নিজস্ব সংবাদদাতা; টেকনাফ :
টেকনাফে ১৯দিন পর কবর থেকে সৌদি প্রবাসী সদ্যবিবাহিত মৌ: আনোয়ার হোসাইনের লাশ উত্তোলন করেছে উপজেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারী)বেলা ১২ টায় টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) তুষার আহমদ এর উপস্থিতে লাশ উত্তোলনের কাজ শুরু হয়।
নিহতের বড়ভাই টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের বড়ডেইল এলাকার মৃত আয়াছ উদ্দীনের মাষ্টারের ছেলে মোহাম্মদ হোসাইন বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (টেকনাফ) বরাবর সিআর মামলা নং- ৩৩/২০১৭ইং দায়ের করেন।
এই মামলার প্রেক্ষিতে কক্সবাজার সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালত (টেকনাফ) তামান্না ফারাহ এ লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দেন।
মামলা তদন্ত কর্মকর্তা টেকনাফ মডেল থানার (ওসি) অপারেশন শফিউল আলম বলেন, কক্সবাজার বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়, এখন লাশ উত্তোলনের প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে, সুরতহাল রিপোর্টের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। সুরতহাল রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর জানা যাবে এটি হত্যাকান্ড কিনা। এ মামলায় প্রধান আসামী স্ত্রী সুফিয়া আফরিন লুৎফাকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি।
লাশ উত্তোলনকালে উপস্থিত থাকা টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর মেডিকেল অফিসার ডা: শোভন দাশ জানায়, লাশের মাথার পেছন দিক কানে, মুখমন্ডল, চোখের উপরে, কপালে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
জানা যায়, ২০ জানুয়ারী সকাল ১০টার দিকে নিহতের বড়ভাই মো: হোসাইন মাতা, স্ত্রী ও প্রথম কন্যাসহ পাশ্ববর্তী এলাকায় পারিবারিক দাওয়াতে বেড়াতে যায়। বিকাল ৪.৭ মিনিটের দিকে নিহতের বড়ভাই মো: হোসাইন ২য় কন্যা মোকাররমা আক্তার হীরামনি (১৪) তার পিতাকে মোবাইল ফোনে জানায়, তার মেঝ আব্বু খাটের নিচের পার্শে পড়ে আছে এবং শ্বাস-নি:শ্বাস নেই। তাৎক্ষণিক তারা বাড়ির রুমে ঢুকে দেখতে পান, নিহতের কপাল, কানের নিচে, পিছনের ঘাড়ে আঘাতের চিহ্ন, কপাল ও কান দিয়ে রক্ত বাহির হচ্ছে। ঘটনার বিষয়ে নিহতের স্ত্রী জানায়, দরজা-জানালা বন্ধ করে দুইজনই ঘুমিয়েছিলেন। ঘুমানোর এক পর্যায়ে ভিকটিম খাঁট থেকে পড়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েছে। পরে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ভিকটিম মৌ: আনোয়ার হোছাইনকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের স্ত্রীর সরল কথা বিশ্বাস করে দাফন সম্পন্ন করেন।
উল্লেখ্য, বাদীর ছোটভাই নিহত মৌ: আনোয়ার হোসাইন (৩৫) দীর্ঘ ১৪ বছর যাবত সৌদি আরব অবস্থান করে একটি সৌদি মসজিদে ইমামতি করেছিলেন। দেশে এসে গেল বছরের ৮ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়।
এবিষয়ে নিহতের পরিবারের লোকজন দাবী করেছেন, সদ্য বিবাহিত স্ত্রীর সাথে পর পুরুষের সহিত কথা হত এবং অনেকবার বারণ করা হলেও প্রায় সময় ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত থাকত। এব্যাপারে বাদী আসামীর পিতাকে মৌখিকভাবে ও মোবাইল ফোনে জানিয়ে সমাধানের চেষ্টা করে। পিতা মেয়েকে চাপ দিলে সে মানষিকভাবে নির্যাতন শুরু করলে ভিকটিম লোক লজ্জার ভয়ে সদ্য বিবাহিত হওয়ায় লোকজনের নিকট আড়াল করার চেষ্টা করেছিল।
You must be logged in to post a comment.