সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / দীর্ঘবছর পর এবার পোকখালী গোমাতলীবাসীর দুঃখ-দুর্দশা মুছতে যাচ্ছে : উৎফুল্ল এলাকাবাসী

দীর্ঘবছর পর এবার পোকখালী গোমাতলীবাসীর দুঃখ-দুর্দশা মুছতে যাচ্ছে : উৎফুল্ল এলাকাবাসী

 

এম আবুহেনা সাগর; ঈদগাঁও :

কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালীতে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়, রোয়ানু, মুরা’র আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত দূর্যোগ কবলিত উপকূলীয় এলাকা পোকখালী গোমাতলীবাসীর দুঃখ-দুর্দশা মুছতে যাচ্ছে। দীর্ঘদিনের চলাচল অনুপযোগী সড়কটি বর্তমানে আগের তুলনায় কয়েক গুণ উঁচু ও বড় করে কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে। পাশাপাশি বহু বছর ধরে দাবী করে আসা তাদের বেড়ীবাঁধের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। এতে এলাকার লোকজনের মাঝে ফিরে আসছে স্বস্তি আর আনন্দে উৎফুল্ল।

অগ্রহায়ণ মাসের মাঝামাঝি সময়ে পুরোদমে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে লবণ উৎপাদনের কাজ। পুরো পোকখালী ইউনিয়নের জনসংখ্যা প্রায় ২৮ হাজার, শিক্ষার হারও মোটামুটি। এই এলাকার মানুষ বিভিন্ন পেশার সাথে জড়িত থাকলেও বেশির ভাগ মানুষের জীবন-জীবিকার একমাত্র উপায় লবণ ও মাছ চাষ। কিন্তু দূর্ভাগ্য প্রতিবছর কোন না কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এখানকার মানুষেরা।

এলাকাবাসীর মতে, ৯১ এর ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে আজ বহু বছর অতিবাহিত হলেও দূর্যোগ কবলিত মানুষগুলো এখনো ঘুরে দাড়াতে পারেনি ঠিকমত। পরিবারগুলো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের ক্ষত বয়ে বেড়ড়াচ্ছে। বিশেষ করে রোয়ানু, মুরা’র আঘাতে বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন তারা। দীর্ঘ বেশ কয়েকটা বছর কেটে গেলেও নির্মাণ হয়নি এলাকাবাসীর কাঙ্খিত টেকসই বেড়ীবাঁধ। প্রায় ১৭ হাজার পরিবার জোয়ারের পানিতে সি ব্লক ঘোনার ৬নং স্লুইচ গেইট পয়েন্টের বেড়ীবাঁধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে অসংখ্য ঘরবাড়ি, চিংড়ি ঘের প্লাবিত হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বেড়ীবাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ না করলে প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার একর লবণ মাঠ হুমকির মুখে। ঐসব প্রাকৃতিক দূর্যোগ কাটিয়ে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ালেও এ অঞ্চলের মানুষ দাবী করে আসছিল টেকসই একটি বেড়ীবাঁধ।

বিধ্বস্ত এ জনপদের মানুষ স্বজন ও সহায় সম্পদ হারানোর সুখ ভুলে সেদিনের পর থেকে একটি টেকসই বেড়ীবাঁধের দাবী জানিয়ে আসছিল স্থানীয় সাধারণ জনগণ ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। এরই প্রেক্ষিতে অবশেষে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হয়েছে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান নির্বাহীর মতে, প্রকল্পটিতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং কাজও শুরু হয়েছে। আগামী জোয়ারের পর বেড়ীবাঁধের ভাঙ্গা স্থান বন্ধ করা হবে। কিন্তু তারপরেও আতঙ্ক তাড়া করে ফিরছে গোমাতলীবাসীকে। বেড়ীবাঁধ নির্মাণের কাজ চললেও বাঁধটি কতটুকু টেকসই হবে তা নিয়ে শংকিত এলাকাবাসী। অপরদিকে রোয়ানু এবং মুরা’র প্রবল তোড়ে ভেঙ্গে যাওয়া সড়কের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবে দূর্গত এলাকার মানুষ। ঘুছে যাবে অবহেলিত জনগণের দুঃখ-দূর্দশা।

এ সড়কটির দুরবস্থার কারণে দীর্ঘদিন কষ্ট পেতে হয়েছে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী, রোগীসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষজন। অতি অল্প সময়ের মধ্যে এ অঞ্চলের মানুষের আয়ের প্রধান উৎস লবণের কাজ শুরু হবে। দম ফেলানোর সময় পাবেন না তারা। দিনরাত কাজ করবে মাঠে। কারণ, এ লবণ উৎপাদনের মাঝেই তাদের সবকিছু। লবণ চাষীর পাশাপাশি এ সমুদ্র উপকূলীয় জমিতে ব্যাপক ভিত্তিতে চিংড়ি চাষ হয়। এখানকার উৎপাদিত বাগদা, গলদা চিংড়িসহ নানা জাতের মাছ দিয়ে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানী হচ্ছে। আবার এসব শিল্পের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

পোকখালী আওয়ামীলীগ সভাপতি মোজাহের আহমদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দীর্ঘবছর পর এ সড়কটি সংস্কারের আলোর মুখ দেখায় এলাকাবাসীর মাঝে খুশির আমেজ বিরাজ করছে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁওর সংবাদকর্মী আবু হেনা সাগরের মাতা অসুস্থ : দোয়া কামনা 

  বার্তা পরিবেশক : কক্সবাজারে ঈদগাঁও উপজেলার সংবাদকর্মী এম আবুহেনা সাগরের মাতা অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রামের ইবনে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/