নারীদেহের খুব অস্বস্তিকর একটি বিষয় যোনিতে চুলকানি বা ভ্যাজাইনাল ইচিং। এটি নারীদেহের জন্য বেশ প্রচলিত একটি সমস্যা। বলা হয়, মেয়ে শিশু জন্মের পর থেকে ৫৫ বছর বয়স পর্যন্ত এই সমস্যা হতে পারে। বিভিন্ন কারণে এই সমস্যা হয়। কখনো সমস্যাটি ভীষণ বিরক্তিকর অবস্থা তৈরি করে। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ ডাইজেস্ট জানিয়েছে যোনিতে চুলকানির সমস্যা হওয়ার কিছু কারণের কথা।
- ছত্রাক সংক্রমণের জন্য :
অনেকের ক্ষেত্রে ছত্রাক সংক্রমণের কারণে যোনিতে চুলকানি হয়। বলা হয়, সাধারণত চারজনের মধ্যে তিনজন নারীরই এই কারণে যোনিতে চুলকানি হয়। যোনি এবং যোনির চারদিকে ভীষণ চুলকানি, পাশাপাশি সাদা স্রাব যাওয়া ছত্রাক সংক্রমণের লক্ষ্মণ। এ রকম হলে চিকিত্সকের পরামর্শ নিন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলুন।
- যোনির ইরিটেশন বা অস্বস্তি :
সিনথেটিক অন্তর্বাস ব্যবহারের কারণে অনেক সময় যোনিতে অস্বস্তিভাব তৈরি হয়। এতে যোনিতে চুলকানি হয়। এ ছাড়া অনেক সময় বেশি ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহারের কারণেও এই সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সুতির অন্তর্বাস ব্যবহার করুন এবং ক্ষার কম এমন সাবান দিয়ে যোনি এলাকা পরিষ্কার করুন।
- ট্রাইকোমোনিয়াসিস :
এটি এক ধনের সেক্সুয়াল ট্রান্সমিটেট ডিজিজ বা যৌন সংক্রামক রোগ। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কনট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তথ্য মতে, প্রায় ৩.৭ মিলিয়ন লোক এই সমস্যায় ভোগে; যাদের মধ্যে ৩০ ভাগ নারী। চুলকানি, জ্বালাপোড়া, স্রাবে পরিবর্তন ইত্যাদি এই রোগের লক্ষণ। এই রোগ নিরাময়ে চিকিত্সকরা সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করে থাকেন। রোগ যেন আবার আক্রমণ না করে সে জন্য সঙ্গীকেও চিকিত্সা নিতে হয়।
- ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাগিনোসিস :
ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাগিনোসিসে চুলকানির পাশাপাশি দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব বের হয়। যদি এমন মনে হয় প্রমাণ পান, তাহলে চিকিত্সকের কাছে যান।
- চুল ওঠা :
যোনিতে হওয়া চুল পরিষ্কারের পর পুনরায় ওঠার সময় চুলকানি হতে পারে। আমেরিকান জার্নাল অব ওবেসিটি অ্যান্ড গাইনোকোলোজির একটি গবেষণায় বলা হয়, ২০ শতাংশ নারীর চুল পুনরায় ওঠার সময় চুলকানি হয়।
- হরমোনের পরিবর্তন :
মাসিক দীর্ঘস্থায়ী বন্ধ হয়ে যাওয়া বা মেনোপজের পর যোনিতে চুলকানি হতে পারে। হরমোনের পরিবর্তনের কারণে এই সমস্যা হয়। এসট্রোজেন হরমোন ভারসাম্যহীন হলে যোনির মিউকোসাল লাইন পাতলা হয়ে যায়। এই রোগের চিকিত্সায় চিকিত্সকরা সাধারণত ইসট্রোজেন সমৃদ্ধ ক্রিম লাগাতে বা ওষুধ সেবন করতে দেন।
- কসমেটিকস ব্যবহার :
ডিওডোরেন, ক্রিম ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের কসমেটিকস ব্যবহারের কারণে যোনিতে চুলকানি হতে পারে। তাই চুলকানি প্রতিরোধে এসব পণ্য ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
- জরায়ুমুখের ক্যানসার :
জরায়ুমুখের ক্যানসারের কারণে অনেক সময় যোনিতে চুলকানির সমস্যা হতে পারে। জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধে ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন এবং যোনিতে কোনো পরিবর্তন লক্ষ করলে চিকিত্সকের পরামর্শ নিন।
–রেডিওপদ্মাডটকমডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.