সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / বলে দেবো স্ট্রেটকাট, ভালোবাসি

বলে দেবো স্ট্রেটকাট, ভালোবাসি

এরই মধ্যে এসে গেছে ঋতুরাজ বসন্ত! ফুটছে রাঙা পলাশ কিংবা শিমুল ফুল। রাঙিয়ে দিচ্ছে চারপাশ। গাছে গাছে কাটা দিয়ে ফুটতে শুরু করেছে আমের মুকুলও। রাঙা পলাশ, মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ আর কোকিলের ডাকে উদাসী হয়ে ওঠছে কারও কারও মন। ঘরে থাকতে মন যেনো চাইছে না! বসন্ত সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ অর্থাৎ ভালোবাসা দিবসকে।

তাই হয়তো ভালোবাসার মানুষটিকে গোপন কথাটা বলে দিতে আকু-পাকু করছে মনটা। ভয়ও লাগে আবার থাকে মনের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব। এরপরও ভালোবাসা দিবসে মধুময় বসন্তের ফুলের সৌরভে মৌমাছিদের গুঞ্জরণ, মাতাল হাওয়া ছুঁয়ে যাবে তনুমন। গাঁদা ফুল মাথায় গুজে তরুণীটি পরবে হলুদ শাড়ি। হাতে কাঁচের চুড়ি পরে সারাটি দিন ঘুরবে প্রিয়জনটির সঙ্গে।

বাদ যাবে কী তরুণরা? না, তারাও রঙ-বেরঙের পাঞ্জাবি বা ফতুয়া পরে রাঙাবে মনকে। কেউ হয়তো কবি নির্মলেন্দু গুণের মতো কাঙ্ক্ষিত মানুষটিকে বলে দেবে, না বলা কথা- ‘প্রথম সুযোগেই বলে দেবে স্ট্রেটকাট: ‘ভালোবাসি’।

দাদা-দাদির কৈশোর-তারুণ্যে প্রেম বিষয়টি ‘দুর্লভ’ হলেও মার্শাল ম্যাকলুনহাসের ‘বিশ্ব গ্রামে’র এই সময়ে এখন কাউকে আর অপেক্ষায় থাকতে হয় না। ভার্চুয়ালি অনেক আগেই শুভেচ্ছা জানানো হয়ে যায়। মুহূর্তেই সাত সমুদ্র তের নদীর ওপার থেকেও অজপাড়া গাঁ বারহাট্টার কোনো তরুণীকে তরুণটি বলে দিতে পারে ‘স্ট্রেটকাট ভালোবাসি’।

কিন্তু আগে চিঠির খামে ভরে লাল গোলাপ, শুভেচ্ছা কার্ড কিংবা উপহারেই সীমাবদ্ধ থাকতো দিবসটি। আর এখন প্রযুক্তি সবাইকে কাছে নিয়ে এসেছে। এরপরও ভালোবাসা দিবসের রয়েছে নানা নিজস্বতা।

আজকাল অনেক শহুরে প্রেমিক যুগল ভালোবাসাকে চিরস্থায়ী রূপ দিতে বেছে নেন ১৪ ফেব্রুয়ারিকে। রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পড়ুয়া সজিব রায়হান বলছিলেন, বসন্তের হাওয়া লাগিয়ে জীবনে অনেক ভালবাসা দিবস এসেছে। তবে এবারেরটা ভিন্ন। আমি এবার মনের মানুষকে বিয়ে করবো ভালোবাসা দিবসে।

ভালোবাসার দিনটি উদযাপন থেকে পিছিয়ে থাকতে চান না ষাটোধ্র্ব শফিকুল ইসলামও। তিনি বলেন, ‘সময়ের স্রোতে অনেক কিছুই এসেছে- আবার হারিয়েও গেছে। সব কিছু ভুলে স্ত্রী-ছেলেকে নিয়ে আমি দিনটি উদযাপন করবো একে অপরকে লাল গোলাপ দিয়ে।

এভাবে বাঙালির সংস্কৃতি না হয়েও একটা নিজস্বতা নিয়ে এসেছে ভালোবাসা দিবস। ফুলের দোকানি থেকে শুরু করে তরুণ-বৃদ্ধ নিজেদের মতো ভালোবাসায় রাঙিয়ে নেন দিনটিকে। ।

বেশ ঘটা আর আনন্দমুখর পরিবেশে বিশ্ব জুড়ে দিনটি উদযাপন করলেও ভ্যালেন্টাইন ডে’র রয়েছে করুণ ইতিহাস। বিশ্ব তথ্যকোষ উইকিপিডিয়ায় বলা আছে, ২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেইটাইন নামে এক যাজককে ধর্ম প্রচারের অভিযোগে বন্দী করেন তৎকালীন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্যে খ্রিস্ট ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল।

বন্দী ভ্যালেন্টাইন একজন চিকিৎসকও ছিলেন। কারাগারে থাকাকালে কারারক্ষীর দৃষ্টহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন তিনি। পরে প্রেমে পড়েন ওই নারীর। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সম্রাট তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই দিনটি ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি।

পরে ৪৯৬ খিস্ট্রাব্দে পোপ সেন্ট জেলাসিউও প্রথম জুলিয়াস ভ্যালেইটাইন স্মরণে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ ঘোষণা করেন। তবে বাংলাদেশে তা উদযাপন শুরু হয় গত দশকে।

বর্তমানে পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশে এ উৎসব মহাসমারোহে উদযাপন করা হয়। শুধু যুক্তরাজ্যে মোট জনসংখ্যার অর্ধেক প্রায় ১০০ কোটি পাউন্ড ব্যয় করে ভালোবাসা দিবসে। এদিন প্রায় আড়াই কোটি শুভেচ্ছা কার্ড আদান-প্রদান করে দেশটির মানুষ।

নানা আয়োজনে দিনটি উদযাপন হলেও ভালোবাসা শুধু একদিনের নয়, সারা জীবনের। কবির ভাষায় বলাই যায়- ‘ভালোবেসে, সখী, নিভৃতে যতনে, আমার নামটি লিখো–তোমার, মনের মন্দিরে।’। ভালোবাসার মানুষটির নাম মনের মন্দিরেই অটুট থাক।

সূত্র:মাহবুব আলম/priyo.com,ডেস্ক।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁওর সংবাদকর্মী আবু হেনা সাগরের মাতা অসুস্থ : দোয়া কামনা 

  বার্তা পরিবেশক : কক্সবাজারে ঈদগাঁও উপজেলার সংবাদকর্মী এম আবুহেনা সাগরের মাতা অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রামের ইবনে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/