এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও :
কয়েকদিন ধরে কক্সবাজার জেলার অন্যান্য স্থানের ন্যায় বৃহত্তর ঈদগাঁওতে প্রবল বর্ষণ আর পাহাড়ী ঢলে ২য় বারের মত বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছিলো ঈদগাঁও বাজার সহ বিশাল এলাকার নিমাঞ্চল। এমনকি বৃহত্তর এলাকা প্রত্যান্ত গ্রামগঞ্জে শতকরা ৮৫ ভাগ ঘরবাড়ি পানি বন্দি হয়ে দূর্ভোগ আর দূর্গতির চরম পর্যায়ে পৌছেছে। বৃষ্টিপাত না কমানোর ফলে জেলা সদরের বৃহত্তর ঈদগাঁও তথা ছয় ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে প্রচন্ড পরিমাণ বন্যা ও বৃষ্টির পানি একাকার হয়ে পড়েছে। তবে বেড়েছে দূর্ভোগ।
এদিকে ঈদগাঁও ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বৃহত্তর মাইজ পাড়ার নাসি খালের কাঠের ব্রীজটি গেল বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জন ও যানচলাচল বন্ধ বললেই চলে। সরেজমিনের দেখা যায়, গেলো দু’দফা বন্যার ঢলের পানিতে বিশাল এলাকার লোকজন হাবুডুবু খাচ্ছে। গ্রামীণ যোগাযোগ সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ার পাশাপাশি চলাচল অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এতে করে নিদারুণ কষ্টে দিনযাপন করছে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজন। পানিবন্দি এলাকার লোকজন এখনো পর্যন্ত চুলায় আগুন জ্বালাতে পারেনি। অনেকে অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। আবার বহুজন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনও কাটাচ্ছে। বাড়ির গুছালো জিনিসপত্র বন্যার পানিতে তছনচ হয়ে পড়ে। তবে সাধারণ লোকজনের দূর্ভোগ আর দূর্গতি বেড়েছে অনেকাংশ।
অপরদিকে ঈদগাঁও ইউনিয়নের পালপাড়া, ভোমরিয়া ঘোনা, মাইজ পাড়া, চান্দের ঘোনা, কালিরছড়া সহ বিভিন্ন গ্রামঞ্চল পানিবন্দি বললেই চলে। পাশাপাশি বৃহত্তর মাইজ পাড়া হয়ে ঈদগাঁও বাজার, বাসষ্টেশন সহ বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগের আরেক অন্যতম মাধ্যম ঐতিহ্যময় নাসি খালের উপর নির্মিত কাঠের সাঁকোটি গেল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এই নিয়ে বৃহত্তর এলাকাবাসী চলাচলের ক্ষেত্রে নিদারুণ কষ্ট পাচ্ছে। যে ব্রীজ দিয়ে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থী, চাকুরিজীবি, কর্মজীবি ও শত শত পথচারী অনায়াসে যাতায়াত করত। কিন্তু সম্প্রতি সাঁকোটি ভেঙ্গে যাওয়ায় দুরর্বতি স্থান হয়ে দ্বিগুণ টাকা খরচ করে প্রয়োজনীয় কাজকর্মে যেতে হয়। তবে এলাকাবাসীর যোগাযোগের সুবিধার্থে দ্রুত সময়ে এই সাকোঁটি নির্মাণের জোর দাবী জানান এলাকাবাসী।
অন্যদিকে জালালাবাদ ইউনিয়নে গেল বন্যার ন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবারও। রাবারড্যাম পয়েন্টের বেড়িবাঁধ ভাঙ্গন আর ঈদগাঁও ফরাজী পাড়ার প্রধান যোগাযোগ সড়কের লরাবাক এলাকায় রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে ঐ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ। গত বন্যার পর থেকে উক্ত ভাঙ্গনকৃত বেড়িবাধটি ১৫ হাজার বালির বস্তা আর ৬শতটি বাঁশ দিয়ে দ্রুত গতিতে বেড়িবাধ সংস্কারের কাজ চলছিল। তৎমূহুর্তে প্রচন্ড বৃষ্টিপাত আর আবারো বন্যার পানিতে ঐ বেড়িবাধটি তলিয়ে নিয়ে যায়।
এদিকে শিক্ষার্থী সহ এলাকাবাসী নৌকায় পারাপার হচ্ছে। যার ফলে বন্যার পানি ইউনিয়নের জলদাস পাড়া, তেলিপাড়া, বাজারপাড়া, লরাবাক, পালাকাটা, বটতলী পাড়া, মোহনভিলা সহ নানা গ্রামাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ে। ঐ সব এলাকার মানুষজন ব্যাপক কষ্টে দিনপার করেছে। ঠিক একই ভাবে পোকখালী, চৌফলদন্ডী, ইসলামপুর এলাকায় বন্যার পানিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি বাড়িঘর প্লাবিত হয়ে পড়েছে। অবিলম্বে বৃহত্তর ঈদগাঁওবাসীর দিকে সুনজর দেওয়ার প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন অসহায় এলাকাবাসী।
You must be logged in to post a comment.