সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / পৃথিবীর দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ সড়ক উদ্বোধন করলেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা

পৃথিবীর দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ সড়ক উদ্বোধন করলেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা

দীপক শর্মা দীপু, কক্সভিউ :

কক্সবাজারে বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ সড়ক আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বেলা ১১টায় ৮০ কিলোমিটারের দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়ক এর উদ্বোধন করেন। এতে বক্তব্য রাখেন সড়ক, পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান আবু বেলাল মো: শফিউল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এম, এ, এন, ছিদ্দিক। মোনাজাত করেন মৌলানা শরিফুল ইসলাম।

উদ্বেধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন- ‘মেরিন ড্রাইভ সড়কের উদ্বোধনের ফলে বিশ্ব পর্যটন শিল্পে এর প্রভাব পড়বে, সৌন্দর্য উপভোগ্য হবে, আর্থসামাজিক অবস্থার পবির্তন হবে, নিশ্চিত হবে নিরাপত্তা। সেই সাে মেরিন ড্রাইভ সড়ক উদ্বোধনের মাধ্যমে সার্বিক উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচন হয়েছে।’ তিনি আরো বরেন- ‘আজকের দিনটি দেশবাসির জন্য আনন্দের দিন। সেই সাথে দু:খের দিনও। কারণ এই সড়কটি নির্মাণ করতে গিয়ে ৬ সেনা সদস্যের প্রাণ গেছে। সেনাদের রক্ত আর ঘামের ফসল এই মেরিন ড্রাইভ সড়ক। তাছাড়া স্থানীদের ত্যাগ রয়েছে। তারা নিজেদের জমি দিয়ে সহায়তা করেছে। তাদের অনেকের জমিরর টাকা এখনো পরিশোধ করা সম্ভম হয়নি। সর্বোপরি সবার ঐকান্তিক সহযোগিতায় আজকের স্বপ্নের মেরিন ড্রাইভ সড়ক।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণের উপর প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন হয়। এতে বলা হয়, কক্সবাজার শহরের কলাতলি থেকে টেকনাফের সাবরাং অর্থনৈতিক জোন পর্যন্ত দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটারের মেরিন ড্রাইভ সড়কটি নির্মাণে সময় লেগেছে ২৪ বছর। ১৯৯৩ সালে শুরু হওয়া মেরিন ড্রাইভ সড়ক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মাণ প্রকৌশল ব্যাটালিয়ান। প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৪০ কোটি।

বিশ্ব পর্যটনের দুয়ার খুলতে চলেছে সড়কটি। এটি বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ সড়ক বলেও জানান তিনি। পাহাড় আর সাগরের মিতালীর অপূর্ব দৃশ্য ঘনিষ্টভাবে দেখার সুযোগ করে দিয়েছে এই সড়কটি। সড়কের একপাশে উঁচু পাহাড়ে সবুজের হাতছানি। অপরপাশে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ আছড়ে পড়ছে বালিয়াড়ির বুকে। এই দুইয়ের বুক চিরে মাঝখানে নদীর মত এগিয়ে গেছে স্বপ্নের মেরিন ড্রাইভ সড়কটি। সড়কের ধারে রয়েছে নারিকেল, সুপারি, ঝাউবিথী সহ নানা প্রজাতির গুল্ম-লতা ও ফলজ গাছ-গাছালি। সাগর তীর আর পাহাড়ের পাদদেশে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত মেরীন ড্রাইভ সড়কের বাস্তব চিত্রটিই এরকম।

১৯৯৩ সালে তৎকালীন সরকারের আমলে ৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কক্সবাজার মেরীণ ড্রাইভ প্রকল্পটি গ্রহন করা হয়। কক্সবাজার শহরের কলাতলী পয়েন্টে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঠিকাদারের নির্মিত দুই কিলোমিটার সড়ক সাগরেই বিলীন হয়ে যায়।

পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে এই সড়কের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় সেনাবাহিনীর প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়নকে। বর্তমানে সড়কটির দৈর্ঘ্য বেড়ে ৪৮ কিলোমিটার থেকে ৮০ কিলোমিটার করা হয়েছে। তিন ধাপে নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। প্রথম ধাপে ২৪ কিলোমিটার, দ্বিতীয় ধাপে ২৪ কিলোমিটার ও তৃতীয় ধাপে ৩২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।

মেরিন ড্রাইভ সড়কটি নির্মাণের জন্য সেনা বাহিনীকে চ্যালেঞ্জের সন্মুখীন হতে হয় বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রকল্পের দীর্ঘসুত্রিতায় সড়কের মাটি সাগরের উত্থাল ঢেউয়ে বিলীন হয়ে যায়। এতে করে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পায়। তদুপরি পাহাড়ের পাদদেশ এবং সাগরের তীর দিয়ে এরকম দীর্ঘ সড়ক নির্মাণের সময় সেনা বাহিনীর ৬ জন সৈনিক পাহাড় ধসে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারান বলেও জানান তিনি।

তবুও সেনা বাহিনীকে চ্যালেঞ্জের মুখে সড়ক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। এরফলে একদিকে সাগরের তীরে বেড়িবাঁধ হিসাবে ব্যবহৃত হবে সড়কটি অন্যদিকে বিস্তীর্ণ জায়গা-জমি ও ফসল রক্ষা পাবে সাগরের ভাঙ্গন থেকে। সেই সাথে পর্যটন শিল্পেও নতুন মাত্রা যোগ হবে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

রামুতে তরমুজের দাম চডা :হিমশিম খাচ্ছে ক্রেতারা

  কামাল শিশির; রামু :কক্সবাজারের রামু উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পবিত্র মাহে রমজানের শুরুতে বিভিন্ন এলাকায় ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/