সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / ভোটের হাওয়া-কক্সবাজার-৪ : ত্রিমুখী লড়াইয়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াত

ভোটের হাওয়া-কক্সবাজার-৪ : ত্রিমুখী লড়াইয়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াত

হুমায়ুন কবির জুশান; উখিয়া :
ত্রিমুখী লড়াই হবে কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীও এ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই তিন দলের ১৩ প্রার্থী আছেন নির্বাচনী মাঠে। তবে শেষ পর্যন্ত ২০ দলীয় জোটের ব্যানারে জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে অংশ নিলে কপাল পুড়বে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর। এ নিয়ে টানাপোড়ন চলছে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপির। আওয়ামী লীগের এমন অবস্থা না থাকলেও এ আসনে তাদের মাথাব্যথার একমাত্র কারণ দলের দ্বিধাবিভক্তি।

আগামী নির্বাচনে বর্তমান এমপি আব্দুর রহমান বদিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে উখিয়া-টেকনাফে বেশ আগেভাগেই আটষাট বেঁধে নেমেছেন আওয়ামী লীগের ৬ জন সম্ভাব্য প্রার্থী। জামায়াত-বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনে আবারও বিজয় পতাকা ওড়াতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন বর্তমান জনপ্রিয় সাংসদ আব্দুর রহমান বদি। তবে তাকে এবার চ্যালেঞ্জ জানাবেন সাবেক সাংসদ অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, ড. হাবিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা শাহ আলম চৌধুরী, (প্রকাশ রাজা শাহ আলম) তাঁতী লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় শিল্প সমিতি লি: এর চেয়ারম্যান সাধনা দাশ গুপ্তা, ও উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী।

অন্যদিকে ধানের শীষ প্রতীক পেতে মরিয়া হয়ে মাঠে রয়েছেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও চার বারের নির্বাচিত সাবেক সাংসদ শাহ জাহান চৌধুলী। জামায়াত ইসলামীর হয়ে এখানে মনোনয়ন যুদ্ধে আছেন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ শাহ জাহান, কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মজলুম জননেতা এ কে এম শাহজালাল চৌধুরী, ও চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আলহাজ্ব আব্দুর রহমান বদি টানা দ্বিতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন চাওয়া প্রসঙ্গে আব্দুর রহমান বদি জানান, যুগের পর যুগ সময় এই আসন বিএনপি জামায়াতের ঘাঁটি ছিল।

বিএনপির চার বারের নির্বাচিত সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরীকে পরাজিত করে একটানা ২য় বার তিনিই প্রথম আওয়ামী লীগের বিজয় পতাকা ওড়ান এ আসনে।তার সময়ে শত শতকোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। রাস্তাঘাট নির্মাণ, নতুন নতুন স্কুল কলেজ ও স্থাপনসহ উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কাজের ফলে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে আগামী নির্বাচনেও জনগণ নৌকার ওপরই আস্থা রাখবে বলে আশাবাদী তিনি।আর মতানৈক্য কাটিয়ে দলকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাওয়ায় তার বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও তার ওপর আস্থা রাখবেন।

তবে এমপির বক্তব্যের সঙ্গে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন আওয়ামী লীগের অন্য সম্ভাব্য প্রাথীর্রা। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা কমিটির অনেক নেতার সঙ্গে এমপির বিরোধ রয়েছে। আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী জানান, দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গেও তার সখ্য রয়েছে। তিনি এখন আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আবারও দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শাহ আলম চৌধুরী রাজা বলেন, এমপির জামায়াতপ্রীতির কারণে উখিয়া-টেকনাফে দলের সাংগঠনিক অবস্থা ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। নেতাকমীর্দের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিভক্তি। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য প্রয়োজন পরিবতন।আগামী নির্বাচনে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা পরির্তনের লক্ষেই অবস্থান নেবেন বলে বিশ্বাস তার। তেমন হলে তিনিও এ আসন থেকে মনোনয়ন পেতে পারেন। কেন্দ্রীয় তাঁতী লীগের সভাপতি ও বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় শিল্প সমিতি লি: এর চেয়ারম্যান শ্রীমতি সাধনা দাশ গুপ্তা বলেছেন, দলীয় মনোনয়নের যুদ্ধে তিনিও আছেন। তার বিশ্বাস, দলের প্রতি ত্যাগ ও নারীর ক্ষমতায়নের দিক বিবেচনায় নিলে তিনিও মনোনয়ন পেতে পারেন। এ আসনে জামায়াতের ভোট ব্যাংক থাকলেও বর্তমান জামায়াতে ইসলামীর অবস্থা খুবই নাজুক। সাংগঠনিক অবস্থাও প্রায় ভেঙ্গে পড়েছে।

কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জামায়াতের প্রভাবশালী নেতা এ কে এম শাহ জালাল চৌধুরীও এলাকায় নিস্ক্রিয়। চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী এমপি আব্দুর রহমান বদির সাথে সখ্যতা রেখেই এলাকায় কাজ করছেন। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ শাহ জাহান এলাকায় ক্লিন ইমেজের পরিচ্ছন্ন নেতা হিসেবে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তবে তারা আগামী নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে মনোনয়ন চাইবেন। অত্যন্ত অমায়িক কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি চারবারের সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আস্থাভাজন হিসেবে এবারও দলীয় মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন এটা অনেকটাই নিশ্চিত। সাংগঠনিকভাবে গুরুত্বর্ণ পদে থাকায় নেতাকমীর্দের সঙ্গে তার যোগাযোগ সব চেয়ে বেশি।

তাছাড়া দলকে শক্তিশালী করতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। অভ্যন্তরীণ কোন্দলও নেই বিএনপিতে। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে এখানে বিজয় হবে ধানের শীষ।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁও যুব ঐক্য পরিবারের ফলজ গাছের চারা বিতরণ # https://coxview.com/wp-content/uploads/2024/07/Tree-Sagar-03-07-24.jpeg

ঈদগাঁও যুব ঐক্য পরিবারের ফলজ গাছের চারা বিতরণ

  নিজস্ব প্রতিনিধি; ঈদগাঁও : গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান। একটি হলেও বৃক্ষ রোপন করব জনে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/