কক্সবাজারে মাদকবিরোধী অভিযানে টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর একরামুল হকের নিহত হওয়ার ঘটনাটি একজন ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করবেন এবং তার দেওয়া রিপোর্ট (প্রতিবেদন) অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
২ জুন, শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে মন্ত্রীর বাসায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান মন্ত্রী।
আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘একরামের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি। অডিওটি অফিসিয়ালি আমাদের কাছে আসেনি। কেউ অফিসিয়ালি এই ঘটনার তথ্যও দেয়নি। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, কেউ যদি স্বপ্রণোদিত হয়ে এই কাজ করে, তাহলে তার বিচার অবশ্যই হবে।’
বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত অডিও প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রী আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনা যদি এ ধরনের ঘটেই থাকে, যদি সেটা প্রমাণ হয়, তাহলে অবশ্যই আইন অনুযায়ী বিচার হবে।’
এ ছাড়া শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একটি অনুষ্ঠানে একরাম নিহত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো ভালো কাজ, বৃহৎ কাজ, মহৎ কাজ করতে গেলে দুই-একটি ভুল হতে পারে। এমন অভিযানে ভুল হতেই পারে। তারপরও পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একরাম ভিকটিম হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। এ ঘটনায় যদি কেউ জড়িত থাকে, তার যথোপযুক্ত বিচার হবে।’
গত ১ জুন, শুক্রবার র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘অডিও রেকর্ডটি আমরা শুনেছি। সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
গত ২৬ মে বন্দুকযুদ্ধে টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর একরামুল নিহত হয়েছে বলে দাবি করে র্যাব। বাহিনীটির দাবি, ইয়াবা চালানের লেনদেনের খবর পেয়ে অভিযানে যায় একটি দল। সে সময় র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালালে, আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায় র্যাব। মাদক চক্রের অন্যরা পিছু হটলে একরামুল হকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া যায়।
ঘটনাস্থল থেকে ১০ হাজার ইয়াবা, একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শ্যুটার গান, ছয়টি গুলি ও পাঁচটি খালি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে বলেও র্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
অবশ্য একরামুলের পরিবারের দাবি, তাকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে গত ৩১ মে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন একরামুলের পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে একরামুলের স্ত্রী আয়েশা বেগম সাংবাদিকদের কাছে একটি অডিও রেকর্ড তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থার পরিচয় দিয়ে ২৬ মে রাতে আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সে সময় আমার ও আমার মেয়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন আমার স্বামী। কথা বলার সময় তার কণ্ঠে আতঙ্ক ছিল।
এরপর থেকে আমার মোবাইলটি সারাক্ষণ খোলা ছিল। এতে আমার স্বামীর সঙ্গে আমাদের কথোপকথন রেকর্ড হচ্ছিল। আমার স্বামীকে মারার সময় তার মোবাইলটি সচল ছিল। আমার স্বামীকে অন্যায়ভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।’
সূত্র:জনি রায়হান-priyo.com;ডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.