সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / শরণার্থী সমাচার / মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর তান্ডব কিছুতেই থামছে না

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর তান্ডব কিছুতেই থামছে না

 

হুমায়ুন কবির জুশান; উখিয়া :

মিয়ানমারের বুচিডং নয়াপাড়া (মিজ্জিং) এলাকা থেকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে উখিয়া পালংখালী আন্জুমান পাড়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন নুর ফাতেমা (১৮) নামের এক যুবতী। সাত দিন হেঁটে দুপুর ১ টার দিকে তিনি থাইংখালীতে আসেন। কথা হয় এ প্রতিবেদকের সঙ্গে। তিনি অকপটে জানালেন, সেখানকার করুণ কাহিনী। বললেন, তার গ্রামে তরুণীদের পৃথক লাইনে দাঁড় করানো হয়েছিল। সেখানে তরুণী যুবতীদের আলাদা একটি বাড়িতে নিয়ে বার্মিজ আর্মিরা গণধর্ষণ করেছে। তিনি নিজেও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তবে শুধু ধর্ষণই নয়, তার সামনে তিন তরুণীকে গুলি করে হত্যাও করা হয়। নিজেকে অসুস্থ বলে হাতে ধরে পায়ে পড়ে কোনোমতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন নুর ফাতেমা। শারীরিকভাবে দুর্বল থাকা নুর ফাতেমাকে থাইংখালীর একটি পাহাড়ের নিচে বসে থাকতে দেখা যায়।

তিনি জানান, তার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এক স্বজনের জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি। শুধু নুর ফাতেমাই নন, তার মতো অসংখ্য যুবতী তরুনী মিয়ানমারে বার্মিজ আর্মি ও উগ্রপন্থী বৌদ্ধদের দ্বারা পাশবিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। শুধু নির্যাতনই নয়, অনেক তরুণীকে হত্যাও করা হয়েছে। চোখের সামনে বয়োবৃদ্ধ ও শিশুদের ওপর নানা ভাবে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা যুবকদের হত্যার পাশাপাশি পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।

কুতুপালংয়ে আশ্রয় নেয়া মংডু ওয়াপ্রাং এলাকার মিনারা আক্তার (২২) জানালেন, তার স্বামী ও ভাইকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সাত দিন আগেই পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তাকেও দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। চার সন্তান নিয়ে ছয় দিনে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, এখন এই ছেলে সন্তান নিয়ে কোথায় যাব, কী করব? বাংলাদেশে আসা একাধিক নারী ও পুরুষ জানান, এ পর্যন্ত সহিংসতায় অন্তত পাঁচ হাজারেরও অধিক যুবতী নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তাদের অনেককেই নির্মমভাবে মেরে ফেলা হয়েছে। এছাড়াও দশ হাজারেরও অধিক যুবককে গুলি করে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, দেশের ৬৪ টি জেলার মানুষ। প্রতিদিন মানবিক সাহায্য ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে লোকজন আসছেন।

সরেজমিন আন্জুমান সীমান্তে ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা থেকে আসা অপ্রাতিষ্ঠানিক সংগঠন ফ্রেন্ডস কমিউনিটি দক্ষিণ খান সংগঠনের সদস্যদের আর্থিক সহায়তায় নয় সদস্যের একটি টিম ত্রাণ বিতরণ করছেন। এই সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক অহিদুল ইসলাম শুভ বলেন, আগত রোহিঙ্গাদের তুলনায় ত্রাণ সামগ্রী অত্যন্ত অপ্রতুল।

স্থানীয় সূর্যদয় সংঘের সভাপতি মোহাম্মদ নুরুল আলমও সাবেক মেম্বার বাদশা আলম, সোহেল আয়াছ এর তত্বাবধানে এই ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তারা নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে দাড়াঁনোর জন্য আহবান জানান।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁওর সংবাদকর্মী আবু হেনা সাগরের মাতা অসুস্থ : দোয়া কামনা 

  বার্তা পরিবেশক : কক্সবাজারে ঈদগাঁও উপজেলার সংবাদকর্মী এম আবুহেনা সাগরের মাতা অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রামের ইবনে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/