সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / শরণার্থী সমাচার / পাহাড়ি পথে রোহিঙ্গা প্রবেশ অব্যাহত : বেদখল হচ্ছে বনভূমি : চকরিয়া-পেকুয়ায় রোহিঙ্গা প্রবেশে সামাজিক বাড়ছে অস্থিরতা

পাহাড়ি পথে রোহিঙ্গা প্রবেশ অব্যাহত : বেদখল হচ্ছে বনভূমি : চকরিয়া-পেকুয়ায় রোহিঙ্গা প্রবেশে সামাজিক বাড়ছে অস্থিরতা

ফাইল ফটো

 

মুকুল কান্তি দাশ; চকরিয়া:

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছেনা। সরকারী নির্দেশে প্রশাসন চেষ্টা করলেও শত শত রোহিঙ্গা দালালের মাধ্যমে সাগর ও পাহাড়ি পথ দিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে সারাদেশে। তেমনিভাবে কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়াতেও অনুপ্রবেশ ঘটেছে। উপকূলীয় উপজেলা পেকুয়ায় উল্লেখযোগ্য না হলেও চকরিয়ায় প্রায় ৭ হাজার রোহিঙ্গা পরিবার আশ্রয় নিয়েছে বলে প্রশাসনিক জরিপে জানা গেছে। এই পরিবারগুলোতে অন্তত শিশু-নারীসহ ২০ হাজার রোহিঙ্গা সদস্য রয়েছে।

কাকারা ইউপি চেয়ারম্যান শওকত ওসমান বলেন, এই ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় চার শতাধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে বেশির ভাগই নতুন।

সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম বলেন, মানিকপুরে নতুন-পুরাতন মিলে তিন শতাধিক রোহিঙ্গা পরিবার রয়েছে।

হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান মো.মিরানুল ইসলাম বলেন, গত এক মাসের মধ্যে অন্তত এক হাজার রোহিঙ্গা আমার এলাকায় প্রবেশ করেছে। কয়েক’শ রোহিঙ্গা পরিবার আগে থেকে রয়েছে।

পাহাড় কেটে শরণার্থীদের জন্য বসতি করা হচ্ছে। ফাইল ফটো

 

ডুলাহাজারা ইউনিয়নে আশ্রয় নিয়েছে দু’হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পরিবার। খুটাখালী ইউনিয়নে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা সব চেয়ে বেশি। নতুন-পুরাতন মিলে এই ইউনিয়নে পাঁচ থেকে সাত হাজার রোহিঙ্গা পাহাড়ি গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে। এই ইউনিয়নের গহীণ অরণ্যে বার্মাইয়া পাড়া গড়ে উঠেলে বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে স্থানীয় লোকজন। এছাড়া চিরিংগা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলী ও পৌরসভায় আগে থেকে আশ্রয় নেয়া পুরাতন রোহিঙ্গাদের বাসা বাড়িতে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানায়, নতুন-পুরাতন রোহিঙ্গাদের কারণে পুরো চকরিয়ায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির উপক্রম হয়েছে। সামাজিক দ্বন্দ্ব-কলহের পাশাপাশি বেড়েছে চুরি-ছিনতাই। খাদ্যসহ নানা পণ্যে হঠাৎ চাপ পড়ায় বেড়েছে সামাজিক অস্থিরতা।

প্রশাসনিক সুত্র জানায়, মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ইতিপূর্বে ১৭ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে ফেরত পাঠায়। খুটাখালীর চিংড়ি ঘেরে ১৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩০ রাউন্ড গুলিসহ আটক তিন যুবকও রোহিঙ্গা। ফলে, অভিযান চালানো র‌্যাব টিম অস্ত্র আইনের পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলাও করেছে চকরিয়া থানায়। এছাড়া হাইওয়ে পুলিশ ইয়াবাসহ এক রোহিঙ্গা যুবককে আটক করে মামলা দায়েরের পর আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।

পেকুয়ায় নতুন রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে তিন শতাধিক। তারা পুরাতন রোহিঙ্গাদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। খবর পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও লোকজনের সহায়তায় ১৫জনকে আটক করে উখিয়াস্থ ক্যাম্পে পাঠিয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানায়, রোহিঙ্গারা প্রবেশের পর প্রথমে কোনভাবে আশ্রয় খোঁজে নেয়। পরে বনবিভাগের জমিতে গাছ-পালা ও পাহাড় কেটে কাঁচাঘর তৈরী পূর্বক বসবাস শুরু করে। পর্যায়ক্রমে তারা স্থানীয় প্রভাবশালীদের মন জয় ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে টাকার বিনিময়ে কাগজপত্র নিয়ে ভোটারও হয় অনেকে।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, অনেকেই আমাকে জানায় রোহিঙ্গা প্রবেশে করেছে চকরিয়ায়। তবে, নিদিষ্ট ঠিকানাসহ রোহিঙ্গাদের দেখিয়ে দিতে না পারায় তাদের আটক করে ক্যাম্পে পাঠানো সম্ভব হচ্ছেনা। যেকেউ রোহিঙ্গাদের অবস্থানের তথ্য দিলে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বলেন, চকরিয়ায় নতুন-পুরাতন রোহিঙ্গার সঠিক সংখ্যা জানা নেই। তবে, প্রশাসনিক জরিপে অন্তত ৭ হাজার রোহিঙ্গা পরিবার সনাক্ত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁও যুব ঐক্য পরিবারের সাথে পোকখালী যুব উন্নয়ন সংগঠনের মতবিনিময়

নিজস্ব প্রতিনিধি; ঈদগাঁও : কক্সবাজারের নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলার অনন্য সামাজিক সংগঠন ঈদগাঁও যুব ঐক্য পরিবারের ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/