃতি ও খ্যাতি লাভ করেন। একনিষ্ট আওয়ামী পরিবার হিসেবে চকরিয়ার রাজনীতিতে তার (আতিক উদ্দিন চৌধুরী)’র পরিবারের খ্যাতি রয়েছে।

তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্বে থেকে অদ্যাবধি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী রাজনীতি থেকে এক সেকেন্ডের জন্য বিচ্যুত হয়নি। সাংবাদিকদের উদ্যোশ্যে আতিক উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমি কোনদিনও অপরাজনীতি করিনি। দলের পদ পদবী ব্যবহার করে জমি দখল-বেদখল, নিরীহ লোকজনকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি, মামলায় দালালি, প্রতিপক্ষেেক অহেতুক কষ্ট দিইনি। জীবনের সূচনা লগ্ন থেকে মৃত্যু পযর্ন্ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শেই আওয়ামী রাজনীতি করে যাবো। তাই জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুদের মাধ্যমে চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আমার প্রার্থীতা ঘোষণা করছি এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি।