সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / অপরাধ ও আইন / বিডিআর বিদ্রোহ: ১৮২ জনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড

বিডিআর বিদ্রোহ: ১৮২ জনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড

ফাইল ছবি

২০০৯ সালে বিডিআর সদর দফতর পিলখানা দরবার হলে নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় আপিলের রায় ঘোষণা চলছে। আসামিদের মধ্যে এরই মধ্যে ১৮২ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে হাইকোর্ট।

২৭ নভেম্বর নিন্ম আদালতের রায় বহাল রেখে অপিল নিষ্পত্তি করে হাইকোর্টে এ রায় দেয়। এখন যাদের ৭ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তাদের নাম ঘোষণা করছে আদালত। এর পর যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিদের রায় ঘোষণা করা হবে।

সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে দ্বিতীয় দিনের মতো রায় পড়া শুরু হয়। রায়ের এক পর্যায়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি শওকত হোসেন বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সময় দরবার হলে অপরাধীরা চিৎকার বলেছিল, দরবার হলের ভেতরে-বাইরে কোনো সেনা অফিসার থাকতে পারবে না। এ কথাগুলো বলতে বলতে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। এ ধরনের চিৎকার দেশের জন্য জাতির জন্য একটি মেসেজ। ইট ইজ কমন অবজেক্ট।’

মতামতে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড প্রথম ঘটেছে।  দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দেশে আর কোনোদিন ঘটেনি। এটি একটি দু:খজনক ঘটনা। বাংলাদেশর মানুষের জন্য এ ধরনের ঘটনা প্রথম।

তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা পরিকল্পিত। হত্যাকাণ্ড নিয়ে ভেতরে বাইরে যড়যন্ত্র হয়েছে।’

বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের জন্য একমাত্র সর্বোচ্চ সাজাই হওয়া উচিত। আসামীদের মন মানসিকতা ছিল অপরাধ করার মতো। সাক্ষ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, অপরাধীরা ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত।‘

বিচারপতি নজরুল ইসলাম রায়ের মতামতে আরও বলেন, ‘এটি ছিল কমন ইনটেনশন। সকল অপরাধী একই ধরনের যড়যন্ত্র করেছিল। ক্রিমিনাল কনসপিরেসি ছিল। এ ঘটনায় বাংলাদেশে রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছিল।’

বহুল আলোচিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ১৫২ আসামির মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স) ও সাজা বাতিলে আসামিপক্ষের আপিলের রায় এটি। রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে সংগঠিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় দায়ের করা সকল ডেথ রেফারেন্স ও ফৌজদারি আপিলের ওপর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন গত ১৩ এপ্রিল শেষ হয়। এর আগে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ করেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

রায়ে খালাসপ্রাপ্ত আসামিদের সাজা চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। অন্যদিকে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা তাদের সাজা বাতিল চেয়ে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। আপিল শুনানির জন্য সুপ্রিমকোর্টের বিশেষ ব্যবস্থায় সর্বমোট ৩৭ হাজার পৃষ্ঠার পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়। এজন্য মোট ১২ লাখ ৯৫ হাজার পৃষ্ঠার ৩৫ কপি ও অতিরিক্ত দুই কপি পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়।

২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। এ ঘটনায় প্রথমে রাজধানীর লালবাগ থানায় হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। পরে এসব মামলা নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে এ হত্যা মামলায় ২৩ বেসামরিক ব্যক্তিসহ প্রথমে ৮২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি। পরে সম্পূরক অভিযোগপত্রে আরও ২৬ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করায় আসামির সংখ্যা দাড়ায় ৮৫০ জনে।

এছাড়া বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় ৮০৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় সিআইডি। পরে আরও ২৬ জনকে অভিযুক্ত করে মোট ৮৩৪ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। বিচার চলার সময়ে বিডিআরের ডিএডি রহিমসহ চার আসামির মৃত্যু হয়। মামলায় আসামিদের মধ্যে বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীরও দণ্ড হয়েছে। সাজা ভোগকালীন বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

রক্তাক্ত ওই বিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী এ বাহিনীর নাম পুনর্গঠন করা হয়। নাম বদলের পর এ বাহিনী এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) হিসেবে পরিচিত।

সূত্র:priyo.com;ডেস্ক।

 

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁওর সংবাদকর্মী আবু হেনা সাগরের মাতা অসুস্থ : দোয়া কামনা 

  বার্তা পরিবেশক : কক্সবাজারে ঈদগাঁও উপজেলার সংবাদকর্মী এম আবুহেনা সাগরের মাতা অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রামের ইবনে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/