Home / প্রচ্ছদ / অপরাধ ও আইন / টেকনাফে গহীন পাহাড় থেকে গলাকাটা ৩ রোহিঙ্গা উদ্ধার

টেকনাফে গহীন পাহাড় থেকে গলাকাটা ৩ রোহিঙ্গা উদ্ধার

প্রতিকী ফটো

গিয়াস উদ্দিন ভুলু; টেকনাফ :
সীমান্ত এলাকা টেকনাফে আশ্রয় দেওয়া রোহিঙ্গাদের অপরাধ প্রবণতা দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। খুন, অপহরণ, নারী নির্যাতন,মাদক পাচারসহ এমন কোন ঘৃন্য অপরাধ নেই যা তারা সংগঠিত করছেনা। বলতে গেলে তাদের অপকর্মের কোন শেষ নেই।

সেই সুত্র ধরে ৩ সেপ্টেম্বর টেকনাফ হোয়াইক্যং ইউনিয়ন চাকমারকূল রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন পাহাড় থেকে গলাকাটা মুমর্ষ অবস্থায় ৩ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে স্থানীয় জনসাধারন ও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা।

তথ্য সুত্রে জানা যায়,৩ সেপ্টেম্বর সোমবার ভোর রাত তিনটার দিকে তাদেরকে অপহরণ করা হয়েছিল।

এরপর সকাল ১০ টায় হোয়াইক্যংয়ের চাকমারকুল গহীন পাহাড়ের ভেতর থেকে তাদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা করে অত্র উপজেলার দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। উদ্ধার করার পর তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উদ্ধার হওয়া ৩ রোহিঙ্গা হচ্ছে বালুখালি ক্যাম্পের ই ব্লকের সাইদ হোসেনের ছেলে নুর আলম (৪৫), আবদুল গাফ্ফার পুত্র মোঃ আনোয়ার (৩৩), কুতুপালং ডি ব্লকের জামাল মোস্তফার ছেলে মোঃ খালেক (২২)।

এদিকে দুপুর দেড়টার আহত খালেকের বাবা মোস্তফা সহ আরো তিনজন অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এসে কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জের অফিসের হাজির হয়েছে বলে জানা যায়। পালিয়ে আসা অপর দু’জন রোহিঙ্গার নাম ও পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

তথ্য সুত্রে আরো জানা যায়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে রাত দেড়টার দিকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র উখিয়া উপজেলার বালুখালী ও কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর টেকনাফ উপজেলার চাকমারকুল অপর একটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিমে গহীন পাহাড়ে নিয়ে আটকে রাখে। এরপর গলায় চুরি চালিয়ে তাদেরকে হত্যার চেষ্টা করে।

সকাল ৯টার দিকে স্থানীয় রাখাল ছেলেরা গরু চরাতে গিয়ে জঙ্গলের ভিতর থেকে গলাকাটা রোহিঙ্গাদের শোর-চিৎকার শুনতে পায় এরপর গ্রামবাসী ও রোহিঙ্গাদের খবর দেয় রাখাল ছেলেরা। উক্ত সংবাদ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার পর এলাকাবাসী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে গলাকাটা ও মূমর্ষ অবস্থায় ৩ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এরপর তাদেরকে কুতুপালং এনজিও পরিচালিত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এর পর পরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশ ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্বরত সেনা সদস্যরা গভীর পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে কারো সন্ধান না পেলেও উদ্ধার করেছে একটি লম্বা খন্তি। তবে ওখানে বেশ কয়েকটি রক্তের জমাটবন্ধ ছাপ দেখতে পায় তারা।

অপরদিকে দুপুরে বালুখালী ক্যাম্পের ডি ব্লকের মোস্তফা জামাল সহ অপর দুইজন নিখোঁজ রোহিঙ্গা পালিয়ে ঘরে ফিরে গেছে বলে জানা গেছে।

আহত আব্দুল খালেকের চাচা এনামুল হাসান বলেন, গভীর রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় তাদেরকে ক্যাম্প থেকে তুলে নেওয়া হয়। পরে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে তাদের খবর পাওয়া যাযনি।

স্থানীয়রা প্রত্যক্ষদর্শী এক কাঠুরিয়ারা বলেন, সকালে শোর চিৎকার শুনে পাহাড়ে গিয়ে দেখি রক্তাক্ত অবস্থা পড়ে রয়েছে ৩জন রোহিঙ্গা। পাশ্ববর্তী ক্যাম্পে খবর দিয়ে তাঁদের উদ্ধার করা হয়।

এব্যাপারে টেকনাফ থানার ওসি রনজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, উখিয়ার বালুখালি ক্যাম্প থেকে রাত ২ টায় তাদের অপহরণ করে হোয়াইক্যং পাহাড়ে আনা হয়। তবে কি কারণে তাদের অপহরণ করা হয়েছিল এখনো জানা সম্ভব হয়নি। আহতদের উদ্ধার করে উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ ও মালেয়শিয়ান হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনাটি সঠিক তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এব্যাপারে ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ আবুল কালাম জানিয়েছেন আহত ৩ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়েছে। কি কারনে ঘটনাটি সংগঠিত হয়েছে তা এখনো জানা হয়নি। বিস্তারিত ঘটনা জানার জন্য তথ্য অনুসন্ধান চলছে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

লামায় জমি নিয়ে বিরোধে জের ধরে ১ জনকে কুপিয়ে খুন, আহত ৭

  মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম :জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে বান্দরবানের লামা উপজেলায় দুপক্ষের সংঘর্ষের ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/