হুমায়ুন কবির জুশান; উখিয়া :
কয়েক দফা অভিযানের পরও উখিয়ার ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত হচ্ছে না। শহিদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়কের পাশে মরিচ্যা, কোটবাজার, উখিয়া সদর, কুতুপালং বাজার, বালুখালী বাজার, থাইংখালী বাজার ও পালংখালীর ফুটপাত এখন ছোট-বড় বিভিন্ন দোকানদারদের দখলে। কোথাও কোথাও ফুটপাত পেরিয়ে রাস্তায় বসেছে ফলমূল ও পানের দোকান। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এসব বাজারে লাখ লাখ মানুষের ভিড়ে জনজট ও যানজটে নাকাল উখিয়াবাসী। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ব্যস্ততম স্কুল কলেজগামী ছাত্রছাত্রী ও পথচারীদের।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, এসব বাজারের পথচারীদের চলাচলের জন্য অধিকাংশ ফুটপাত, বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তা ছোট-বড় রোহিঙ্গা পণ্যসামগ্রীর দোকান, বাদাম বড়ই ঝালমুড়ির দোকান, পানের দোকান, ফলমূল ও চায়ের দোকানদারদের দখলে।
এদিকে গত বছর উখিয়া উপজেলা প্রশাসন কয়েকদফা ফুটপাত দখলমূক্ত করার অভিযান চালালেও কোনো কার্যকর ফল দৃশ্যমান হয়নি। অভিযানের পর শুধুমাত্র উখিয়া সদর ভূমি অফিস সংলগ্ন দোকানগুলো উচ্ছেদের পর ঘেরা-বেড়া দেওয়া হয়েছে। এর দক্ষিণ পাশে রাস্তাঘেষে রোহিঙ্গাবাজার, কোটবাজারসহ অধিকাংশ ষ্টেশনে দখলমুক্ত করা যায়নি। ফলে পরবর্তীতে আরো নতুনভাবে দখল হয়েছে।
এদিকে রাস্তার পাশে রোহিঙ্গা বাজার ও দোকানপাট বসায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ব্যস্ততম উখিয়ার পথচারী ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। উখিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র তমিম দারি বলেন, স্কুল থেকে বাড়ির দুরত্ব কাছে হওয়ায় বাড়ি থেকে আমি হেঁটে স্কুলে যাই। আগে সর্বোচ্চ ১০ মিনিটে স্কুলে পৌঁছে যেতাম। এখন যানজটের কারণে হেটে যেতে সময় লাগে ২০ মিনিট। স্টেশন দিয়ে হাঁটা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
উখিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র তামজিদ কবির বলেন, এত বেশি গাড়ি রাস্তা পার হতে অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। রাস্তা পার হওয়ার সময় ভয় লাগে। কোটবাজার এলাকায় ফুটপাত দখল করে আপেল বিক্রেতা ফারুকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, পেটের দায়ে আমাদের দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। ঘরভাড়া দিয়ে দোকান করার মতো পর্যাপ্ত পুঁজি আমাদের নেই। একরাম মার্কেট সংলগ্ন ফুটপাতে বসা রোহিঙ্গা পণ্যের সমাহার নিয়ে বেচা-বিক্রির সময় কথা হয় বিক্রেতা তোফাইলের সাথে তিনি বলেন, আগে বন থেকে কাট কেটে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাতাম। রোহিঙ্গারা আসায় বন উজাড় হয়ে গেছে। এখন আমরা কি করবো? উপায় না দেখে রোহিঙ্গাদের পণ্যসামগ্রী কমদামে ক্রয় করে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালায়। বাদাম বিক্রেতা শাহ্ জাহান বলেন, আমরা জানি ফুটপাতে বসা ঠিক নয়, এতে পথচারীদের সমস্যা হয়। কিছুদিন পর পর উচ্ছেদ অভিযান হয় তখন কিছুদিন আর দোকান নিয়ে বসি না। পরে অভাবের তাড়নায় বসতেই হয়।
উখিয়া পত্রিকা জগতের একমাত্র হকার নেতা আমিন উলাহ বলেন, উপজেলা প্রশাসন শুধু উচ্ছেদ অভিযান চালায়। কিন্তু আমাদের কথা বিবেচনা করে না। আমাদের জন্যে কোথাও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা রে দেয়া হোক। তাহলে আমাদেরও ভাল হয়, উখিয়াবাসীরও ভাল হয়। সামনে বর্ষাকাল আসার আগেই আমার পত্রিকাগুলো রাখার এবং পাঠকের সুবিধার্থে ভূমি অফিসের সামনে বা অন্য কোথাও একটি ছোট্র জায়গার ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দাবী জানাচ্ছি।
You must be logged in to post a comment.