সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / বিয়ের কেনাকাটা করতে গিয়ে হয়রানির শিকার ঈদগাঁও’র ক্রেতা সমাজ

বিয়ের কেনাকাটা করতে গিয়ে হয়রানির শিকার ঈদগাঁও’র ক্রেতা সমাজ

 

এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও :

জেলার ব্যস্ততম বৃহত্তম বাণিজ্যিক এলাকা ঈদগাঁও বাজারে রকমারী নাম, বাহারী সাইনবোর্ড এবং ভেতরে নজরকাড়া ডেকোরেশান সমৃদ্ধ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কাপড়ের দোকান সমূহে কেনাকাটার জন্যে আগত সহজ-সরল ক্রেতা সাধারণ চতুর সেলসম্যানদের কাছে উচ্চ দামের যাঁতাকলে নিস্পেষিত হচ্ছেন। মিষ্টি মধুর কথার বেড়াজালে আবদ্ধ করে ভুলিয়ে-ভালিয়ে প্রকৃত দামের চেয়ে তিন-চারগুণ দাম আদায় করে নেয়া হচ্ছে। ৭/৮ ইউনিয়নবাসীর মিলনকেন্দ্র ও যাবতীয় কেনা-কাটার জন্যে ঈদগাঁও বাজার পরিচিত লাভ করেছে বৃটিশ আমল থেকেই। বিশেষ করে বিয়ের কাপড় কেনাকাটা জন্যে পার্শ্ববর্তী ৭/৮ ইউনিয়নের জনসাধারণ এ বাজারের বড় বড় কাপড়ের দোকান সমূহে এসে থাকেন। গ্রামের ক্রেতা সাধারণের এ চাহিদা পূরন করতে কালক্রমে এখানে গড়ে উঠেছে প্রচুর সংখ্যক কাপড়ের দোকান। এমন কি বাজারের অভ্যন্তরীণ কয়েকটি রাস্তা ‘‘কাপড়ের গলী’’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এখানে বড় পরিসরের দোকান সমূহে ঢাকা-চট্টগ্রাম ষ্টাইলে দোতলা করে নয়নাভিরাম ডেকোরেশান করা হয় এবং উপরতলা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করে বিয়ের কাপড়-চোপড় সহ অপরাপর সামগ্রী দোতলায় রাখা হয়। বিয়ের কোন পার্টি আসলে দোতলায় আসন দিয়ে প্রথমে চা, নাস্তা, পান দিয়ে তাদের আপ্যায়ণ করার পর শুরু হয় কাপড় পছন্দ করার পালা। আগত ক্রেতার দল কাপড় পছন্দ করার পরে মূল্য নির্ধারণের প্রথম পর্যায়ে বিক্রেতা গুরু-গম্ভীর ভাব ধারণ করে অনেকক্ষণ পর্যন্ত। ক্রয় মূল্যে দেয়ার কথা বলে ৪/৫ গুণ বেশী দাম চেয়ে বসে।

এমতাবস্থায় আগত ক্রেতাগণ অন্তত চক্ষুলজ্জার খাতিরে হলে ও বিক্রেতার দাবীকৃত দামের অর্ধেক মূল্যায়ণ করতে বাধ্য হয়। ফলে প্রকৃত দামের চেয়ে দু’তিন গুণ দামে কাপড়ের সেট গছিয়ে দেয়া হয় গ্রাম থেকে আগত সহজ-সরল ক্রেতাদেরকে। এভাবেই প্রতিনিয়ত ঠকছেন সহজ-সরল অনেক ক্রেতা সাধারণ।

বিক্রি কর্মে নিয়োজিত অত্যন্ত চটপটে, হুঁশিয়ার এবং কথাবাজ সেলসম্যানরা সহজেই তাদের কথায় আকৃষ্ট করে ফেলে ক্রেতাদেরকে। বিয়ের অন্যতম অনুষঙ্গ-কাপড় কিনতে এসে ক্রেতাগণ এভাবে নিজের অজান্তেই কয়েক গুণ দাম দিয়ে বসেন। আবার যারা দোকানীদের এসব ব্যাপারে আগে থেকে ওয়াকিবহাল, তারা বুঝে-শুনেই দরদাম করে কাপড় কিনেন। তারা দোকানীদের চাহিদার ৫/৬ ভাগের এক ভাগ দামে দাম করে কাপড় কেনেন। ফলে তেমন সুবিধে করতে পারেনা ব্যবসায়ীরা।

বিয়ের কাপড় কেনাকাটার এক অভিজ্ঞজনের মতে, বিভিন্ন সময় সত্তর হাজার টাকা দাম চাওয়া কাপড়ের ভাইল (সেট) বার হাজার টাকায়, ষাট হাজার টাকা দাম হাঁকা সেট আট হাজার টাকা, চল্লিশ হাজার টাকা দাম হাঁকা সেট সাত হাজার টাকা, বিশ হাজার টাকা দাম হাঁকা সেট মাত্র পাঁচ হাজার টাকায় দরদাম স্থির করে অবশেষে কিনেছেন। এক্ষেত্রে যারা দোকানীদের মিথ্যেকথা, মিথ্যে কসম বা শপথ করে বসেন, তারাই শুধু ঠকেন ও প্রতারিত হন। আবার অনেক ব্যবসায়ী কমিশন ভিত্তিতে এজেন্টও নিয়োগ করে থাকেন। নিয়োজিত এজেন্টরা কাজী অফিস, স্বর্ণের দোকান, গরুর বাজার সহ প্রভৃতি স্থানে উদ্দেশ্যমুলক ঘুরাফেরা করে থাকে। বিয়ের কোন পার্টি দেখলে তাদেরকে ভূলিয়ে-ভালিয়ে নির্দিষ্ট দোকানে নিয়ে যায় তারা। ক্রেতারা ঐ দোকান থেকে কাপড় কিনলেই নিয়োজিত এজেন্ট দোকানদারের কাছ থেকে নির্দিষ্ট কমিশন পেয়ে থাকে। এতে দিনে দিনে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হচ্ছে বস্ত্র ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতাগণ।

 

ওয়াকিবহাল অনেক ব্যক্তি অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, এক্ষেত্রে প্রশাসন অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার করার কিছুই নেই, বরং সাবধান হতে হবে ক্রেতাদেরকে এবং একাধিক দোকান ঘুরে দেখে-শুনে-বুঝে দামদর করে কেনাকাটা করতে হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ঠ ব্যবসায়ীগণের সততা ও সাধুতার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাপড় কিনতে আসা গ্রামাঞ্চলের একাধিক লোকজনের মতে, কাপড় ব্যবসায়ীরা চলমান অভ্যেস, নিয়ম ও আগ্রাসী গলাকাটা মানসিকতা পরিবর্তন না করলে ক্রেতা সাধারণ ঠকতে ঠকতে এক পর্যায়ে সাবধান হয়ে যাবেন এবং ধীরে ধীরে কক্সবাজার-চকরিয়া-আমিরাবাদ-চট্টগ্রাম থেকেই বিয়ের আনুষাঙ্গিক কেনাকাটা করতে বাধ্য হবেন।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2024/04/Election-Sayed-Alam-Sagar-21-4-24.jpeg

ঈদগাঁও ইউপির চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলম নির্বাচনী জনমত জরিপে এগিয়ে

  নিজস্ব প্রতিনিধি; ঈদগাঁও :কক্সবাজারের ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে এবার ভিন্ন পরিসরে প্রচারণায় চালিয়ে যাচ্ছেন ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/