Home / প্রচ্ছদ / জীব ও প্রকৃতি / নীল পায়ের বুবি

নীল পায়ের বুবি

পাখিটার নাম ব্লু ফুটেড বুবি, বৈজ্ঞানিক নাম, Sula nebouxii। দেখতে একদম ঈগলের মতো তবে পা দুটো হাঁসের মতো আর ঘন নীল বর্ণের। পাখিটা বাস করে আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে। ক্যালিফোর্নিয়ার উপসাগর থেকে শুরু করে দক্ষিণে পেরু হয়ে একদম গ্যালাপোগাস আইল্যান্ড মানে যেখানে ডারউইন গিয়েছিলেন গবেষণা করতে সেখান পর্যন্ত এদের দেখা যায়। নীল রঙের পায়ের জন্য এ পাখিটাকে সবাই ব্লু ফুটেড বুবি বলে ডাকে।

নীল পেয়ে বুবিদের পুরো জীবনই কাটে সাগরের পানিতে। শুধু যখন ডিম পারতে হয় আর ডিম ফুটা বাচ্চাগুলোকে একটু বেড়ে তুলতে হয় তখন তারা মাটিতে আসে। মাটি না বলে পাথুরে খাঁজ বলাই বরং ভালো হবে। সমুদ্রের কাছে সেই কাজগুলোতেই তারা বাসা বানায় ডিম পারার জন্য।

বাকি জীবন বুবিরা শুধু মাছের পিছনেই উড়ে বেলায়। এমনিতে রাতের বেলা তারা ঘুমায়। সকাল হলেই ফুড়ুৎ করে উড়াল দেয় মাছের পিছনে পিছনে। কখনও কখনও মাছের ঝাঁকের পিছু নিয়ে মাঝ সমুদ্রেও চলে যায়।

বুবিদের মাছ ধরার উপায় দুই ধরনের। যখন অনেক মাছ থাকে আর বুবিরাও পানিতে আরামে সাঁতার কাটতে থাকে তখন তারা আরাম করার ফাঁকে ফাঁকে টুপ করে পানিতে পানিতে ঢুবে যায় আর পছন্দ মতো মাছ ধরে আনে। বুবিদের প্রিয় মাছ ছোট মাছ। তবে মধ্যে মধ্যে পানির মধ্যে মাছ পাওয়া খুব কষ্টকর হয়ে উঠে। তখন বুবিদের সাগর চষে বেড়াতে হয় মাছের খোঁজে। এই খোঁজ তালাশের জন্য বুবিরা আকাশে সমুদ্র থেকে প্রায় ৮০ ফুট উপরে উড়তে থাকে। যেই না পানিতে মাছের ঝাঁক চোখে পরে তক্ষুনি বুবিরা সাই করে উপর থেকে পানিতে নামে আর ছো মেরে পানি থেকে মাছ তুলে নেয়।

এই মাছ যে শুধু বুবিদের পুষ্টির যোগান দেয় তা না। বুবিদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। আর এই মাছদের শরীর থেকেই আসে বুবিদের পায়ের নীল রঙ। কীভাবে? বুবিদের পায়ের নীল রঙের জন্য দায়ী ক্যারোটিনয়েড নামক এক ধরণের রঞ্জক পদার্থ। এই পদার্থের কারণেই আসলে বুবিদের পা নীল বর্ণের হয়। ক্যারোটিনয়েডের বুবিদের শরীরে আরেকটি কাজও আছে। এটি আসলে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে বুবিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করে। তাই একটি বুবির পা যত ঘন নীল হয় সে তত বেশি সুস্থ।

মেয়ে বুবিরা যখন বংশ বিস্তার করার জন্য পুরুষ বুবির খোঁজ করে তখন তারাও নীল রঙের উপর জোর দেয়। যার যত গাঢ় নীল রঙের পা তার তত বেশি সম্মান।

একটা বুবি একসঙ্গে তিনটা পর্যন্ত ডিম পারে। প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে বুবিরা ছেলে বুবিদের থেকে একটু বড়সড় হয়। তবে গড়ে তাদের দৈর্ঘ্য হয় ৫ ফুটের মতো আর ওজন হয় সোয়া তিন পাউন্ড। আর তারা প্রতি ঘণ্টায় ২৪ মাইল বেগে উড়তে পারে।

ডিম ফুটে বাচ্চা হওয়ার পরে শিশু বুবিরা ২ মাস বয়স পর্যন্ত তারা বাবা মায়ের পরিচর্যায় থাকে। এরপর নিজেই নিজের দেখাশোনা করতে পারে।

সূত্র:poygam.com;ডেস্ক।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

তুমব্রু সীমান্তে চোরাই পথে আনা ২৭টি মহিষ জব্দ করেছে বিজিবি

কামাল শিশির; রামু : পার্বত্য জেলা বান্দরবানের নাইক্ষ‍্যংছড়ির উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে মায়ানমার থেকে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/