মুকুল কান্তি দাশ; চকরিয়া :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় উত্তর হারবাং মাধ্যমিক ও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহস্রাধিক কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীর খেলাধুলা এখন বন্ধ। মাধমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাখ টাকার বিনিময়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্টানকে স্কুলের খেলার মাঠ ভাড়া দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
এদিকে, মাঠে মজুদ করা মালামাল ২৪ ঘন্টার মধ্যে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
একাধিক সূত্র জানায়, উপজেলার উত্তর হারবাং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য খেলাধুলা করতে একটিমাত্র মাঠ রয়েছে। ওই মাঠটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হলেও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলাল উদ্দিন ১ লাখ টাকার বিনিময়ে খেলার মাঠটি তিন মাসের জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রানা বিল্ডার্সকে ভাড়া দিয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠান সড়ক উন্নয়নের কাজ করার বিভিন্ন ভারী যন্ত্রপাতিসহ মালামাল মজুদ করেছে মাঠে। ফলে, ছাত্র-ছাত্রীরা খেলাধুলাতো করতে পারছেইনা স্কুলে যাতায়তের সময় মজুদকৃত সরঞ্জামের ধাক্কা খেয়ে আহত হচ্ছে মাঝে মাঝে।এছাড়া মাঠে রাখা গাড়িসহ বিভিন্ন মেশিনের আওয়াজে পড়ালেখা বিঘ্ন ঘটছে।
উত্তর হারবাং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী শেফা আক্তার বলেন, স্কুলের মাঠে বিভিন্ন সরঞ্জাম রাখায় আমরা খেলাধুলা করতে পারছিনা। হাটা-চলা করতেও কষ্ট হচ্ছে।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র কবির হোসেন বলেন, স্কুল মাঠে খেলাধুলা করতে না পারায় সরকারী ক্রীড়া অনুষ্টানেও যোগদান করতে প্রস্তুতি নিতে পারিনা আমরা। গত দু’বছর ধরে বাণিজ্যিক খাতে মাঠ ব্যবহার হওয়ায় খেলাধুলা বন্ধ রয়েছে।
সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সুমি দাশ ও আশরাফ ছিদ্দিকা বলেন, খেলার মাঠটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হলেও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওই মাঠ ঠিকাদারী প্রতিষ্টানকে ভাড়া দিয়েছে বলে শুনেছি। মাঠে উন্নয়ন কাজের ভারী জিনিসপত্র মজুদ করায় শিশু ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে। সর্বদা নজরে রাখতে হচ্ছে ওইসব শিশু শিক্ষার্থীদের।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলাল উদ্দিন ১ লাখ টাকার চুক্তিতে মাঠ ভাড়া দেয়ার ঘটনা স্বীকার করে বলেন, স্কুলের উন্নয়ন খাতে ব্যয় করতে তিন মাসের জন্য মাঠ ভাড়া দিয়েছি। স্কুল মাঠ ভাড়া দেয়ার ঘটনা উপজেলা প্রশাসনও জানেন।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা বন্ধ রেখে অন্য খাতে মাঠ ব্যবহারের ঘটনা শুনেছি। আজকের (রবিবার) মধ্যে মাঠে মজুদ করা সকল সরঞ্জাম সরিয়ে নিতে উদ্যোগ নিতে হারবাং ইউনিয়র পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামকে বলেছি। আজকের মধ্যে না সরালে সোমবার আমি নিজে গিয়ে ওই মালামাল অপসারণ করবো।
You must be logged in to post a comment.