সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / অভাবের তাড়নায় দেহ ব্যবসায় রোহিঙ্গা নারী

অভাবের তাড়নায় দেহ ব্যবসায় রোহিঙ্গা নারী

Women - 3হুমায়ুন কবির জুশান; উখিয়া :

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত ফাঁড়ি দিয়ে রোহিঙ্গা নারী পুরুষ এদেশে অনুপ্রবেশ অব্যাহত রেখেছে। রোহিঙ্গারা এ দেশে প্রবেশ করেই টেকনাফ নয়াপাড়া ও উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়। কুতুপালং অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা বস্তির সি-ব্লকের বাসিন্দা ইয়াছমিন আক্তার (ছদ্মনাম)। বয়স ১৬ ছুঁই ছুঁই। সে জানায়, ৬ মাস আগে তারা বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে মা-বাবার সঙ্গে। তার এক নিকটাত্মীয়ের সহায়তায় আশ্রয় নিয়েছে সরকারি বনভূমির বিশাল এলাকাজুড়ে অবৈধভাবে গড়ে উঠা রোহিঙ্গা বস্তিতে। ৩ বোন, মা-বাবাসহ ৫ জনের সংসার। বস্তির ছোট্ট একটি কুঁড়ে ঘরে থাকার ২ মাস পর পরিচয় ঘটে রোহিঙ্গাদের নেতা বস্তির মাঝির মেয়ে সাহানা আক্তারের সঙ্গে। সে প্রস্তাব দেয় যৌন পেশায় এসে কাড়িকাড়ি টাকা কামানোর। ভাবতে থাকে ইয়াছমিন। অভাবের সংসার, তাই কৌতুহল বশত: তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। তার সহায়তায় সে সপ্তাহে ৫ দিন কন্ট্রাকের মাধ্যমে সে কক্সবাজারের অভিজাত বিভিন্ন হোটেলে খদ্দরদের মনোরঞ্জন করে যাচ্ছে। সেই থেকে পথ চলা, আর থামাতে পারেনি ইয়াছমিনকে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের বিলাশ বহুল ভাড়া করা ফ্ল্যাট বাড়িতে সাহানাসহ একাধিক রোহিঙ্গা নারী মিলে এ অবৈধ যৌন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। শীতকালে পর্যটন মৌসুমে ভালো চাহিদা থাকায় সপ্তাহের ৭ দিনই তাকে কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করতে হয়। শুধু ইয়াছমিন আক্তার নয়, উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবির থেকে উঠতি বয়সের প্রায় ৩ শতাধিক কিশোরী দিয়ে যৌন ব্যবসা করানো হচ্ছে। এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয়রা এ বিষয়ে লেখার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান। কুতুপালং বাজার সমিতির সভাপতি ডাক্তার মুজিব জানান, প্রতিদিন ভোরে ও সন্ধ্যাবেলা কালো বোরকা পরিহিত রোহিঙ্গা নারীরা ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে চলে যাচ্ছে কক্সবাজার শহরে। বর্তমানে শীত মৌসুমকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের এক শ্রেণীর হোটেল মালিক পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য এসব রোহিঙ্গা কিশোরীদের নিয়ে যৌন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে রোহিঙ্গা কিশোরীরা পুলিশের হাতে আটক হলেও পেশাদার দালালদের সহযোগিতায় তারা জামিনে বেরিয়ে আসছে। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে শিবিরের এসব রোহিঙ্গা কিশোরীদের জেলা শহর ও দেশের বিভিন্ন স্থানের নামিদামি হোটেলে দেহ ব্যবসা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। অনেকে অভাবের তাড়নায় এ পেশাকে স্থায়ী হিসেবে বেছে নিয়েছে।

এছাড়া রোহিঙ্গা শিবির কেন্দ্রীক একটি পাচারকারি চক্র সক্রিয় রয়েছে। গত বছর ঢাকা সুত্রাপুর থানায় কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের নুরুল হক মাঝির মেয়ে ফাতেমা বেগম ৫/৬ জনের একদল কিশোরী নিয়ে ভাড়া বাসায় আটক হয়। বর্তমানে মামলাটি ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে বিচারাধীন। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক ইউপি মেম্বার বখতিয়ার আহমদ জানান, ক্যাম্পভিত্তিক মানব পাচারকারী চক্র সক্রিয় রয়েছে।

রোহিঙ্গারা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে এখন অবস্থান করছে। নারী ব্যবসা থেকে শুরু করে এহেন কোন কাজ নেই যে রোহিঙ্গারা করছে না। আমি অন্যায় ও অনৈতিকতার বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্ছার ছিলাম আছি থাকবো।

উখিয়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গারা কক্সবাজারবাসির কাছে বিষফোঁড়ায় পরিণত হয়েছে। তাদের অবাধ বিচরণ ও বেশ্যা বাণিজ্য বন্ধ করা না গেলে এবং প্রত্যাবাসন করা না হলে এখানকার ধর্মীয় মূল্যবোধও নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরের ইনচার্জ মাহমুদুল হক চৌধুরীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি রোহিঙ্গা শিবির থেকে কিশোরী পাচারসহ যৌন বাণিজ্যের ব্যাপারে অবগত নয় বলে জানান।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2023/01/BGB-Rafiq-24-1-23.jpeg

বিপুল পরিমাণ পপিক্ষেত ধ্বংস করল বিজিবি

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম : পার্বত্য জেলা বান্দরবানে থানচি উপজেলা গহীণ অরণ্যে মাদক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/